সরকারি ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএলএসটি) ভবন নির্মাণের জন্য সিলেটে তিনটি পাহাড়-টিলা কাটার অভিযোগ উঠেছে। প্রাণিসস্পদ অধিপ্তর সিলেটের অধীনে এ নির্মাণকাজ হচ্ছে। তবে এ কাজে নেওয়া হয়নি পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি।
সোমবার বিকালে প্রাণিসস্পদ অধিপ্তর সিলেটের কার্যালয় সংলগ্ন প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, পাশাপাশি তিনটি পাহাড় ও টিলা রয়েছে। প্রায় ৫০ ফুট উঁচু টিলার অর্ধেক অংশ ২০ থেকে ৩০ ফুট উঁচু এলাকা এক্সাভেটর দিয়ে কেটে পাশের ঢালে ফেলে মাটি সমান করা হচ্ছে। বিষয়টি দাঁড়িয়ে দেখভালও করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাহাড়-টিলার পাঁচ একর জায়গায় ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি প্রতিষ্ঠার জন্য পাঁচটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রায় ৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে পৃথক পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ওয়াকওর্ডার দেওয়া হয়েছে। ২০ মাসের মধ্যে ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী ঢাকার এম রহমান এনটারপ্রাইজ ও রয়েল কনস্ট্রাকশনসহ পাঁচটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিলা কেটে মাটি সমান করছে এবং নানা মাপ জোক করা হচ্ছে।
এভাবে পাহাড়-টিলা কেটে সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে ক্ষোভ জানিয়েছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম। তিনি বলেন, আইএলএসটি নির্মাণের জন্য সরকারের সমতল জায়গার কোনো অভাব নেই। সেগুলোতে ভবন নির্মাণ না করে পরিবেশের ক্ষতি করে আইন অমান্য করা হচ্ছে। যা নিন্দনীয়।
এ বিষয়ে সিলেট জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুস্তম আলী বলেন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও সরকারি ডেইরি ফার্মের টেকনিশিয়ান তৈরির জন্য সরকার ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি) নামে একটি ইনস্টিটিউট স্থাপন করছে।
পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে এভাবে টিলা কাটার কোনো অনুমতি আছে কি-না জানতে চাইলে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। সরকারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণে পরিবেশের অনুমতি বা ছাড়পত্র নেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমার জানা নেই।
তবে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক মো. ইমরান হোসেন বলেন, সরকারি হোক আর বেসরকারি হোক কেউ পাহাড়-টিলা এলাকায় স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইএলএসটি) সিলেট নির্মাণের জন্য বা টিলা এবং গাছ কাটার জন্য পরিবেশের ছাড়পত্র কেউ নেননি। আমরা টিলা কাটার বিষয়টি জানার পরপরই পুলিশকে বলেছি যারা টিলা কাটছে তাদের যেন আইনের আওতায় আনে।
পরিবেশ অধিদপ্তর এ নিয়ে অভিযান চালাতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাজের ব্যস্ততার জন্য অভিযান চালানো যায়নি। এছাড়া আমি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে স্বাস্থ্যের বিভিন্ন সমস্যা হচ্ছে।