• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
 শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় আপত্তি নেই চীনের

সংগৃহীত ছবি

জাতীয়

প্রাইভেটকারে গার্ডার

শাস্তিমূলক ব্যবস্থায় আপত্তি নেই চীনের

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ১৮ আগস্ট ২০২২

রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারে পড়ার ঘটনায় প্রাথমিক তদন্তে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে। গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো আপত্তি থাকবে না বলে জানিয়েছেন চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং।

আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সঙ্গে স্বাক্ষাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় লি জিমিং গার্ডার দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

ঢাকা বিআরটি প্রকল্পের সওজ অংশের নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল প্রতিষ্ঠানের পক্ষে তদন্তের জন্য চীন থেকে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে বলে জানান তিনি। প্রতিনিধি দলটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত।

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব বলেন, এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় সমগ্র জাতি ব্যথিত। তিনি যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজে নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটিতে আমরা বুয়েটের একজন বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করেছি। আগামী সাতদিনের মধ্যে কমিটিকে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আখতার, বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সফিকুল ইসলাম, প্রকল্পের পরামর্শক টিমের প্রধান মি. টিগ ম্যাকরিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ, গাজীপুর থেকে ঢাকার বিমানবন্দর মোড় পর্যন্ত বিরতিহীন বাস রুট চালু করতে বিআরটি প্রকল্পের এই কাজটি শুরু হয়েছে ২০১২ সালে। শেষ করার কথা ২০১৭ সালে। তবে নানা জটিলতায় বারবার পিছিয়েছে কাজ। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পটি চীনের জিয়াংশু প্রভিন্সিয়াল ট্রান্সপোর্টেশন ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড ও গেজুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করছে।

দুর্ঘটনার পরপরই ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি না করে ক্রেন দিয়ে ৭০ টন ওজনের বক্স গার্ডারটি তোলা হচ্ছিল। সেটি একটি গাড়িতে তোলার সময় প্রাইভেট কারকে চাপা দেয়। এতে নিহত হয় পাঁচজন।

ঠিকাদারি কোম্পানির অবহেলার আরও নমুনার কথা জানিয়েছে র‌্যাব। যিনি ক্রেনটি অপারেট করছিলেন, তিনি এর চালক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত নন। তার সহকারী সেটি অপারেট করছিলেন।

বিআরটি প্রকল্পের থার্ড পার্টি হিসেবে বিল্ড ট্রেড ইঞ্জিনিয়ার লিমিটেড থেকে মাসিক ভাড়ার চুক্তিতে ক্রেনটি আনা হয়। ক্রেনটি ১৯৯৬-৯৭ সাল থেকে চলছে। প্রথমে ক্রেনটির সক্ষমতা ৮০ টন ছিল। পরে ধীরে ধীরে ক্রেনটির সক্ষমতা কমে যায়। সর্বশেষ ক্রেনটি দিয়ে ৪৫ থেকে ৫০ টন ভর শিফট করা সহজ ছিল। কিন্তু এই ক্রেন দিয়ে ৬০ থেকে ৭০ টন ওজনের গার্ডারটি শিফট করা হচ্ছিল। আবার যে চালককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তার ভারী গাড়ি চালানোর অনুমোদন নেই। তার লাইসেন্স হালকা যানের। এত ভারী গার্ডার উঠানোর সময় ক্রেনে কাউন্টার ওয়েট রাখার দরকার ছিল। তাও রাখেনি দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ফলে ক্রেনের বাড়তি ওজন বহন করা সম্ভব হয়নি।

বিআরটি প্রকল্পের অবহেলায় এর আগেও ঝরেছে প্রাণ। কিন্তু ঠিকাদারি কোম্পানি এর পরেও পর্যাপ্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়নি।

গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে একই প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads