• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
পিপি হাবিবুর রহমান হত্যায় ৬ জনের ফাঁসি

সংগৃহীত ছবি

আইন-আদালত

পিপি হাবিবুর রহমান হত্যায় ৬ জনের ফাঁসি

  • শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২২ মার্চ ২০২১

শরীয়তপুরে চাঞ্চল্যকর আওয়ামী লীগ নেতা ও শরীয়তপুর জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ছোট ভাই মনির হোসেন হত্যায় ৬ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন ও ৩ জনকে ২ বছর  করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ মামলায় ৪০ জন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ২০ বছর পর গতকাল রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন এ আদেশ দেন।

রায়ে বাদীপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেনি। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবে। আসামিপক্ষ বলছে ন্যায়বিচার পায়নি। তারাও  উচ্চ আদালতে আপিল করবে।

মামলার বিবরণে ও বাদীপক্ষ জানায়, ২০০১ সালের ৫ অক্টোবর শরীয়তপুর জজকোর্টের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান ও তার ভাই মনির হোসেনকে আওয়ামী লীগের সভা চলাকালে নিজ বাসায় প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত হাবিবুর রহমানের স্ত্রী জিন্নাত হাবিব বাদী হয়ে তৎকালীন শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গকে প্রধান আসামি করে কিছুসংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ ৫৪-কে আসামি করে পালং থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ১নং আসামিসহ কয়েকজনের নাম বাদ দিয়ে ২০০৩ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। মামলার বাদিনী নিহত পিপির স্ত্রী জিন্নাত হাবিব অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজি দেন। নিম্ন আদালত নারাজি নামঞ্জুর করেন। পরে  উচ্চ আদালতে নারাজি মঞ্জুর করেন। পুলিশ তদন্ত করে পুনরায় ৫৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এরপর আসামিপক্ষ ঐ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে রিভিশন করে মামলাটির কার্যক্রম বিলম্বিত করে। এরই মধ্যে আসামি কে এম হেমায়েত উল্লাহ আওরঙ্গ ও শাহজাহান মাঝি মারা যায়। কিছুদিন পূর্বে এ মামলার বাদিনী জিন্নাত হাবীবও মারা গেছেন। দীর্ঘ ২০ বছর মামলাটির বিচারকাজ আটকে থাকার পর পুনরায় বিচারকাজ শুরু হয়। গত ১৭ সেপ্টেম্বর মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী নিহত পিপি হাবিবুর রহমান ও বাদিনীর বড় ছেলে প্রত্যক্ষ সাক্ষী অ্যাডভোকেচ পারভেজ রহমাান জনের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে কার্যক্রম পুনরায়  শুরু হয়। এ  মামলায় ২৮ জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক শেষ করে। এ মামলায় ৬ জন আসামি শাহিন কোতোয়াল, শহীদ কোতোয়াল, শফিক কোতোয়াল, শহীদ তালুকদার, মজিবুর রহমান তালুকদার ও সলেমান সরদারকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। রায়ে মামলার অন্যতম আসামি সরোয়ার হোসেন বাবুল তালুকদার, বাবুল খান, ডাবলু খান ও টোকাই রশিদকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাস করে কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করে। এ মামলায় মন্টু তালুকদার, আসলাম সরদার ও জাকির হোসেন মজনু সরদারকে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। মামলায় বাকি ৪০ জন আসামি নির্দোষ প্রমাণ হওয়ায় বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। এ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শহীদ তালুকদার, শাহীন কোতোয়াল, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাবুল তালুকদার, টোকাই রশিদ ও ২ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত  মজনু সরদারসহ ৫ জন পলাতক রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রায়ের দিন সকাল থেকে কড়া পুলিশ প্রহরায় ছিল আদালত প্রাঙ্গণ। এ মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান এবং সরকারপক্ষে ছিলেন সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট মীর্জা হজরত আলী ।

সরকারি কৌঁসুলি মীর্জা হজরত আলী বলেন, মামলায় বাদীপক্ষ পুরোপুরি ন্যায়বিচার পায়নি। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদুর রহমান বলেন, মামলায় আসামিরা ন্যায়বিচার পায়নি। তারাও উচ্চ আদালতে আপিল করবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads