• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

সচেতন হচ্ছে না জনগণ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই ২০২১

যতই দিন যাচ্ছে, কঠোর লকডাউনে আরো বাড়ছে যানবাহন ও সাধারণ মানুষের চলাচল। করোনা সংক্রমণরোধে সরকারের দেওয়া ১৪ দিনের বিধিনিষেধের ষষ্ঠদিনে রাজধানীর অনেক সড়কেই চেকপোস্টে পুলিশের তল্লাশি দেখা যায়নি। গণপরিবহন ছাড়া রাস্তায় বেড়েছে যানবাহন সংখ্যা। আর ফেরিঘাটের দিকে তাকালে বোঝার কোনো উপায় নেই, দেশে করোনা পরিস্থিতি কতটা ভয়ানক পর্যায়ে পৌঁছেছে। বার বার লকডাউনেও সচেতন হচ্ছে না সাধারণ মানুষ।

গতকাল রাজধানীর সড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল আগের দিনগুলোর চেয়ে ছিল অনেক বেশি। যাত্রাবাড়ী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতাও ছিল ঢিলেঢালা। শনিরআখড়া, রায়েরবাগসহ বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্টে সক্রিয় ছিল না পুলিশ সদস্যরা। একই অবস্থা ছিল মিরপুরসহ রাজধানীর প্রায় সব রাস্তায়। এদিন কাঁচাবাজার ও মুদি দোকানে লোকজনের ভিড় ছিল বেশি। প্রধান সড়কে মানুষের পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যাও বেশি। তবে আজিমপুর চৌরাস্তায় সেনাবাহিনী, পুলিশ আর ভ্রাম্যমাণ আদালত বেশ তৎপর ছিল। নানা ছুতোয় বের হওয়া মানুষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তল্লাশি চৌকিতে, মাস্ক না পরায় করা হয় জরিমানাও।

বিজয়নগর, ফকিরাপুল, নয়া পল্টন, শাহজাহানপুর, আরামবাগ, ডিআইটি এভিনিউ ঘুরে দেখা গেছে, বড় দোকানপাট বন্ধ থাকলেও, অলিগলিতে দোকান খোলা। আরামবাগ, শাহজাহানপুর, পীরজঙ্গি মাজারের গলিতে ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে মানুষজনের চলাচল বেশি। টহল পুলিশকে দেখা যায় সাত মসজিদ রোড এলাকায় ভাসমান দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন, জড়ো হওয়া লোকজনকেও তারা সরিয়ে দিচ্ছেন। 

গতকাল বুধবার সকালে ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, আসাদ গেট, সাতরাস্তা ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে মোড়ে মোড়ে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, রিকশা ও ভ্যান চলাচল করতে দেখা যায়। এসব এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও আগের মতো কড়াকাড়ি দেখা যায়নি। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা জানিয়েছেন, কিছু বেসরকারি অফিস খোলা থাকায় অফিস টাইমে যানবাহন ও মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি।

এদিকে কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের কঠোর বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করেই শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুট দিয়ে ঢাকা ফিরছেন অনেকে। পাশাপাশি ঢাকা ও এর আশপাশের জেলা থেকে দক্ষিণবঙ্গেও যাচ্ছেন অনেকে।

সরজমিনে দেখা যায়, ফেরিতে জরুরি প্রয়োজনীয় যান ছাড়াও ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরসাইকেল ও শত শত যাত্রী পদ্মা পার হচ্ছেন। কেউ মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি। ফলে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়ছে। এদিকে ঘাট সংলগ্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট থাকলেও সাধারণ যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো কার্যকরী উদ্যোগ দেখা যায়নি।

অন্যদিকে বাংলাবাজার থেকে শিমুলিয়াঘাটে পৌঁছে ঢাকামুখি যাত্রীরা সড়কে পুলিশের চেকপোস্ট এড়িয়ে ছোট যানবাহনে ভেঙে ভেঙে রওনা হচ্ছেন। বিধি উপেক্ষা করে শিমুলিয়া থেকে ঢাকা রুটে ভাড়ায় চালিতে মাইক্রোবাস চলাচল কর করতে দেখা গেছে। এসব যানবাহনে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে দুই তিনগুণ বেশি ভাড়া। এতে জরুরি প্রয়োজনে আসা যাত্রীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।

গতকাল সকাল থেকে শিমুলিয়া ঘাটে মানুষের স্রোত দেখা গেছে। অনেকে পরিবারের বৃদ্ধ সদস্যদের নিয়েও ফেরিতে গাদাগাদি করে পদ্মা পার হচ্ছেন। যাত্রীদের অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। অনেকে মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটের বহরের ১৮ ফেরি থাকলেও পদ্মায় প্রবল স্রোতের কারণে এখন সাতটি ফেরি দিয়ে পারাপার করানো হচ্ছে বলে বিআইডব্লিউটিসির সহ-মহাব্যবস্থাপক আহাম্মদ আলী জানান।

তিনি বলেন, ফেরিগুলো যাত্রী পারাপারে বাধ্য হচ্ছে। কোনভাবেই যাত্রীদের আটকানো যাচ্ছে না। বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই বাংলাবাজার থেকে শিশুলিয়া ঘাটে আসছেন তারা। ঘাটে ফেরি ভিড়লে হুড়োহুড়ি করে তাতে ওঠানামা করছে লোকজন।

দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহা সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়েছে সরকার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads