• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

আইন-আদালত

মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল

সাক্ষী না আসায় খালাস পাচ্ছেন আসামিরা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ জুন ২০২১

২০২০ সালে মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর কেটে গেছে এক বছরেরও বেশি সময়। এই সময়ের মধ্যে ২৫২টি মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। এতে খালাস পেয়েছেন ২৪৯টি মামলার আসামি। ঝুলে আছে ১২২০  মামলা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অধিকাংশ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের অনুপস্থিতির কারণে আসামিরা খালাস পেয়ে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে সমন জারি করার পরও তারা আদালতে উপস্থিত হন না।

এবিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু বলেন, মানবপাচার আইনের মামলাগুলো আদালতে আসার পর সাক্ষীদের সাক্ষ্য দিতে সমন পাঠানো হয়। জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় সাক্ষীদের বিরুদ্ধে। এরপরও অধিকাংশ সাক্ষী সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসেন না। সাক্ষীদের উচিত আদালতে এসে সাক্ষ্য দেওয়া। ২০২০ সালের ৯ মার্চ ঢাকায় মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়। এর আগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মানবপাচার আইনের মামলার বিচার হতো। ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের ১৭ জুন পর্যন্ত ২৫২টি মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। এর মধ্যে খালাস দেওয়া হয়েছে ২৪৯টি মামলার আসামিদের।

অনুসন্ধানে দেখা দেখা গেছে, অধিকাংশ মামলায় সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় আসামিদের খালাস দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিনটি মামলায় পাঁচ আসামিকে সাজা দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে একজনের যাবজ্জীবন, দুজনের ১৪ বছর, দুজনের ১০ বছর ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বর্তমানে ঢাকার মানবপাচার টাইব্যুনালে এক হাজার ২২০টি মামলা বিচারাধীন।

মানবপাচারের অধিকাংশ মামলার বিচার কার্যক্রমই চলছে ধীরগতিতে। তদন্ত কার্যক্রম শেষ করতে দীর্ঘ সময় নিচ্ছেন তদন্ত কর্মকর্তারা। যেসব মামলা আলোর মুখ দেখেছে (চার্জশিট দেওয়া হয়েছে) সেগুলোর ৯৬ ভাগই বিচারাধীন আছে। মামলা নিষ্পত্তির হার ৩ দশমিক ৯১ ভাগ। জানতে চাইলে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, মানবপাচারের মামলাগুলো দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা সত্যিই দুঃখজনক। মামলাগুলো দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন। নয়তো বিচারপ্রার্থীদের মনে ন্যায়বিচার নিয়ে হতাশা সৃষ্টি হবে। কোনো অপরাধীই যেন আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে পার পেয়ে না যায়-সে ব্যাপারে আদালত, প্রসিকিউশন ও তদন্ত সংস্থাকে আরো সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া মানবপাচার রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে বর্ডার অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো তৎপরতা বাড়াতে হবে। এসব করা গেলে মানবপাচার কমে আসবে।

আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী, মানবপাচার মানুষের অধিকার লঙ্ঘন করে। মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন এবং এ অপরাধের শিকার ব্যক্তির সুরক্ষা, অধিকার বাস্তবায়ন ও নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতকরণের উদ্দেশ্যে ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি আইন প্রণীত হয়। এ আইনে মানবপাচারের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে দেশের সাত বিভাগে ২০২০ মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠনের অনুমতি দেওয়া হয়। এরপর ২০২০ সালের ৯ র্মাচ ঢাকায় মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads