• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

স্বাস্থ্য

ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত শিশু মেহেদী হাসানের আর্তি

“আমাকে ডাক্তারের কাছে নেন, আমাকে বাঁচান”

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৬ মার্চ ২০২৩

বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি:
‘মাথার যন্ত্রণা শুরু হলে ছেলেটা আমার পাগলের মত হয়ে যায়। যাকে সামনে পায় তারই হাত—পা জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলে আমাকে ডাক্তারের কাছে নেন, আমাকে বাঁচান। অস্থির হয়ে পড়ে, বমি করে। মা হয়ে এমন দৃশ্য কেমনে সহ্য করি। আমরা খাসজমিতে থাকি। যদি একটু ভিটাও থাকতো, তাহলে তা বেচেই ব্যাটার চিকিৎসা করাতাম। কিন্তু আমিতো হতভাগী, বিনা চিকিৎসায় বুকের মানিক আমার ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কিছুই করতে পারছি না। আপনারা দয়া করে একটু সাহায্য করলে আমার ছেলেটা প্রাণে বেঁচে উঠবে।’ কান্না চেপে অশ্রম্ন মুছতে মুছতে কথাগুলো বলছিলেন বড়াইগ্রামের মাঝগাঁও ইউনিয়নের মানিকপুর গ্রামের ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত শিশু মেহেদী হাসানের মা মাজেদা খাতুন। মেহেদী ওই গ্রামের দরিদ্র ফেরিওয়ালা নজরুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, মানিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়তো মেহেদী। বছর তিনেক আগে একদিন স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতেই প্রচন্ড মাথা ব্যথার সাথে শুরু হয় বমি। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাজশাহী বেসরকারি পপুলার হাসপাতালে ভারতের নিউ দিল্লী অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বলাই চন্দ্র সরকারের কাছে নিয়ে যান। পরীক্ষা—নীরিক্ষা শেষে তিনি জানান যে, মেহেদী ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত। এ খবরে হতদরিদ্র পরিবারটির মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছলছল চোখ জুড়ে বাঁচার আকুতি আর মলিনমুখে বাড়িতেই বসে আছে মেহেদী। অর্থাভাবে সঠিক চিকিৎসা করাতে না পারায় ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে শিশুটি। ঠিকমত খেতে পারে না। এক সময় ষ্পষ্ট ও সুন্দর ভাবে কথা বললেও ধীরে ধীরে তার কথাগুলো অস্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
এ সময় মাজেদা খাতুন জানান, তাদের কোন জমি নাই। বড়াল নদীর তীরে খাসজমিতে বসবাস করতেন। নিজেদের সামান্য উপার্জন থেকে ছেলের চিকিৎসায় খরচ করতে গিয়ে ঘর সংস্কার করতে পারেননি। এতে ঘরবাড়ি বাস অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই বর্তমানে একই গ্রামে ছোট ভাইয়ের বাড়িতে থাকছেন তারা। তার স্বামী গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভাংড়ি জিনিসপত্র কেনাবেচা করে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ের ভরণপোষণ করেন।
মেহেদী হাসানের পিতা নজরুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে মেহেদীকে ঢাকা ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস এন্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানকার চিকিৎসক সব কাগজপত্র দেখে তাকে ভারতে নেয়ার পরামর্শ দেন। এজন্য দরকার কমপক্ষে পাঁচ লাখ টাকা। কিন্তু এতো টাকা যোগানোর সাধ্য নেই তার। তাই সন্তানকে বুকে জড়িয়ে কেঁদেই দিন কাটছে তার। ছেলেকে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান মানুষদের কাছে সহায়তা চেয়েছেন তিনি। সবাই নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ০১৮৫৯৯২৬৮৩২ নম্বরে বিকাশ মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য করলে দরিদ্র বাবা—মায়ের বুক জুড়ে হয়তো বেঁচে থাকবে ছোট্ট মেহেদী হাসান।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads