• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

জাতীয়

ধর্মঘটের খবর জানে না সরকার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

হয়রানি-চাঁদাবজি, ট্রাকচালক লিটন হত্যার বিচার, ড্রাইভিং লাইসেন্সে জটিলতা, বর্ধিত আয়করসহ নানা সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশের ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, লরি, প্রাইম মুভার মালিক ও শ্রমিকদের। দাবি আদায়ে ধর্মঘটের ডাকও দিয়েছেন তারা। কর্মসূচি পালনে তাদের মধ্যে খানিকটা বিভাজন থাকলেও ধর্মঘটের কথা জানে না সরকার। একেক সংগঠনের নামে ভিন্ন ভিন্ন জোট বেঁধে মালিক-শ্রমিকরা কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছেন। কেউ ৭২ ঘণ্টার, কেউ ডেকেছেন ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট। কর্মসূচি পালনে সবাই মাঠে নামলেও এক ছাদের তলায় নেই তারা। বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে এ তথ্য। সূত্র জানিয়েছে, ২৭ সেপ্টেম্বর ভোর ৬টা থেকে ১০ দফা দাবিতে ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ট্যাংক লরি, প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ। আট বিভাগে মানববন্ধন কর্মসূচির পাশাপাশি ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছে তারা। ২৫ আগস্ট সংগঠনের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান, সদস্য সচিব তাজুল ইসলাম ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত ১০ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে জমা দিয়েছে। অপরদিকে ১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে সারা দেশে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ কাভার্ড ভ্যান-ট্রাক-প্রাইম মুভার পণ্য পরিবহন মালিক অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশন। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে পোস্টার লিফলেট বিতরণ করছে তারা।

গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের কদমতলীর ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ট্রাকচালক শ্রমিক ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ওয়াজি উল্লাহ জানান, ‘১৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে আমাদের ২৪ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু হবে ২১ সেপ্টেম্বর। দেশের পণ্য পরিবহনের শতকরা ৮৫ ভাগ সড়কপথে হয়। করোনা মহামারিসহ যে কোনো দুর্যোগে আমরা সারা দেশে পণ্য পরিবহন স্বাভাবিক রাখি। কিন্তু আজ এই খাতের মালিক-শ্রমিকরা চরম অবহেলা ও বঞ্চনার শিকার হচ্ছে।’

তিনি জানান, ‘ঘুষসহ সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যত্রতত্র গাড়ির কাগজপত্র চেক করা যাবে না। এ ছাড়া যেসব চালক ভারী মোটরযান চালাচ্ছেন তাদেরকে সহজ শর্তে এবং সরকারি ফি-এর বিনিময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিতে হবে। মোটরযান মালিকদের ওপর আরোপিত অগ্রিম আয়কর বাতিল করতে হবে। আদায় করা বর্ধিত করও ফেরত দিতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সড়ক-মহাসড়কে শ্রমিকদের বিশ্রামের জায়গা নেই। আমাদের আরেকটি দাবি হলো শ্রমিকদের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা।’

বাংলাদেশ ট্রাক-কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরি, প্রাইম মুভার মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আহ্বায়ক রুস্তম আলী খান জানিয়েছেন, ‘গত আগস্টে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। সেই অনুযায়ী ৮টি বিভাগে ১০ দফা দাবির সমর্থনে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতির কর্মসূচি দেওয়া আছে। আরেকটি সংগঠন আগেই ৭২ ঘণ্টার কর্মবিরতির ঘোষণা করেছে। ওদের কর্মসূচির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।’ তিনি আরো জানান, ‘আমাদের

সংগঠনের ১০ দফা দাবি সম্পর্কে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় অবগত। সরকারের পক্ষে স্বরাষ্ট্র বা সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় ডাকলে আমরা আলোচনায় বসবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে রুস্তম আলী জানান, ‘এখন পর্যন্ত সরকার থেকে আলোচনার প্রস্তাব আসেনি। তবে হাতে সময় আছে। আমরা অপেক্ষায় রয়েছি। ১০ দফা বাস্তবায়ন না হলে জেলার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দুজন অতিরিক্ত সচিব নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ‘এ বিষয়ে কোনো মন্ত্রণালয়ই অবগত নয়।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads