• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

পোশাক ও ছবি : বিশ্বরঙ

ফ্যাশন

বিয়েতে দেশি পোশাক

  • অরণ্য সৌরভ
  • প্রকাশিত ১৮ ডিসেম্বর ২০২১

অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষের হাতছানি। পৌষ মানে হিমেল হাওয়া। শীতের সঙ্গে সম্পর্কিত সানাইয়ের সুর। কারণ এ সময়কে বিয়ের মৌসুম বলা হয়ে থাকে। এই সুর মনে করিয়ে দেয় দুটি হূদয়ের পারস্পরিক মেলবন্ধনের কথা। বিয়েতে দেশি পোশাকের আবেদন দীর্ঘ সময়ের। আজকাল বর-কনের পছন্দের ট্রেন্ডের মধ্যেও প্রাধান্য পেয়েছে দেশি পোশাক। দেশি পোশাকে বিয়ের বিভিন্ন দিক নিয়ে ডিজাইনারদের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন—অরণ্য সৌরভ

প্রতিটি ছেলে-মেয়ের জীবনের এক বিশেষ সময় বিয়ে। বিয়ের সঙ্গে এনগেজমেন্ট, গায়ে হলুদ, বিয়ে, বৌভাতসহ নানান ধরনের আয়োজন জড়িত। বিয়ে দুটি হূদয়ের মেলবন্ধনের পাশাপাশি উৎসবও। আর উৎসব মানেই পোশাকে প্রাধান্য।

ভূষণে বাঙালি নারীর শাড়ির ছোঁয়া বাড়িয়ে দেয় সৌন্দর্য। কালো, ফর্সা কিংবা শ্যামলা—গায়ের রং যাহোক, শাড়িতে নারীকে বেশ মানিয়ে যায়। অনেকেই শাড়ি সব সময় পরতে পারে না বা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। কিন্তু শাড়ি ছাড়া বিয়ে কখনো কল্পনাও করা যায় না। তাই বিয়েতে পোশাকের তালিকায় র্সবপ্রথম প্রাধান্য পায় শাড়ি।

বর এবং কনে দুপক্ষের সবারই কমবেশি নজর থাকে কনের পোশাকে। শাড়িতে। কী শাড়ি পরল, রং-ম্যাটেরিয়াল কেমন, শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজ, ওড়না মানানসই হয়েছে কি না—এমন নানান ধরনের জল্পনাকল্পনা, খুঁত ধরা, আলোচনা-সমালোচনা চলতে স্বজনদের মধ্যে। সেজন্য বিয়ের শাড়ি নজরকাড়া, নান্দনিক আর ঐতিহ্যবাহী হওয়া উচিত বলে মনে করেন ডিজাইনার বিপ্লব সাহা। তিনি বলেন, দেশিয় শাড়ির ঐতিহ্য ও আভিজাত্য বাঙালি বধূর সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলে বহুগুণে।

বিয়ের পোশাক বা শাড়ির চিরন্তন বা চিরচেনা রং লাল হলেও এখনকার বর-কনে বিভিন্ন রঙের পোশাক পরে থাকেন। মেরুন, জাম, গাঢ় নীল, ম্যাজেন্টা, গোলাপি, ফিরোজা, সবুজ, চাপা সাদাসহ বিভিন্ন রঙকে এখন বিয়ে এবং বৌভাতে অনেকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

ডিজাইনার বিপ্লব সাহা বলেন, বিয়ের দিন জমকালো ট্রেডিশনাল শাড়ি বেছে নিন। ম্যাটেরিয়াল হিসেবে কাতান, বেনারসি, টিস্যু বা মসলিনকে প্রাধান্য দিতে পারেন।

খুব ভারী দেশি শাড়ি নয়, বিয়েতে এখন হালকা পাতলা আধুনিক কারুকাজ করা দেশি শাড়িকে বিয়েতে কনেরা প্রাধান্য দিচ্ছে। এক্ষেত্রে শাড়িতে জংলা নকশা, গুটি নকশা বেছে নিতে পারেন। কারণ নববধূর পরনে এ ধরনের শাড়ি বাঙালি ঐতিহ্য এবং বাঙালি বধূ সাজের পূর্ণতা আনে বলে জানান বিপ্লব সাহা।

বিয়েতে এখনকার অনেক ছেলেমেয়েই শাড়ির বদলে লেহেঙ্গাকে প্রাধান্য দিচ্ছে। বিয়ে বা বউভাতে অনেকেই পরছেন লেহেঙ্গা। সেজন্য ডিজাইনাররা ব্লাউজের সঙ্গে স্কার্টের কম্বিনেশন মিলিয়ে বিয়ের লেহেঙ্গায় এনেছেন চমক। অনেকেই শাড়ি স্টাইলের লেহেঙ্গাও বেছে নিচ্ছেন।

শাড়ি, লেহেঙ্গা, গাউন, পাঞ্জাবি, শেরোয়ানিতে বাহারী রঙে বিভিন্ন নকশা ফুটিয়ে তুলেছেন ডিজাইনাররা। বিয়ের পোশাকে দেশীয় নানান ফুল দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। চুমকি, পুঁতি, কারচুপি, জরি, গ্লাসওয়ার্ক ইত্যাদির ব্যবহারে ভ্যালু অ্যাড করেও কনের পোশাকে আনা হয়েছে ভিন্নমাত্রা। শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে ব্লাউজ, ওড়নাও তৈরি করছেন ডিজাইনাররা। পাশাপাশি কনের জন্য বটুয়াসহ নানা রকম ব্যাগও এনেছেন ফ্যাশন হাউসগুলো।

রঙ বাংলাদেশের সৌমিক দাস বলেন, বিয়ের মঞ্চে কনের হাতে সুন্দর একটি ব্যাগ অভিজাত লুক ফিরিয়ে আনে। এ জন্য শাড়ির সঙ্গে মিলিয়ে বা উল্টো রঙে, বাহারি নকশায় বটুয়া বেছে নিচ্ছেন কনে।

বিয়েতে শেরোয়ানি-পাঞ্জাবি বরাবরের মতোই বরের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। গায়েহলুদে দেশি কাপড়ে তৈরি হলুদরঙা পাঞ্জাবি বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। তবে বিয়ের দিন মেরুন, হালকা নীল, বাদামি, লাল, গোলাপি, সবুজ, হলুদ, সাদারঙা পাঞ্জাবি বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। বিশ্বরঙের বিপ্লব সাহা বলেন, সাধারণত রঙিন শেরোয়ানিই বেশি পছন্দ এখনকার বরদের। সিল্ক, ধুপিয়ান, হাফ সিল্কের ওপর বুকে একটু ভারী কাজ করা শেরোয়ানি বরদের ভালো মানায়। এর সঙ্গে বাহারি কাজের কটি এনে দেবে অভিজাত লুক।

রঙ বাংলাদেশের ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, কনে হালকা গড়নের হলে বেনারসি, কাতান, মসলিন, টিস্যু শাড়ি ভালো লাগবে। আর একটু ভারি গড়নের হলে বেনারসি কিংবা কাতান না পরে জামদানি, জর্জেট, সিল্ক পরতে পারেন।

বিপ্লব সাহা বলেন, যদি উচ্চতা কম হয় তাহলে সরু পাড় বা পাড় ছাড়া শাড়ি, উচ্চতা ভালো হলে চওড়া পাড়ের শাড়ি বেছে নিন। গায়ের রং শ্যামলা বা কালো হলে একটু গাঢ় রঙের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। আর পেঁয়াজ বা বেগুনি রঙের শাড়ি সবাইকে মানিয়ে যাবে।

 

কোথায় পাবেন, কেমন দামে

মিরপুর বেনারসি পল্লিতে অসংখ্য দেশি শাড়ির দোকান রয়েছে। এছাড়া বিশ্বরঙ, আড়ং, রঙ বাংলাদেশ, সেইলোর, বিবিআনাসহ বিভিন্ন দেশীয় ফ্যাশন হাউসে বিয়ের পোশাক পেয়ে যাবে। তা ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্ক, নাভানা টাওয়ার, নিউমার্কেট, রাপা প্লাজাসহ বিভিন্ন মার্কেটেও বিয়ের পোশাক পাওয়া যাবে।

ডিজাইন-কোয়ালিটি প্রভৃতির ভিন্নতায় দামেও থাকে ভিন্নতা। ফ্যাশন হাউস ও মার্কেটভেদেও দরদামে রয়েছে ভিন্নতা। ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে বিয়ের পোশাক কিনতে পারবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads