• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
চার্জার লাইট-ফ্যানের বাজারে আগুন

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

চার্জার লাইট-ফ্যানের বাজারে আগুন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ জুলাই ২০২২

বিদ্যুৎ-সংকট মোকাবিলায় দেশব্যাপী এলাকাভিত্তিক এক থেকে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের পর বাজারে চার্জার লাইট, ফ্যান, আইপিএস ও পাওয়ার ব্যাংক কেনার ধুম পড়েছে। আর চাহিদা বাড়ার এই সুযোগে এসব পণ্যের দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, মানুষ চার্জার লাইট, ফ্যান কিনতে ভিড় করছেন। মার্কেটের অন্য যেকোনো পণ্যের  দোকানের তুলনায় ইলেকট্রনিকস পণ্যের দোকানে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রচণ্ড গরম আর লোডশেডিংয়ের হাত থেকে বাঁচতে চার্জার ফ্যান, লাইট, মোবাইলে চার্জ দেওয়ার জন্য পাওয়ার ব্যাংক কিনছেন তারা। অন্যদিকে যাদের আর্থিক অবস্থা ভালো, তারা কিনছেন আইপিএস। সকালে মার্কেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ইলেকট্রনিকসের এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে।

চাহিদা থাকায় দাম বাড়ানোর বিষয়ে দোকানিদের ভাষ্য, আমদানিকারকরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় তারাও বেশি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। মার্কেটের রাজধানী ইলেকট্রনিকস দোকানের ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর লোডশেডিংয়ের ঘোষণার পরই আমদানিকারকরা প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

আগে পাঁচ কার্টন মাল চাইলে তাই দিত। আর এখন পাঁচ কার্টন মাল চাইলে দেয় এক কার্টন। বেশি দাম দিয়েও মাল পাওয়া যায় না। এ কারণে আমাদেরও মাল বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি জানান, চার্জার জাতীয় প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। প্রতিদিনই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন আমদানিকারকরা।

গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো পণ্যের দাম এক হাজার টাকা বেড়েছে। চায়নিজ একটা চার্জার ফ্যান ছয় মাস আগে ছিল ৩ হাজার টাকা, সেটি এখন ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। বায়তুল মোকাররমের বাইরে ফুটপাতের দোকানদার রাজিব মিয়া বলেন, কয়েক দিন ধরে বেচাবিক্রি বেড়েছে। তবে দাম তেমন বাড়েনি। ইলেকট্রনিকস বড় পণ্যের দাম বাড়লেও ছোট ছোট পণ্যের দাম তেমন বাড়েনি। তার দোকানে ৩০০ টাকা থেকে সাড়ে চার হাজার টাকার পণ্য রয়েছে।

চার্জার ফ্যান কিনতে আসা রবিউল আলম বললেন, যে গরম পড়ছে, তার মধ্যে লোডশেডিং শুরু হয়েছে। ঘরে থাকতে চার্জার ফ্যানের বিকল্প নেই। এ জন্য চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছি। রাজধানীর মানিকনগর এলাকার বাসিন্দা রিয়াজুল হাসান চার্জার লাইট ও ফ্যান কিনেছেন সেখান থেকে। তিনি বলেন, প্রতিদিন লোডশেডিং, তার মধ্যে অনেক গরম। ঘরে বাচ্চাদের খুব কষ্ট হয়। এ জন্য ফ্যান ও লাইট কিনতে এসেছি। কিন্তু দাম একটু বেশি। তারপরও কিনতে হবে।

আকারভেদে চার্জার ফ্যান ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে সে মার্কেটে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের চার্জার লাইট বিভিন্ন রকমের দামে বিক্রি হচ্ছে। শনির আখড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইয়াছিন বললেন, প্রচণ্ড গরমের মধ্যে শুরু হয়েছে লোডশেডিং । ঘরে ছোট বাচ্চা আছে। তাই রহিম আফরোজ থেকে একটি আইপিএস বুকিং দিয়েছি। ৩৯ হাজার ৯০০ টাকার আইপিএসে তিনটি ফ্যান ও তিনটি লাইট দুই ঘণ্টা সার্ভিস দেবে। লোডশেডিংয়ের এ সময়টা এখন এভাবে চালাতে হবে।

বিদ্যুৎ সংকটে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী বলেন, লোডশেডিং হতে পারে দিনে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত। একই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন বন্ধ থাকবে পেট্রোল পাম্প।

গতকাল মঙ্গলবার থেকে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিংয়ের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। অবশ্য এটি সাময়িক সিদ্ধান্ত। বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তরণ হলে আগের অবস্থানে ফিরে আসবে বলেও জানানো হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads