• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ১২ গ্রাম প্লাবিত

ছবি: বাংলাদেশের খবর

প্রাকৃতিক দুর্যোগ

মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ১২ গ্রাম প্লাবিত

  • ফেনী প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ জুন ২০২২

দু-দিনের ভারী বর্ষণ ও ভারতীয় পাহাড়ী ঢলের পানির চাপে ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নে মুহুরী নদীর বাঁধের ৪ স্থানে ভেঙ্গে ফুলগাজীর ১২ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় তিন শতাধিক পরিবারের  সহস্রাধিক মানুষ। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ডুবে গেছে সবজি ফসলি জমি সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। ফুলগাজী বাজারের নির্মা অঞ্চল জগন্নাথ রোডসহ প্রধান সড়কের প্রায় শতাধিক দোকানপাটে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। এতে লাখ লাখ টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। 

সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার ভোর ৭ টার দিকে সদর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর এলাকার সেকান্তর মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন স্থানে বাঁধে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়। সকাল ১১ টার দিকে একই ইউনিয়নের দেড়পাড়ায় বেড়িবাঁধের একটি অংশে ভাঙ্গনের দেখা দেয় অন্যদিকে দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া এলাকার রতন মেম্বারের বাড়ি সংলগ্ন স্থান ও পরশুরামের পশ্চিম অলকা স্থানের বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।   এসব ভাঙ্গনের ফলে উত্তর দৌলতপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর ও বৈরাগপুর, দেড়পাড়া, নিলক্ষী, উত্তর নিলখী, গাবতলা, মনতলা, গোসাইপুর, নোয়াপুর,  দরবারপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বরইয়া এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

ফুলগাজী বাজারের ঝর্ণা স্টোরের মালিক জহরলাল জানান, ভোরের দিকে ঢলে তার দোকানে পানি ঢুকে দোকানের ভিতর রাখার চাউল, চিনি, লবণ সব নষ্ট হয়ে গেছে এতে প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়। 

বাসায় পানি ঢুকায় বিলকিস আরা নামে এক গৃহিণী তার দুই সন্তান নিয়ে বাসা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। তিনি জানান পানি নেমে গেলে বাসায় ফিরবেন।

জগন্নাথ রোডের এলাকায় জাহাঙ্গীর আলমের ঘরে পানি উঠে যাওয়ায় কোমর সমান দিয়ে বাজারে প্রবেশ করতে করতে তিনি জানান, ঘরে পানি, রান্নাবান্না হয়নি, তাই শুকনো খাবার আনতে দোকানে যাচ্ছেন। 

ফুলগাজী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আশরাফুন নাহার ও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো: সেলিম সদরের দৌলতপুর ও দেড়পাড়া ভাঙ্গন স্থান পরিদর্শন করেছেন। 

ফুলগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুন নাহার জানান, আপাদত ৩ শত প্যাকেট ত্রাণ বন্যা দুর্গত মানুষদের জন্য বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদী রক্ষা বাঁধের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১২২ কিলোমিটার এলাকায় পানির চাপ এখনো বাড়ছে। পানির প্রবাহ সকাল বেলা ১০৩ সেন্টিমিটার রেকর্ডের পর দুপুরেই সেটি ১২৪  সেন্টিমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিকেলে পানির চাপ কিছুটা কমেছে। এর আগে দপ্তর হতে এ বাঁধের ২১টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান চিহ্নিত করে মেরামতের জন্য বরাদ্দ চাওয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের  নির্বাহী পরিচালক জহির উদ্দিন বলেন, প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ী  ঢলে ফুলগাজী ও পরশুরামের ৪টি স্থানে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। বিষয়টি উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। পানি কমলে বাঁধের ভাঙ্গা স্থানের মেরামত কাজ শুরু করা হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads