• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
সংবাদপত্র ও সাংবাদিক কালীপ্রসন্ন সিংহ

ফাইল ছবি

মুক্তমত

সংবাদপত্র ও সাংবাদিক কালীপ্রসন্ন সিংহ

  • মামুন রশীদ
  • প্রকাশিত ২৫ জুলাই ২০২২

বাংলা সংবাদপত্রের আজকে যে ঝা-চকচকে রূপ, তাকে সর্বসাম্প্রতিকই বলা চলে। কারণ আমাদের সংবাদপত্রের ইতিহাস খুব বেশি পুরনো নয়। মাত্র দুইশ বছরের। তাও শুরু হয়েছিল ব্রিটিশদের হাত ধরে। তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন কাল। তখনই এই উপমহাদেশে যাত্রা শুরু হয় সংবাদপত্রের। তবে সে যাত্রাও আমাদের হাত ধরে নয়। ব্রিটিশরাই প্রদর্শকের দায়িত্ব নেয়। মাসে দেড় টাকা মূল্যের বিনিময়ে ১৮১৮ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে (১০ জ্যৈষ্ঠ, ১২২৫) শনিবার প্রথম প্রকাশ পায় একটি বাংলা সংবাদপত্র। সাপ্তাহিক এই পত্রিকাটির নাম ‘সমাচার দর্পণ’। সম্পাদক জন ক্লার্ক মার্শম্যান। যে বাঙালির হাত ধরে বাংলা সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু তিনি গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য। তার সম্পাদনায় প্রকাশ পায় ‘বাঙ্গাল গেজেট’ নামের একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা, সেও ১৮১৮ সালে। কিন্তু নানা কারণে সমাচার দর্পণকেই প্রথম বাংলা সংবাদপত্র হিসেবে ধরা হয়। সে হিসেবে ২০১৮ সালে আমরা বাংলা সংবাদপত্রের দুইশ বছর পেরিয়ে এসেছি। এরপর একে একে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। সংবাদপত্র প্রকাশ এবং এর প্রসারে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন। এক্ষেত্রে প্রাতঃস্মরণীয় কবি ঈশ্বরগুপ্ত। প্রকৃতপক্ষে তার হাত ধরেই পূর্ণোদ্যমে বাংলা সংবাদপত্রের যাত্রা শুরু। এ ধারার অন্যতম পথিকৃত কালীপ্রসন্ন সিংহ (ফেব্রুয়ারি ১৮৪০-২৪ জুলাই ১৮৭০)। যদিও তাকে আমরা স্মারণ করি মহাভারতের অনুবাদক হিসেবে। এছাড়া ‘হুতোম প্যাঁচার নকশা’র রচয়িতা হিসেবেও তার খ্যাতি। কিন্তু ক্ষণজন্মা এই কীর্তিমানের হাত ধরে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কত যে কীর্তি রচিত হয়েছে, তার অনেক কিছুই আজ আমরা মনে রাখিনি। মহাভারতের অমৃত সমান কথা বাঙালিকে গদ্যের মাধ্যমে তিনি পড়ার সুযোগ করে দেন। আঠারো খণ্ডের এই বিপুল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন করে বই প্রকাশে তার সময় লেগেছিল প্রায় আট বছর। অথচ কালীপ্রসন্ন সিংহ বেঁচেছিলেন মাত্র ত্রিশ বছর। কিন্তু এই বেঁচে থাকা, এই স্বল্পায়ু জীবনকেই তিনি অর্থবহ করে তুলেছিলেন। তিনি নিজে সাহিত্য রচনা করেছেন। সাহিত্যের সেবা করেছেন। সাহিত্য ও সমাজের সেবার জন্য নিজের সম্পদ বিলিয়ে দিয়েছেন অকাতরে। সমাজ সংস্কারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। আর এ কাজে তিনি সংবাদপত্রকেই অন্যতম হাতিয়ার ভেবেছিলেন। সাহিত্য রচনার সঙ্গে সমাজের নানা সঙ্গতি-অসঙ্গতিকে বৃহত্তর পাঠক সমাজের পৌঁছে দিতে পারে কেবল সংবাদপত্র। শাসকের অন্যায়ের প্রতিবাদের যেমন হাতিয়ার সংবাদপত্র, তেমনি শোষিত কথা বলারও স্থান সংবাদপত্র। খুব ভালো করে উপলব্ধি করা এই সত্যের প্রতি আস্থা রেখেছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ।

সংবাদপত্রে জগতে এসে তিনি একে একে চারটি পত্রিকার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হন। মাত্র তেরো বছর বয়সে তিনি সাহিত্য সেবার উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিদ্যোৎসাহিনী সভা। সে সভার মুখপত্র হিসেবে প্রথম প্রকাশ পায় বিদ্যোৎসাহিনী পত্রিকা। এক আনা মূল্যে এই পত্রিকাটি মাসিক পত্র হিসেবে প্রথম প্রকাশ পায় ১৮৫৫ সালে। পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যায় প্রকাশকাল লেখা ছিল ২০ এপ্রিল ১৮৫৫। এই পত্রিকার মলাটের ওপর লেখা থাকতো, ‘বিদ্যোৎসাহিনী পত্রিকা। মাসিক প্রকাশ্য। শ্রীকালীপ্রসন্ন সিংহ দ্বারা বিরচিত। বাঙ্গাল সুপিরিয়ার যন্ত্রে মুদ্রিত।’ পরবর্তীকালে তিনি আরও তিনটি পত্রিকা প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত হন। এগুলো হলো- ‘সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা’, ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ এবং পরিদর্শক। এছাড়া নানা সময়ে তিনি হিন্দু প্যাট্রিয়ট, তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা, সোমপ্রকাশ, মুখার্জ্জীস ম্যাগাজিন, বেঙ্গলি-এর মতো পত্রিকাগুলোকে টিকে থাকার জন্য আর্থিক সহায়তা করেছেন।

প্রায় এক বছর স্থায়ী ‘বিদ্যোৎসাহিনী পত্রিকাটির প্রতি সংখ্যায় দশটি পৃষ্ঠা ছিল। কালীপ্রসন্ন সিংহের জীবনীকার ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা থেকে জানা যায়, বিদ্যোৎসাহিনীর প্রথম দুটি সংখ্যায়- সভ্যতার বিষয়, চাঞ্চল্য, বাল্যবিবাহ, কৌলীন্য ও বিজাতীয় রাজগণের অধীনে ভারতবর্ষের অবস্থা-এই কয়টি প্রবন্ধ ছিল। এরপর ১৮৫৬ সালে কালীপ্রসন্ন সিংহ নতুন আরও একটি পত্রিকা প্রকাশের উদ্যোগ নেন এবং সে বছরের জুলাই মাসে পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা প্রকাশ পায়। ‘সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা’ নামের এই পত্রিকাটিও ছিল মাসিক পত্র। পত্রিকাটির নাম থেকেই এর চরিত্র সম্পর্কে একটি ধারণা বর্তমানের কৌতূহলী পাঠকের মনে আসে। পত্রিকাটিতে যেসব বিষয়ে লেখা প্রকাশ পেতো, তা আরও নিশ্চিত হওয়া যায় পত্রিকাটির প্রথম সংখ্যা প্রকাশের পর ১৮৫৬ সালের ৬ আগস্ট কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত সম্পাদিত সংবাদ প্রভাকরে এই পত্রিকাটি নিয়ে লিখিত একটি মন্তব্য প্রতিবেদনে। এই প্রতিবেদনটি লিখেছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত নিজেই। তিনি সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা প্রসঙ্গে লেখেন, ‘সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা’ অর্থাৎ প্রাণি বিদ্যা, ভূতত্ত্ব বিদ্যা, ভূগোল বিদ্যা ও শিল্প সাহিত্যাদি দ্যোতক মাসিক পত্রিকা। ইত্যভিধেয় একখানি নূতন পত্রিকা আমরা প্রাপ্ত হইয়া তাহার আদ্যোপান্ত পাঠ করিয়া পরম সন্তুষ্ট হইয়াছি, পত্রিকা প্রকাশক বা প্রকাশকগণ যে যে বিষয় লিখিয়াছেন তাহার প্রায় সমুদায়াংশকেই উত্তম বলিতে হইবেক, যেহেতু তাহাতে সুসাধু সরল বঙ্গভাষায় অতি পরিষ্কাররূপে অভিপ্রায় সকল ব্যক্ত হওয়াতে ঐ পত্রিকা সর্ব্বসাধারণের পাঠোপযোগী হইয়াছে, বিশেষতঃ ‘কুতর্ক-দমন’ নামক প্রথম প্রস্তাব সর্ব্বোৎকৃষ্ট হইয়াছে।’

সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা পত্রিকাটির আয়ুকাল সম্পর্কে কালীপ্রসন্ন সিংহের জীবনীকার ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তার লেখায় কোনো তথ্য দেননি। সর্ব্বতত্ত্ব প্রকাশিকা সম্পাদনার পর কালীপ্রসন্ন সিংহ আরও একটি মাসিক পত্র সম্পাদনায় এগিয়ে আসেন। ‘বিবিধার্থ সংগ্রহ’ নামের এই পত্রিকাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজেন্দ্রলাল মিত্র। মাঝে আর্থিক সংকট সত্ত্বেও তিনি ছয় বছর পত্রিকাটি সচল রাখেন। সপ্তম বছরে এসে তিনি পত্রিকাটির দায়িত্ব ছেড়ে দেন। পাঠকের কাছে পরিচিত এবং পাঠকরুচি মেটাতে সক্ষম একটি পত্রিকা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাবে, তা মেনে নিতে পারেননি কালীপ্রসন্ন সিংহ। তাই তিনি পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। তার সম্পাদনায় পত্রিকাটির আটটি সংখ্যা প্রকাশ পেলেও পত্রিকাটি তার প্রকাশনা অব্যাহত রাখতে পারেনি। কেন পারেনি, সেই প্রশ্নের উত্তর জানা যায় ১৮৭৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ‘এডুকেশন গেজেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে। এদিনের পত্রিকাটি তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ‘সম্পাদক বাবু বিবিধার্থে নীলকরদিগের গ্লানি প্রকাশ করায় গবর্ণমেন্ট যারপরনাই অসন্তুষ্ট হইয়া ওঠেন এবং সেই সূত্রেই বিবির্ধার্থের বিনাশ হয়।’

কালীপ্রসন্ন সিংহ নীলকরদের বিরুদ্ধে নীলদর্পণ নাটক এবং এর লেখক দীনবন্ধু মিত্রের অবস্থানের প্রতি সবসময়ই সমর্থন দিয়েছেন। নীলদর্পণের প্রথম সংস্করণ শেষ হয়ে যাওয়ার পর টাকার অভাবে যখন দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল, তখনও এগিয়ে এসেছিলেন কালীপ্রসন্ন সিংহ। আদালতে যখন নীলদর্পণের ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ ও প্রচারের জন্য পাদরী লঙের বিরুদ্ধে মামলা শুরু হয়, তখন প্রতিটি শুনানিতেই উপস্থিত থাকতেন কালীপ্রসন্ন সিংহ। মামলায় বিচারক পাদরী লঙকে একমাসের কারাদণ্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা করলে, সেই টাকা কালীপ্রসন্ন সিংহ নিজে তাৎক্ষণিকভাবে পরিশোধ করেন। আদালতে বিচারকার্য চলার সময় বিচারক ওয়েলস নানা সময়ে বাঙালি চরিত্রে কলঙ্ক লেপনের জন্য কুশ্রী মন্তব্য করেন। বিচারকার্য শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কালীপ্রসন্ন সিংহ সহ্য করলেও, আদালতের রায়ের পর তিনি অসংখ্য মানুষের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে বিচারক ওয়েলসের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডে সেক্রেটারি অব স্টেট স্যার চার্লস উডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করেন। একইসঙ্গে তিনি ১৮৬১ সালের ২৬ আগস্ট কলকাতায় রাজা রাধাকান্ত দেবের নাটমন্দিরে আয়োজিত এক সভায় প্রকাশ্যে বিচারপতি ওয়েলসের বিরুদ্ধে বাঙালি চরিত্র সম্পর্কে বাজে মন্তব্যের প্রতিবাদ করে জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেন।

বাংলা সংবাদপত্রের সেবায় কালীপ্রসন্ন সিংহের অক্ষয় কীর্তি জড়িয়ে রয়েছে ‘পরিদর্শক’-এর সঙ্গে। পরিদর্শক ছিল দৈনিক পত্রিকা। এই পত্রিকাটি প্রকাশ পায় ১৮৬১ সালের জুলাই মাসে প্রথম প্রকাশ পায় জগন্মোমন তর্কালঙ্কার ও মদমোহন গোস্বামীর সম্পাদনায়। পরের বছর, অর্থাৎ ১৮৬২ সালের ১৪ নভেম্বর (১ অগ্রহায়ণ ১২৬৯) কালীপ্রসন্ন সিংহ পত্রিকাটির সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েই পরিদর্শককে পাঠকের কাছে জনপ্রিয় করতে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যা আজকের আধুনিক সংবাদপত্রের জন্যও অনুকরণীয়। এ সময় সম্পাদক হিসেবে তিনি নতুন কর্মপরিকল্পনা সাজান। সেই কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে পরিদর্শকের পাঠকের কাছে তিনটি বিষয়ে তিনি অঙ্গীকার করেন। তার সেদিনের সেই অঙ্গীকার আমাদের সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকতার ইতিহাসেও গুরুত্বপূর্ণ। তার সেই অঙ্গীকারে তিনি (এক). সত্যপথ হইতে বিচলিত না হওয়া, (দুই). কোন বিষয়ের অতি বর্ণনা না দেওয়া এবং (তিন). পক্ষপাতদোষের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলার কথা বলেন। এই তিন নীতিকে যে দৃঢ়তার সঙ্গে তিনি সেদিন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তাই তার ফলেই পত্রিকাটির গ্রাহক বাড়ে। তিনি প্রচুর বিনিয়োগ করে পত্রিকাটির কলেবরও বাড়ান। কিন্তু তারপরও একসময় পত্রিকাটির গ্রাহক হারাতে থাকে। নানাভাবে পাঠক বাড়ানোর চেষ্টার পরও সফল না হয়ে কালীপ্রসন্ন সিংহ হাল ছেড়ে দেন। বন্ধ হয়ে যায় দৈনিক পরিদর্শক। পণ্ডিত দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ সম্পাদিত সাপ্তাহিক সোমপ্রকাশ পত্রিকা ১৮৬৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি লেখে, ‘আমরা অতিশয় দুঃখিত হইলাম, পরিদর্শক অকালে দেহ পরিত্যাগ করিয়াছে। বাঙ্গালা ভাষায় এক খানিও উৎকৃষ্ট দৈনিক সম্বাদপত্র নাই। পরিদর্শককে দেখিয়া আমাদিগের কথঞ্চিৎ এই আশা জন্মিয়াছিল যে ইহা ক্রমে সেই ক্ষোভ দূর করিতে সমর্থ হইবে, কিন্তু তাহাও উম্মলিত হইল। সম্পাদক বিরক্ত হইয়া পরিদর্শক উঠাইয়া দিলেন। তিনি বিরাগের যে যে কারণ নির্দেশ করিয়াছেন, গ্রাহকগণের অনাদর উহার অন্যতর বলিয়া উপন্যস্ত হইয়াছে। ...আমরা সম্পাদকের একটী সক্ষোভ অনুচিত প্রতিজ্ঞা দেখিয়া যারপরনাই ক্ষুব্ধ হইলাম। তিনি প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, বাঙ্গালি সমাজের এরূপ অবস্থা থাকিতে তিনি আর বাঙ্গালিদিগের উপকার করিবেন না। তাঁহার সদৃশ দেশহিতৈষী উদারস্বভাব ব্যক্তিরা যদি এরূপ প্রতিজ্ঞা করেন, তবে কাহা হইতে সামজের অবস্থা সংশোধিত হইবে?’

আস্থায় অবিচল কালীপ্রসন্ন সিংহ, কখনো সম্পদের দিকে ফিরে তাকাননি। মানুষ ও সমাজের হিতের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিয়েছেন নিজের সর্বস্ব। কিন্তু উপেক্ষা তিনি সহ্য করতে পারেননি। যা তাকে বাধ্য করেছিল পরিদর্শক বন্ধ করে দিতে। তাতে সমাজের যে ক্ষতি হয়নি, তা তো অভিমানী কালীপ্রসন্ন সিংহ মাত্র ত্রিশে ধার-দেনার দায় মাথায় নিয়ে চলে গিয়েই প্রমাণ করেছেন। কিন্তু যে আগুন তিনি জ্বালাতে চেয়েছিলেন, যে উষ্ণতায় তিনি বাঙালিকে জাগিয়ে তুলতে চেয়েছিলেন, তা তো হারিয়ে যায়নি, নিভে যায়নি। তাই আজও, মৃত্যুর দেড়শ বছর পেরিয়ে এসেও তিনি দেদীপ্যমান।

লেখক : কবি, সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads