• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী— ডার্ক চকলেট!

সংগৃহীত ছবি

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী— ডার্ক চকলেট!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৩০ জানুয়ারি ২০২২

ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্য উপকারী একটি খাবার। নিয়মিত ডার্ক চকলেট খাওয়া লোকদের হার্টের অসুখ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কম থাকে। ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন (Clinical Nutrition) জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার ফলাফলের প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, সপ্তাহে ৫ বার ডার্ক চকলেট খেলে ৫৭ শতাংশ পরিমাণ হার্টের অসুখের সম্ভাবনা কমে যায়। ডার্ক চকলেটে থাকে নানা যৌগিক উপাদান লো-ডেনসিটি লিপোপ্রোটিনকে (LDL) রক্তে মিশতে বাধা দেয় এবং শিরা-উপশিরায় কোলেস্টেরল জমতে দেয় না। এতে হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়। ডার্ক চকলেট ওজন হ্রাসে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, খাবার গ্রহণের ২০ মিনিট আগে চকলেট খেলে মস্তিস্কে এক ধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যা পরবর্তীতে খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। গবেষণায় জানা যায় , ডার্ক চকলেটে ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন, কপারসহ অনেক উপাদান আছে। এসব উপাদান আমাদের দেহে কোলাজেন নামক এক ধরনের প্রোটিন তৈরি করে। এই কোলাজেন আমাদের দেহের ত্বক মোলায়েম ও স্বাস্থ্যবান রাখে। ডার্ক চকলেটে ক্যালসিয়াম থাকে এবং এই ক্যালসিয়াম ত্বকের ক্ষয় রোধ করে ও নতুন ত্বক তৈরিতে সাহায্য করে। তাছাড়া ডার্ক চকলেটে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে যা ত্বককে সূর্য়ের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ডার্ক চকলেট অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ একটি খাবার। এতে থাকে পলিফেনলস, ফ্ল্যাভানল নামক কিছু জৈব উপাদান (অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট) যা কোষের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়াকে রোধ করে। এক গবেষণায় দেখা যায়, যে কোনো ফলের তুলনায় ডার্ক চকলেটে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টাল উপাদান বেশি থাকে। ফ্ল্যাভনল এমন একটি উপাদান যা মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বাড়ায় । আর এই ফ্ল্যাভানল থাকে কোকোয়া বীজে। নেচার নিউরোসায়েন্সের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৫০ থেকে ৫৯ বছর বয়সী সুস্থ ব্যক্তিদেরকে একটানা তিন মাস ফ্ল্যাভানলের পরিমাণ বেশি থাকে এমন কোকোয়া পানীয় পান করানো হলে তাদের স্মৃতিশক্তি বাড়ে। শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশে এই উপাদানটি অত্যন্ত কার্যকরী, তাই শিশুদের চকলেট দিতে হলে অন্য কোনো চকলেট না দিয়ে ডার্ক চকলেটে অভ্যস্ত করে তুলুন।

হাই ব্লাড  প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানো হলো ডার্ক চকলেটের এক বিশেষ গুণ। ডার্ক চকলেটে থাকা ফ্ল্যাভনয়েডস নামক ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট শিরা-উপশিরার মধ্যে এক প্রকার উত্তেজনা সৃষ্টি করে। এর ফলে শিরা-উপশিরার মধ্যে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি হয় এবং এগুলোর পেশি নমনীয় হয়। ফলে, রক্ত চলাচল দ্রুত হয় এবং হাই ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়।

রক্তের চিনি বা ব্লাড সুগার এবং ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও রয়েছে ডার্ক চকলেটের উপকারিতা। কোকোসমৃদ্ধ ডার্ক চকলেট দেহের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে প্রভাব ফেলে। এটি দেহে ইনসুলিন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে প্রভাব বিস্তার করে যা ডায়াবেটিক রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। তাহলে ডায়াবেটিস রোগীরা চাইলে খেতেই পারেন ডার্ক চকলেট। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই ভালো মানের ডার্ক চকোলেট খাবেন।

ডার্ক চকলেট আমাদের দেহে রোগ সৃষ্টিকারী কণাগুলো ধ্বংস করে এবং আমাদের দেহকে ক্যানসারসহ নানা রোগ থেকে রক্ষা করে। আর দেহের রোগ সৃষ্টিকারী এই সব ফ্রি র‍্যাডিকেলসই ক্যানসার, ডায়াবেটিস, এ্যালঝেইমার ইত্যাদি রোগের কারণ। জার্নাল অব দি আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা গিয়েছে যে, ডার্ক চকলেট, কাজুবাদাম এবং নির্ভেজাল সুইটনার না মেশানো প্রাকৃতিক কোকো আমাদের দেহের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। কোকো দিয়ে ডার্ক চকলেট তৈরি হয় এবং কোকোতে উপস্থিত কোকোয়া বাটার নামে একটি খাদ্য উপাদান আমাদের দেহের উপকারি কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

-সম্পাদনা : ফয়জুন্নেসা মণি

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads