• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
চোখ রাঙাচ্ছে চতুর্থ ঢেউ

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

চোখ রাঙাচ্ছে চতুর্থ ঢেউ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৮ জুন ২০২২

প্রতিদিনই আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণ। আর মাত্র দুইদিন সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের ওপরে থাকলেই শুরু হবে করোনার চতুর্থ ঢেউ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় শনাক্তের হার পরপর দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশের বেশি হলে পরবর্তী ঢেউ ছড়িয়েছে বলে ধরা হবে। ইতোমধ্যে করোনা পরিস্থিতির অবনতিতে সব সরকারি চাকরিজীবীর মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে নির্দেশ জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সোমবারের আগের ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার বিবেচনায় রোগী শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। অথচ করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত ১৬ জুন প্রথমবারের মতো পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ৫ শতাংশ ছাড়ায়। এ নিয়ে টানা ১২ দিন শনাক্তের হার ৫ শতাংশের ওপরে থাকল।

দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩ হাজার ৮২০টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে ২ হাজার ১০১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যা চার মাসের বেশি সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেদিন ২ হাজার ১৫০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল। এ নিয়ে দুই দিন ছাড়া টানা ২৫ দিন নতুন করোনা রোগীর সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে বাড়ল।

নতুন শনাক্তের মধ্যে ১ হাজার ৮০৬ জন ঢাকা জেলার। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত দেশে মোট রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৯ লাখ ৬৭ হাজার ২৭৪ জন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে দুজনের মৃত্যুর সংবাদও দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সরকারি হিসাবে ভাইরাসটিতে মোট মৃত্যু দাঁড়ালো ২৯ হাজার ১৪২ জনে। এ সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও ১৭৯ জন রোগী। আক্রান্ত হয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৮৬৭ জন।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের করোনা ভাইরাসের চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলা করতে স্বাস্থ্যসচেতনতা বৃদ্ধি, সবাইকে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করার ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়া করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য যারা এখন পর্যন্ত কোভিড ডোজ নেননি তাদের দ্রুত টিকা নেওয়া এবং দুই ডোজ সম্পন্নকারীদের বোস্টার ডোজ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। প্রথম ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে। একই বছরের মার্চে ডেল্টা ধরনের করোনায় আসে দ্বিতীয় ঢেউ। এ পর্যায়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয় গত জুলাইয়ে। একপর্যায়ে শনাক্তের হার ৩৩ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়।

দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার পর দেশে তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আসে করোনার আরেক ধরন ওমিক্রন। তৃতীয় ঢেউয়ের সময় ২৮ জানুয়ারি করোনা শনাক্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ দাঁড়ায়, যা দেশে করোনা সংক্রমণ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত বেশি হলেও মৃত্যু ছিল তুলনামূলক কম। এই ঢেউ দ্রুত নিয়ন্ত্রণেও আসে। গত ১১ মার্চ তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।

তৃতীয় ঢেউ নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর মাস্ক পরা ছাড়া করোনাসংক্রান্ত সব বিধিনিষেধ তুলে দেয়া হয়। তবে জনগণের মধ্যে মাস্ক পরা নিয়ে অনীহার বিষয়টি আবার দেখা যায়। করোনা সংক্রমণ ক্রমেই বাড়তে থাকলেও এ বিষয়ে সচেতনতার অভাবের বিষয়টি এখনো স্পষ্ট।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads