• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

অবশেষে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পাচ্ছে বঙ্গভ্যাক্স

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৯ এপ্রিল ২০২১

দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশীয় প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেকের আবিষ্কৃত টিকা ‘বঙ্গভ্যাক্স’-এর ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আবেদন ঝুলে আছে বিএমআরসিতে। অবশেষে চলতি সপ্তাহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন বিএমআরসির (বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল) চেয়ারম্যান সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। পাশাপাশি ভ্যাকসিন উৎপাদনে সক্ষম এমন প্রতিষ্ঠানকেও প্রয়োজনে অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানান বিএমআরসির কর্মকর্তারা। বিএমআরসির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, শুধু আমাদের বলা হয়েছিল যে ‘টাইমিং ইউ গো স্লো’। তো সেই গো স্লো মানে তো আমরা বন্ধ করে থাকতে পারি না, দেশের এই অবস্থার মধ্যে। আবার সরকারের আইনের ভেতরে আছে, সুতরাং তারা অনুমতি না দিলে আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে আমার ধারণা হচ্ছে, দুই-এক দিনের মধ্যেই আমরা এই সম্মতিটা পাব।

গ্লোব বায়োটেক বলছে, অনুমোদন পেলে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ট্রায়ালে যাওয়ার প্রস্তুতি আছে তাদের। গ্লোব বায়োটেকের হেড অব কোয়ালিটি অপারেশন ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বিএমআরসির নৈতিক অনুমোদনের পর ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হবে। এরপর নিয়মানুযায়ী আমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ তৃতীয় একটি প্রতিষ্ঠান ফেজ-১ ও ফেজ-২ এর ট্রায়ালে যাবে। তবে এই প্রক্রিয়াটি শুরু করতে তাদের ৮-১০ দিন সময় লাগতে পারে। আর ফেজ-১ ও ফেজ-২ এর ট্রায়াল শেষ করতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগবে। অর্থাৎ এই সপ্তাহে বিএমআরসি অনুমোদন দিলে এর পর অপেক্ষা করতে হবে ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের অনুমোদনের। তারা দ্রুত অনুমোদন দিলে দেশীয় এই টিকার তৃতীয় ফেজের ট্রায়ালে আসতে কমপক্ষে তিন মাসেরও বেশি সময় লাগবে। তবে সরকার চাইলে ফেজ-১ ফেজ-২ এই দুটি কম্বাইন্ড ট্রায়াল এবং ফেজ-৩ এর ট্রায়াল ব্যাপক ভিত্তিতে করতে দেওয়া হলে দ্রুতই ভ্যাকসিনেশন করা যাবে বলে জানিয়েছেন গ্লোব বায়োটেক কর্তৃপক্ষ। গ্লোব বায়োটেক কর্তৃপক্ষের দাবি, বর্তমানে টিকার যে সংকট চলছে, যথা সময়ে অনুমোদন পেলে তারা এই সমস্যা মোকাবিলা করতে পারতেন। ফেব্রুয়ারিতেই টিকার প্রয়োগ সম্ভব হতো। একই সঙ্গে এখন পর্যন্ত যে কটি ধাপ সম্পন্ন হয়েছে তাতে এমআরএনএ প্রযুক্তির এই টিকাটি নিরাপদ এবং কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়েছে।  ডাক্তার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন,  এটি পৃথিবীর সবচেয়ে লেটেস্ট প্রযুক্তি এবং পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যতগুলো টিকা দ্রুত অনুমোদন পেয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর এমআরএনএ প্রযুক্তির টিকা বেশি আমেরিকার মডার্না এবং ফাইজারের ভ্যাকসিন। এই ভ্যাকসিন যেসব দেশে প্রয়োগ শুরু করেছে তারা সুফল পাচ্ছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইসরাইলসহ বেশ কয়েকটি দেশ এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করায় এখন সেসব দেশে করোনার প্রকোপ কমে এসেছে। আমরা যদি যথাসময়ে অনুমোদন পেতাম তাহলে বর্তমান সংকট তৈরি হতো না।

তিনি বলেন, আমাদের ল্যাবরেটরি টেস্ট, অ্যানিমেল টেস্টেও কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। এমনকি মডার্না ও ফাইজার দুই ডোজের। কিন্তু আমাদেরটা এক ডোজের। তদুপরি আমাদেরটার কার্যকারিতা বেশি বলে প্রমাণিত হয়েছে। এটির অনুমোদন পেলে বিশ্বে এমআরএনএ প্রযুক্তির প্রথম এক ডোজের ভ্যাকসিন হিসেবে অনুমোদন পেত। এক ডোজেই যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি করেছে তা মডার্নার দুই ডোজের চেয়েও বেশি। এ ছাড়া মডার্না, ফাইজার সংরক্ষণ করতে হয় মাইনাস ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কিন্তু বঙ্গভ্যাক্স বাসাবাড়ির ফ্রিজের নরমাল জায়গায় এটি এক মাস পর্যন্ত সংরক্ষণ করা সম্ভব। আর ডিপ ফ্রিজে ছয় মাস পর্যন্ত। এ পর্যন্ত যে কয়টি ধাপ পার করতে হয়েছে তা শতভাগ সফলভাবে আমরা পার করেছি।

এদিকে, গ্লোবের টিকা নিতে জার্মানিসহ বেশ কয়েকটি দেশ যোগাযোগ করেছে গ্লোব কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। কিন্তু সরকারের রেগুলেটরি বিভাগের অনুমোদনের অভাবে এখন সেটিও সম্ভব হচ্ছে না। এ নিয়ে উভয় সংকটে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads