• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
পিবিআইয়ের তদন্তেও সন্তুষ্ট না নুসরাত!

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

পিবিআইয়ের তদন্তেও সন্তুষ্ট না নুসরাত!

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০২১

মুনিয়ার মৃত্যু নিয়ে করা মামলার এখন তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মুনিয়ার বড়বোন নুসরাত তানিয়া আট নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মুনিয়ার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে পিবিআইকে। পিবিআই নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছে। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মধ্যে পিবিআই একটি ফ্ল্যাগশীপ প্রতিষ্ঠান। নিরপেক্ষ ও নির্মোহ তদন্তের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই এই প্রতিষ্ঠানটি অনেক সুনাম কুড়িয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হলেও এই মামলার বাদী নুসরাত তানিয়াকে এখনো সন্তুষ্ট করতে পারেনি পিবিআই। পিবিআইয়ের বিরুদ্ধে নানা রকম অভিযোগ উত্থাপন করেছেন নুসরাত তানিয়া এবং এই অভিযোগগুলো নিয়ে তিনি আদালতে যাবেন বলেও পিবিআইকে হুমকি দিয়েছেন।

অবশ্য পিবিআই বলছে যে, পিবিআই কারো হুমকি বা চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না। পিবিআই নিরপেক্ষ ও নির্মোহভাবে এই তদন্ত করবে এবং আইনের চুলচেরা বিশ্লেষণ করেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

উল্লেখ যে, গত এপ্রিল মাসে গুলশানে একটি ফ্ল্যাটে মারা যায় মুনিয়া। মুনিয়ার মৃত্যুর পর তার বড়বোন নুসরাত তানিয়া কুমিল্লা থেকে এসে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন গুলশান থানায়। দীর্ঘ তিন মাস তদন্ত করে গুলশান থানা পুলিশ। তদন্ত শেষে অপমৃত্যুর কোনো প্রমাণ পায় নি এবং এর ফলে এই মামলাটিকে খারিজ করে দিয়ে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় আদালতে। কিন্তু মামলার বাদী নুসরাত তানিয়া এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দরখাস্ত দেন। শেষ পর্যন্ত আদালত তার নারাজি আবেদন খারিজ দেয়। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে না গিয়ে নুসরাত তানিয়া একই ঘটনায় ভিন্ন একটি মামলা দায়ের করেন যা বাংলাদেশের সংবিধান ও ফৌজদারি কার্যবিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় বেশ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা হয় এবং মুনিয়াকে ধর্ষণ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়। আদালত বিষয়টি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। পিবিআই এখন মামলাটির তদন্ত করছে। পিবিআই সূত্র বলছে, মামলাটির তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে।

তবে মামলাটি দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং, প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে ইমেজ নষ্টের একটি সুস্পষ্ট প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই মামলা হওয়ার পরপরই কানাডা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধাপরাধীদের মদদে ও পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত কিছু আইপিটিভি এবং সামাজিক মাধ্যমে লাগাতার অপপ্রচার ও মিথ্যাচার করা হচ্ছে। মুনিয়ার মৃত্যুটিকে একটি রাজনৈতিক ইস্যু বানিয়ে সরকারকে ঘায়েল করার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে ও বিচারের আগেই রায় দেয়া হচ্ছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তাদের সূত্রে বলা হচ্ছে, এই বিষয়গুলো খুবই গর্হিত। কারণ একটি মামলার নির্মোহ ও নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য সকল পক্ষকে দায়িত্বশীলতা অবলম্বন করা উচিত। এধরনের বিচারাধীন একটি বিষয় নিয়ে কোনো পক্ষেরই কথা বলা উচিত নয়। কিন্তু দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে কুৎসিত, নোংরা এবং আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে বিচারের আগেই বিচার শেষ করা হচ্ছে। আর এটিকে পুঁজি করে মামলার বাদী নুসরাত তানিয়া এখন পিবিআইয়ের উপর নানা রকম চাপ প্রয়োগ করছে। কিন্তু পিবিআই এসব চাপের কাছে নতি স্বীকার করছে না বলেই পিবিআই সূত্রে জানা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিবিআইয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, পিবিআই নির্মোহ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করছে এবং তদন্তের জন্য যা যা করা দরকার সেটি করা হচ্ছে। কিন্তু কোনো কোনো মহল তদন্তের আগেই কাউকে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে। এটি পিবিআই করতে পারে না।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, হত্যা মামলা প্রমাণের ক্ষেত্রে প্রধান উপজীব্য বিষয় হলো মৃত্যুর সময় অভিযুক্তের সরাসরি উপস্থিতি। সেক্ষেত্রে কারো উপস্থিতি যদি না পাওয়া যায় তাহলে সেটি হত্যা প্রমাণিত হয় না। আর এই বাস্তবতাতেই মুনিয়ার মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলে চালানোর যে চেষ্টা, তা অকার্যকর হয়ে উঠছে। তবে মুনিয়ার বড়বোন এই মামলা থেকে অন্য কোনো ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন বলেই তিনি এখন রীতিমতো পিবিআইয়ের উপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads