• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯
করোনা : ভারতে দৈনিক শনাক্তে বিশ্বরেকর্ড

সংগৃহীত ছবি

ভারত

করোনা : ভারতে দৈনিক শনাক্তে বিশ্বরেকর্ড

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৩ এপ্রিল ২০২১

করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো এক দিনে তিন লাখেরও বেশি রোগী শনাক্তের বিশ্বরেকর্ড হয়েছে ভারতে। গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটিতে তিন লাখ ১৪ হাজার ৮৩৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে এক দিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের বিশ্বরেকর্ড হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। জানুয়ারিতে দেশটি এক দিনে সর্বোচ্চ দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জন রোগী শনাক্তের কথা জানিয়েছিল। এবার তা ছাড়িয়ে গেল ভারত। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভির।

ভারতে মোট করোনা রোগীর সংখ্যা এক কোটি ৫৯ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় শীর্ষে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে আছে দেশটি। একই দিন মারা গেছে ২১০৪ জন। এতে দেশটিতে মহামারীতে মোট মৃত্যু এক লাখ ৮৪ হাজার ৬৫৭ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও মেক্সিকোর পরই ভারতে অবস্থান।

এদিকে ভারতে করোনার ডাবল মিউট্যান্ট আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই এবার থাবা বসাল ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট ভ্যারিয়্যান্ট’। মহারাষ্ট্র, দিল্লি ও পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে এ ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসের তিনটি আলাদা স্ট্রেইন মিলে তৈরি নতুন এই ভ্যারিয়্যান্টের সংক্রামক ক্ষমতাও প্রায় তিনগুণ বেশি। শুধু বাড়তি সংক্রামক ক্ষমতাই নয়, বরং নতুন এই স্ট্রেইনে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থারও দ্রুত অবনতি ঘটছে। নতুন এই ধরন আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এমন ব্যক্তিকেও ফের আক্রান্ত করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঠিক সময় লাগাম পরানো না গেলে এবার সংক্রমণ সুনামির আকার ধারণ করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, আপাতত ভাইরাসের নতুন এই ধরনের বিরুদ্ধে একের পর এক টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই। তবে সবার আগে প্রয়োজন নিয়মিত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে ধরনটির চরিত্র বিশ্লেষণ। তাদের মতে, ভাইরাসের ডাবল মিউট্যান্ট ধরনটি সঠিক সময়ে শনাক্ত না হওয়ার কারণেই হয়তো ছড়িয়ে পড়েছে এই ট্রিপল মিউট্যান্ট। ভাইরাস যত ছড়ায় সেটির মিউটেশনের বা রূপান্তরিত হওয়ার হারও তত বৃদ্ধি পায়। যার কারণে নতুন এই ধরনে সংক্রমিত হচ্ছে শিশুরাও। তবে এই ধরনটি নিয়ে খুব বেশি তথ্য নেই বিজ্ঞানীদের কাছে। যার কারণে আপাতত ভ্যারিয়্যান্ট অব কনসার্নের বদলে ভ্যারিয়্যান্ট অব ইন্টারেস্টের তালিকাতেই রাখা হয়েছে এটিকে।

গত বছর কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে দেশটিতে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কখনো এক লাখ পেরোয়নি। দ্বিতীয় ঢেউয়ে ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দৈনিক সংক্রমণ এক লাখ অতিক্রম করে। তার ১০ দিন পর, ১৫ এপ্রিল শনাক্ত ছাড়ায় দুই লাখের গণ্ডি। এর এক সপ্তাহের মাথায় এবার এ সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়েছে। তবে এখন সংক্রমিতের সংখ্যার নিরিখে মৃত্যুহার কমে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ হয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের, যা মাসের শুরুতে ছিল ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ।

দ্বিতীয় ধাক্কায় মোট সংক্রমিতের মধ্যে ১০ বছরের নিচে থাকা শিশুদের হার ২ দশমিক ৯৭ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৪.০৩ শতাংশ। তবে এবার ৭০-৮০ বছরের বয়সসীমার ব্যক্তিদের মৃত্যুহার দুই শতাংশ বেড়েছে। যদিও সরকারি পরিসংখ্যানে প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে বিভিন্ন রাজ্যে মৃত্যুর প্রকৃত হার আরো অনেক বেশি বলে দাবি বিভিন্ন মহলের। যার সমর্থনে একাধিক সমীক্ষা রিপোর্টও ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

ভারতের ১৪৬টি জেলায় সংক্রমণের হার ১৫ শতাংশের বেশি, যা উদ্বেগজনক। শনাক্তের শীর্ষে থাকা রাজ্যগুলো হচ্ছে-মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, কর্ণাটক, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, কেরালা ও তামিলনাড়ু। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত সব বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসাকেন্দ্র ও নার্সিং হোমকে কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছে গুজরাট। ২১ এপ্রিল রাতে এই সিদ্ধান্ত নেয় বিজয় রূপাণী সরকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads