• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
সকালে ভবনের নিচ থেকে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

জাতীয়

ভূঞাপুরে ট্রাকসহ সরকারি ২৮০ বস্তা চাল জব্দ, গুদামকর্মকর্তাসহ আটক ২

  • ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ১৪ এপ্রিল ২০২১

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে খাদ্য গুদাম থেকে পাচার হওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর ৬৪০ বস্তা চালের মধ্যে ২৮০ বস্তা চাল জব্দ করা হয়েছে। পরে গুদামকর্মকর্তা ও নৈশপ্রহরীকে আটক করে পুলিশ।

মঙ্গলবার মধ্যরাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহানের উপস্থিতিতে এ চাল জব্দ করা হয়। তবে এখনো উদ্ধার হয়নি পাচার হওয়া ৩৬০ বস্তা চাল। এ ঘটনায় রাতেই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ গুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন ও নৈশপ্রহরী আল-আমিনকে আটক করে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভুঞাপুর খাদ্য গুদাম থেকে দুপুরের দিকে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা কেজি দরের চাল ট্রাকযোগে পাচার হচ্ছিল এ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সংবাদকর্মী আল আমিন শোভন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহানকে জানান। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পাচার হতে যাওয়া চাল বোঝাই ট্রাকটি দেখতে পান। 

পরে তিনি বিষয়টি গুদাম কর্মকর্তা মো.বেলাল হোসেনের কাছে জানতে চাইলে গুদাম কর্মকর্তা কোন ধরনের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এমনকি সিসিটিভির পাসওয়ার্ডও তার কাছে নেই বলে জানান। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান বিষয়টি ওসি মোহাম্মদ আবদুল ওহাবকে জানালে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে আসেন এসআই টিটু চৌধুরী। এদিকে এর ফাঁকে চাল পাচারের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গাবসারা ইউনিয়নের দু’জন ডিলারকে ডেকে এনে গোপনে স্বাক্ষর করিয়ে নেন গুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন। তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। খোলা হয় ট্রাকের ছাউনি। একে একে বের হয়ে আসে প্লাস্টিকের ৫০ কেজির ২৮০ টি চাউলের বস্তা। পরে সে চাল জব্দ করে ট্রাকসহ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তখন গোপন করেন ৩৬০ বস্তা চাল পাচারের বিষয়টি। কিন্তু তা আর বেশি সময় গোপন থাকেনা। আসল তথ্য বেরিয়ে আসে গুদামের নৈশপ্রহরী আল-মিনের কাছ থেকে। আল-আমিন জানায়, স্যারের (গুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন) নির্দেশে প্রথম ট্রাকে ৩৬০ বস্তা ও পরের ট্রাকে ২৮০ বস্তা চাল লোড করা হয়েছে শ্রমিক দিয়ে। ৩৬০ বস্তা নিয়ে ট্রাকটি ঘাটাইলের হামিদপুরে চলে যায়। পরের ট্রাকটি আটকা পড়ে। সর্বমোট ৩৬০ বস্তা চাল লোড করা হয়। 

ওসি এলএসডি বেলাল হোসেন বলেন, ২৮০ বস্তা চাল গাবসারা ইউনিয়নের ডিলার দিলীপ, ফরহাদ, নজরুল ও অর্জুনা ইউনিয়নের ডিলার সাখাওয়াত হোসেন লেবুর। বাকি ৩৬০ বস্তা চালের বিষয় তিনি জানেন না বলে জানান।  

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা জানান, চালগুলো সোমবার খুলনা থেকে এসেছে। ওসি এলএসডিই চালগুলো রিসিভ করেছেন। এসব চাল গোডাউনে থাকার কথা। কিভাবে ট্রাকে করে পাচার হচ্ছে তা তিনি জানেননা। 

এদিকে এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহা বাদি হয়ে গুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন ও নৈশপ্রহরী আল-আমিনের বিরুদ্ধে ভূঞাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ রাতেই তাদের আটক করেছে।  

এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুক্তা রানী সাহার অভিযোগের ভিত্তিতে গুদাম কর্মকর্তা বেলাল হোসেন ও নৈশপ্রহরী আল-আমিনকে আটক করা হয়েছে। তাদের আদালতে প্রেরণ করা হবে। তবে অভিযুক্তরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী হওয়ায় মামলাটি দুদকে রেকর্ড হবে। এ বিষয়ে দুদক টাঙ্গাইল আঞ্চলিক কার্যালয়ের সাথে কথা হয়েছে। দুদকই এর তদন্ত করবে। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা, ইশরাত জাহান বলেন, ট্রাকসহ ২৮০ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads