• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
টিকার অপেক্ষায় দেড় কোটির বেশি মানুষ

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

টিকার অপেক্ষায় দেড় কোটির বেশি মানুষ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ অক্টোবর ২০২১

নিবন্ধন করার পর দেড় কোটির বেশি টিকার এসএমএস বা খুদে বার্তা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে আছেন। তাদের অনেকের টিকার জন্য সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধনের পর দুই মাসের বেশি  সময় পার হয়ে গেছে। এখনো তারিখ জানতে পারছেন না।

দেশে গত ২৬ জানুয়ারি টিকার জন্য অনলাইনে নিবন্ধন শুরু হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত সোমবার পর্যন্ত ৫ কোটি ৪৭ লাখ ৯৭ হাজারের বেশি মানুষ টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ৩ কোটি ৮৮ লাখ ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ। অর্থাৎ,  নিবন্ধিতদের মধ্যে এখনো টিকা পাননি প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, কোনো কোনো কেন্দ্রে টিকার আবেদন বেশি থাকায় তারিখ জানিয়ে এসএমএস পাঠাতে দেরি হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানে কাজ চলছে।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা মো. সবুর ৩০ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সেন্টারে টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। টিকা নেওয়ার তারিখ এখনো জানতে পারেননি। মিরপুরের বাসিন্দা মাসুদুল হাসান ২২ জুলাই ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে নিবন্ধন করেও এখনো টিকা নিতে পারেননি। তবে মাসুদুল হাসানের অভিযোগ, তাঁর পরে নিবন্ধন করেও পরিচিত একাধিক ব্যক্তি টিকা নিয়েছেন।

গত ৩ আগস্ট ঢাকা ডেন্টাল কলেজ কেন্দ্রে টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেন পল্লবীর বাসিন্দা জোসেফ। একই দিনে নিবন্ধন করেছিলেন তার স্ত্রীরও। কিন্তু দুই মাস পরও টিকা নেওয়ার তারিখ জানিয়ে কোনো এসএমএস তারা পাননি। মোহাম্মদপুরের আরেক বাসিন্দা ফেরদৌর ও তার স্ত্রী টিকার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন গত ৫ আগস্ট। দুই মাস ৪ দিন পর ১৫ অক্টোবর এসএমএস পান তারা।

মিরপুরের আলম শেখ গত ৬ আগস্ট করোনাভাইরাসের টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন। কেন্দ্র হিসেবে বাছাই করেন রাজধানীর জাতীয় নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। তিনিও জানালেন টিকার জন্য এসএমএস পাননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিভাগের একজন সিভিল সার্জন বলেছেন, অনেকে অনেক দিন আগে নিবন্ধন করেও টিকা পাচ্ছেন না। আবার কেউ কেউ নিবন্ধন করার দু-এক দিনের মধ্যে টিকা পেয়ে যাচ্ছেন। দ্রুত টিকা পেতে অনেকে প্রভাব খাটাচ্ছেন। আবার টিকাকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরাও পরিচিতদের সুযোগ দিচ্ছেন, এমন অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন অনুযায়ী তথ্যগুলো সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে। প্রতিটি কেন্দ্রে ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দেওয়া থাকে। সে অনুযায়ী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকাদান কার্যক্রমে নিয়োজিত স্বাস্থকর্মীরা এসএমএস পাঠানোর কাজটি করেন।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং ন্যাশনাল ভ্যাকসিন ডেপ্লয়মেন্ট কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা গণমাধ্যমকে বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিদিন ৬ লাখ ডোজ টিকা দিতে পারে। তবে এই সংখ্যাটি আরো বাড়ানো যায়।

দেড় কোটির বেশি মানুষ টিকার জন্য অপেক্ষায় আছে জানিয়ে তিনি বলেন, টিকার জন্য নিয়মিত নিবন্ধন হয়, তাদের মধ্য থেকে এসএসএম পাঠিয়ে কিছু মানুষকে টিকা দেওয়া হয়। একটা অংশ আছে একবার যাদের এসএমএস পাঠানো হয়েছে কিন্তু তারা তখনো আসেননি। এই দেড় কোটি মানুষের মধ্যে একটা বড় অংশ এমএমএস পাওয়ার অপেক্ষায় আছে।

নিবন্ধন করে দীর্ঘদিন পরও এসএমএস না আসার কারণ জানতে চাইলে ডা. সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এটা নির্ভর করে যে কেন্দ্রের জন্য নিবন্ধন করা হয়েছে সেখানকার চাপের ওপর। কোনো কোনো কেন্দ্রে নিবন্ধনকারীর সংখ্যা বেশি। সেখানে এসএমএস পেতে কিছুটা দেরি হয়। আবার কোনো কোনো কেন্দ্র আছে গতকাল রেজিস্ট্রেশন করলে আজই ডেট পাওয়া যাচ্ছে। ঢাকার বাইরে বেশি জমা নেই। এসব কেন্দ্রে সমস্যা সমাধানে আমরা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়াচ্ছি, বুথের সংখ্যা বাড়াচ্ছি। কীভাবে দ্রুত বেশি মানুষকে টিকা দেওয়া যায় এগুলো নিয়ে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads