• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

জাতীয়

ভোগান্তি কমছে রাজউকে

অনলাইনে দেওয়া হবে নকশা অনুমোদন ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০২১

নকশা অনুমোদন ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্রের ভোগান্তি কমাতে শুরু হচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের অনলাইন সেবা কার্যক্রম। এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ইতোমধ্যে এই প্রকল্প পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে গুলশান এলাকায়। এই এলাকার আবেদনকারীরা এখন ঘরে বসেই এই সেবা পাচ্ছেন। প্রকল্পটি সফল হলে আগামী ছয় মাসের মধ্যে রাজউকের আওতাধীন অন্য এলাকায়ও এই সেবা দেওয়া শুরু হবে। 

তবে অনলাইন সেবার বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে হবে বলে মনে করছেন অনেকে। তা না হলে অনলাইন সেবা পেতেও ভোগান্তি পোহাতে হবে রাজধানীবাসীকে বলে মনে করছেন তারা।

রাজউকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীতে ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদন ও ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র পেতে গ্রাহকদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাই এই সেবা সহজ করতে ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প : রাজউক অংশ’ নামে একটি প্রকল্প নিয়েছে রাজউক। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে এই প্রকল্প গুলশান এলাকায় চালু হয়েছে।

রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখা সূত্র জানায়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাজউকের সেবা সহজ করতে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প’র একটি ওয়েবসাইট উদ্বোধন ও ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিপিএস) সেবার চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এখন এ ইসিপিএস পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলটিং) রাজউকের জোন-৩ এর সাবজোন-২ (গুলশান, মিরপুর, সাভার, টঙ্গী) ও জোন-৪ এর সাবজোট-২ গুলশান এলাকায় চালু হয়েছে। অনলাইনে রাজউকের এই সেবাটি পাওয়া যাবে ওয়েবসাইটে।

জানা যায়, স্বল্পসময়ে সব নির্মাণ কাজের সুষ্ঠু সেবা নিশ্চিত করতে বিদেশি সংস্থার পরামর্শে এবং দক্ষ জনবল নিয়ে এই সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জোন-৬ এর সাবজোন-২ এ এই সেবা চালু করা হবে। পরে সম্ভাব্য ত্রুটিগুলোর সমাধান পর্যায়ক্রমে সব জোন ও সাবজোনে এই সেবা বাস্তবায়ন করবে রাজউক

রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) মো. মোবারক হোসেন বলেন, স্বল্পসময়ে সব নির্মাণ কাজের সুষ্ঠু সেবা নিশ্চিত করতে বিদেশি সংস্থার পরামর্শে এবং দক্ষ জনবল নিয়ে এই সিস্টেমের উন্নয়ন করা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে জোন-৬ এর সাবজোন-২ এ এই সেবা চালু করা হবে। পরে সম্ভাব্য ত্রুটিগুলোর সমাধান পর্যায়ক্রমে সব জোন ও সাবজোনে এই সেবা বাস্তবায়ন করবে রাজউক। তখন ভবন নির্মাণে আবেদন প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে সলভেন্সি সার্টিফিকেট পাওয়া পর্যন্ত সব অনলাইনেই সম্পন্ন হবে। ঘরে বসেই এই সেবা নিতে পারবেন গ্রাহকেরা। এছাড়া বিভিন্ন সার্ভিস ফি নিজের সুবিধাজনক সময় ও স্থানে জমা দিতে পারবেন তারা। এর সঙ্গে ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সিস্টেমও যুক্ত করা হয়েছে।

রাজউক জানায়, এই প্রকল্পের সামগ্রিক উদ্দেশ্য হলো ঢাকা ও সিলেটে জরুরি ব্যবস্থায় কার্যকর সাড়া দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের সরকারি সংস্থাগুলোর সক্ষমতা জোরদার করা। গৌণ উদ্দেশ্য হলো ঢাকা ও সিলেটে নতুন নির্মাণ কাজের মানোন্নয়ন, রাজউকের অধীনে আরবান অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইউনিট গঠন ও পরিচালনা করা এবং ডিজিটাল বৈদ্যুতিক নির্মাণ অনুমোদন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা। এই লক্ষ্যে আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত এবং স্থানীয়ভাবে পরিচালিত দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশ তৈরি ও সক্ষম করার চেষ্টায় নিয়োজিত।

এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ, বিশেষ করে রাজউক অন্তর্ভুক্ত এলাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে এবং সর্বোপরি একটি সক্রিয় স্থিতিস্থাপক ইউনিট রাজধানী ঢাকাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবে, যারা ভ্থমিকম্প, ভবনধস, অগ্নিদুর্যোগের মতো জরুরি ঘটনার ঝুঁকি মোকাবিলায় দক্ষতার সঙ্গে কাজ করবে।

আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্পের ওয়েবসাইটে প্রকল্প পরিচালকের বার্তায় বলা হয়েছে, রাজউক বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রকল্প : রাজউক অংশ’ বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলোর মধ্যে এটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রকল্প।

তবে সাধারণ নাগরিকরা বলছেন, রাজউকের এই সেবা কার্যক্রমে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক ধারণা জন্মাবে। কিন্তু দক্ষ জনবলের অভাবে যেন এই সেবা বন্ধ না হয়, এটা রাজউককে নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি রাজউক সংশ্লিষ্টদেরও এ বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হবে। তা না হলে নানান অজুহাতে ভোগান্তিতে পড়বেন সেবা গ্রহীতারা।

গুলশান-১ নম্বরের ২৬ নম্বর রোডের বাসিন্দা হাফিজ আল হাদি বলেন, রাজউকের এই অনলাইন সেবা ইতিবাচক। তবে অনলাইন সেবার বিষয়ে রাজউকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে হবে। অন্যথায় অনলাইন সেবা পেতেও নাগরিকদের ভোগান্তি পোহাতে হবে। রাজউকের অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্নীতিপ্রবণ মনোভাব বজায় থাকলে কোনো ডিজিটাল প্ল্যাটফরমই পুরোপুরি কার্যকর হবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads