• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

তামাকমুক্ত না হলে অর্জন হবে না এসডিজিও

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৯ অক্টোবর ২০২১

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য বলছে, তামাক ব্যবহারের ফলে করোনা আক্রান্তদের মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। বর্তমানে দেশের প্রায় ৪ কোটি তামাক ব্যবহারকারী করোনার মৃত্যুঝুঁকিতে আছেন। তাই আইন সংশোধনের মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে যুগোপযোগী করা সময়ের দাবি বলে মত  বিশেষজ্ঞদের। তাদের মতে, সরকার ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে। কারণ, দেশকে তামাকমুক্ত করা না গেলে এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে। এ কারণে তারা বিদ্যমান তামাক আইনের সংস্কার ও সংশোধনের তাগিদ দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের অনেকে বলছেন, ২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ তামাকমুক্ত হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাদের মতে, ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ পেতে হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল এফসিটিসির আলোকে শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ আইন ও কঠোর বাস্তবায়ন দরকার। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাক কোভিড-১৯ সংক্রমণের সহায়ক। সম্প্রতি প্যারাগুয়েতে কোভিড-১৯ সংক্রমণ ঝুঁকি থেকে জনগণকে রক্ষায় পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও গণপরিবহনে ধূমপান শতভাগ নিষিদ্ধ করেছে।

সম্প্রতি একটি ওয়েবিনারে বিশেষজ্ঞরা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করতে ৬টি সুপারিশ করেছেন। ১. নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তসহ সকল পাবলিক প্লেস, কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে শতভাগ ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা। ২. বিক্রয়স্থলে তামাকজাতদ্রব্য প্রদর্শনও নিষিদ্ধ করা। ৩. তামাক কোম্পানির ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি’ বা সিএসআর কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। ৪. বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং প্যাকেটবিহীন জর্দা-গুল বিক্রি নিষিদ্ধ করা। ৫. ই-সিগারেট এবং হিটেড টোব্যাকো প্রোডাক্টসহ (এইচটিপি) সকল ইমার্জিং টোব্যাকো প্রোডাক্টস আমদানি ও বিক্রি নিষিদ্ধ করা। ৬. সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার বাড়ানোসহ তামাকপণ্য মোড়কজাতকরণে বিধিনিষেধ আরোপ করা।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান স্পিকারস সামিটের সমাপনী অনুষ্ঠানে এফসিটিসির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের ঘোষণা দেন। এই নির্দেশনার আলোকে সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।

জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনী কমিটির সদস্য ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর ডিপার্টমেন্ট অব এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী বলেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে বিদ্যমান আইন চূড়ান্ত রূপ পেতে এখনো অনেকগুলো ধাপ বাকি। সেগুলো পেরিয়ে সংসদে বিল আকারে উপস্থাপন করা পর্যন্ত কাজগুলো যাতে দ্রুত হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে আরো উদ্যোগী হতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার কাজ চলছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, এজন্য নির্ধারিত কমিটি কাজ করছে। আইন মন্ত্রণালয়কেও এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ তামাকজনিত রোগে মারা যায়। পঙ্গুত্ববরণ করে আরো কয়েক লাখ মানুষ। এখনো দেশের ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠী তামাক ব্যবহার করছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads