• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অক্সিজেন সংকট ভারতে!

সংগৃহীত ছবি

ভারত

অক্সিজেন সংকট ভারতে!

অক্সিজেন সংকট ভারতে!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৬ এপ্রিল ২০২১

ভারতে চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি থাকলেও অক্সিজেনের অপেক্ষায় রুদ্ধশ্বাস হয়ে থাকছে হাসপতালগুলো, সময়মতো সরবরাহ না পাওয়ায় মারা যাচ্ছেন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অনেক রোগী। রয়টার্সের অনুসন্ধান বলছে, অক্সিজেন পরিবহনের সময়সাপেক্ষ ব্যবস্থা, আমলাতন্ত্রের ঢিলেমি আর আগাম পরিকল্পনার অভাবে ঘটছে এমনটা।

বার্তা সংস্থাটির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রধান সমস্যা হচ্ছে হাসপাতালের বেডে সময়মতো অক্সিজেন পৌঁছাচ্ছে না। অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্রগুলো অনেক দূরে থাকায় এবং বিতরণ ব্যবস্থা সমন্বিত না হওয়ার কারণেই এমনটা হচ্ছে। নিজেদের যথেষ্ট উৎপাদন সক্ষমতা না থাকায় এ সপ্তাহে দিল্লির বেশ কিছু হাসপাতাল থেকে জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের মতো দিল্লির প্রতিবেশী রাজ্যগুলোতেও কোভিড-১৯ রোগী বাড়তে থাকায় চাহিদা অনুযায়ী অক্সিজেন সরবরাহ করতে গিয়ে তৈরি হয়েছে বাড়তি চাপ। সমপ্রতি দিল্লির বাড়তি চাহিদা মেটাতে ভারতের পূর্বাঞ্চলের শিল্প এলাকা থেকে ট্রাকে করে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। দিল্লিতে অক্সিজেনের সরবরাহ আসে দূর-দূরান্তের সাতটি রাজ্য থেকে। আদালতের একটি নথি অনুযায়ী এসব অক্সিজেন উৎপাদন কেন্দ্রের অনেকগুলোর দূরত্ব দিল্লি থেকে এক হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। রয়টার্স জানায়, পরিকল্পনায় ঢিলেমি করে সড়কপথে অক্সিজেন পরিবহনের পথে হেঁটেছে দিল্লি। নিজেদের পরিকল্পনার বিষয়ে দিল্লি সরকার সময়মতো প্রশ্নের জবাব দেয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা দুই থেকে তিন সপ্তাহ আগে সক্রিয় হয়ে উঠলে এমন সমস্যা হতো না।’ ভারতে এখন শিল্প খাতে ব্যবহারের হিসেবসহ দিনে অক্সিজেন উৎপাদন সক্ষমতা আছে সাত হাজার ১০০ টন, যা বর্তমান চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট।গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর থেকে জানানো হয়, এ সপ্তাহে কোভিড-১৯-এ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ২০টি রাজ্যে প্রতিদিন মোট ছয় হাজার ৭৮৫ টন চাহিদার বিপরীতে ছয় হাজার ৮২২ টন তরল অক্সিজেন বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দপ্তর থেকে জানানো হয়, গত কয়েক দিনে তরল অক্সিজেনের সরবরাহ তিন হাজার ৩০০ টন বাড়ানো  হয়েছে। এই সংকট নিরসনে ভারত কাজ শুরু করেছে। যেখানে সবচেয়ে বেশি অক্সিজেনের প্রয়োজন সেখানে রেলপথে ট্যাঙ্কার পরিবহন শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সবচেয় বড় গ্যাস কোম্পানি লিনডে ইন্ডিয়াসহ বাকিদের সাথেও কাজ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিমানবাহিনীর মালবাহী উড়োজাহাজে খালি ট্যাঙ্কারগুলো উৎপাদন কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। পরে সেখান থেকে অক্সিজেন ভরে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে সড়কপথে। জার্মানি থেকে ২৩টি ভ্রাম্যমাণ অক্সিজেন উৎপাদন ইউনিটও কেনা হচ্ছে সশ্রস্ত্র বাহিনীর পক্ষ থেকে। তরল অক্সিজেন পরিবহনের জন্য ২৪টি বিশেষায়িত কন্টেইনার কিনতে যাচ্ছে টাটা গ্রুপ। হাসপাতালগুলোকে অক্সিজেন দিতে চাইছে আরো বেশ কিছু কোম্পানি। সরকারের পক্ষ থেকে আর্গন গ্যাস এবং নাইট্রোজেন পরিবহনে ব্যবহার করা ট্যাঙ্কারগুলোকে অক্সিজেন পরিবহনে ব্যবহার উপযোগী করে তোলারও নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার তিনগুণ বেড়ে যাওয়ায় পাল্লা দিয়ে বাড়াতে হবে অক্সিজেনের উৎপাদন এবং বিতরণ ব্যবস্থার সক্ষমতা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads