• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
যেতে হবে আরো বহুদূর, পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয় শ্বাপদসংকুল

ফাইল ছবি

সংবাদ-ভাষ্য

যেতে হবে আরো বহুদূর, পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয় শ্বাপদসংকুল

  • আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া
  • প্রকাশিত ২৩ জুন ২০২১

আজ ২৩ জুন। ১৯৪৯ সালের এই দিনে গঠিত হয়েছিল উপমহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় দল আওয়ামী লীগ। আমাদের জাতির ইতিহাসে অন্তত দুটি কারণে আওয়ামী লীগের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এক. এই দলের প্রাণপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি স্বাধীন দেশই বিশ্বকে উপহার দেননি, তিনি একটি জাতিরও জন্মদাতা। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে ‘বাঙালি জাতি’ বলে কোনো অস্তিত্ব পৃথিবীতে ছিল না। দুই. বাঙালি জাতির এক চরম ক্রান্তিলগ্নে আওয়ামী লীগ তার সুবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করেছিল। আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দীর্ঘ ৪০ বছরের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেননি, তিনি আজ জাতির কান্ডারি হয়েছেন। সমসাময়িক বিশ্ব রাজনীতিক বিশ্লেষণে তিনি আজ একজন অন্যতম বরেণ্য বিশ্বনেত্রীও বটে।

আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ, শওকত আলী, ইয়ার মোহাম্মদ খান, শামসুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রমুখ আদর্শবান ত্যাগী ও মানুষের কল্যাণে নিবেদিত কিছু নেতা।

যে মুসলিম লীগ পাকিস্তান সৃষ্টির দাবিদার, সেই ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে বিকল্প রাজনৈতিক দল হিসেবে এক বছরের মধ্যেই সারা পাকিস্তানের অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে এই আওয়ামী লীগ (প্রতিষ্ঠাকালে এই দলের নাম ছিল পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ, যা রাজনৈতিক ঐতিহাসিক গতিধারায় শুধু আওয়ামী লীগ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে)। ’৫২-র ভাষা আন্দোলন-পরবর্তীতে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গঠন এবং ’৫৪-র প্রথম পাকিস্তানের নির্বাচনে মুসলিম লীগের কবর রচনা করে (তিনশ আসনের মধ্যে মাত্র ১০টি আসন পেয়েছিল মুসলিম লীগ) যুক্তফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগ নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আসন অলংকৃত করেন। আর যুক্তফ্রন্টের অন্যতম নেতা শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হক পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োজিত হন। কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক জান্তা সমর্থিত চক্রান্তকারী রাজনীতিকদের অপকৌশলের শিকার হয়ে যুক্তফ্রন্টকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত হতে হয়। দেশে শুরু হয় সামরিক স্বৈরশাসন। এ অবস্থায় একমাত্র আওয়ামী লীগকেই করতে হয় সামরিক স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৩ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তিনিই ছিলেন প্রধান প্রাণশক্তি। সন্দেহ নেই মওলানা ভাসানী একজন নির্লোভ, জনদরদী নেতা ছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়লে দেখা যাবে রাজনীতিতে মওলানা ভাসানী একজন অস্থির চিত্তের নেতা ছিলেন এবং একপর্যায়ে তিনি নিজেই পার্টিকে দ্বিখণ্ডিত করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠন করেন। কিন্তু সামরিক স্বৈরশাসকচক্র ও মুসলিগের লীগের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন একমাত্র বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। ১৯৬৬ সালে যখন তিনি পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন, সত্যিকার অর্থে পূর্ব বাংলার মানুষের প্রতি পশ্চিমাদের সীমাহীন স্বৈরশাসন, বৈষম্য, নির্যাতন, নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলাসহ বহু মামলায় দীর্ঘ বারোটি বছর কারাগারে কাটাতে হয়েছিল। অন্তত দুবার তাকে ফাঁসিকাষ্ঠে ঝোলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের স্বার্থের প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি।

অনেক আন্দোলন সংগ্রামের পর ’৬৯-এর গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী আইয়ুব শাহীর পতন ঘটিয়ে আরেক সামরিক স্বৈরাচার ইয়াহিয়া খানকে বাধ্য করেছিলেন ’৭০-এর সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা দেওয়ার। ১০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব এক অবিস্মরণীয় ও অপ্রত্যাশিত বিজয় লাভ করেন। জাতীয় পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬২টি আসন লাভ করে বঙ্গবন্ধু সারা পাকিস্তানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন। আর পূর্ববঙ্গে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮টি আসন লাভ করে ‘বিশ্বজয়ে’র মতো এতদ অঞ্চলে রাজনৈতিক নির্বাচনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

নির্বাচনের পর ইয়াহিয়া খান বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সম্বোধন করেন। এ সময় পশ্চিম পাকিস্তান বিশেষ করে লারকানার প্লেবয় রাজনীতিক জুলফিকার আলী ভুট্টোর কু-পরামর্শ ও সামরিক স্বৈরশাসকদের ক্ষমতালিপ্সার কারণে যখন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে একের এক ষড়যন্ত্র করছিল, তখন বঙ্গবন্ধু উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি জনগণের অধিকার চাই।’ এবার শুরু হলো স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার সংগ্রাম। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, জয় বাংলা।’ ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী পূর্ব বাংলার ঘুমন্ত মানুষের বিরুদ্ধে ট্যাঙ্ক গোলা কামান নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল; বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পশ্চিম পাকিস্তানের লায়ালপুর জেলে বন্দি করে রাখা হলো। শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। বঙ্গবন্ধু ২ হাজার মাইল দূরে অবস্থান করে জেলের অভ্যন্তর থেকে মুক্তিযুদ্ধের মহান সিপাহসালার হিসেবে দায়িত্ব পালন করলেন। আর ৯ মাসের মধ্যে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি দখলদার বাহিনী ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মমর্পণ করতে বাধ্য হলো। এজন্যই ঐতিহাসিকরা বলেছিলেন, ‘মুক্ত মুজিবের চেয়ে বন্দি মুজিব ছিলেন লক্ষগুণ শক্তিশালী।’ ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে এসে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেছিলেন, ‘তিন বছর আমি তোমাদের কিছুই দেবার পারব না।’ জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু সাড়ে তিন বছরে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে উন্নতি ও প্রগতির দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ ’৭১-এর পরাজিত শত্রু ও ক্ষমতালোভী অ্যাডভেঞ্চারিস্টদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় রাজনীতি মেরুকরণের মাধ্যমে বাকশাল গঠন করে দ্বিতীয় বিপ্লবের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এমনি সময় আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদ ও এশীয় চক্রান্তকারীদের সহায়তায় ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। শুরু হয় এদেশে ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ইতিহাস বিকৃতির রাজনীতি। আত্মপ্রতারণার গিলাব দিয়ে গোটা জাতির আপাদমস্তক ঢেকে দেওয়া হয়। ছলচাতুরীর কফিন দিয়ে দাফন করা হয় আমাদের যা কিছু গর্বের, যা কিছু ঐতিহ্যের, যা কিছু ইতিহাসের। এমনকি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকেও বিকৃত ও কলঙ্কিত করা হয়। দীর্ঘ ১৬ বছর চলে জাতির অগ্রগতির চাকাকে পশ্চাতে ঠেলে দেওয়ার পালা। জাতির এই চরম ক্রান্তিকালে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে কান্ডারি হিসেবে অভিষিক্ত করে। শেখ হাসিনা বর্তমানে জাতির নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি বর্তমানে চার চারবার নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তি সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, কিন্তু জাতিকে মুক্তির লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য তিনি যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তিনি বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাননি। এই দায়িত্বটা তিনি তার প্রিয় কন্যা ‘হাসু’র জন্য রেখে গেছেন। শেখ হাসিনার আয়তমুখে সমুদ্রের স্বপ্নের মতো ভেসে ওঠা চোখ দুটির দিকে তাকালেই আমাদের চোখের পর্দায় ভেসে আসে জাতির পিতার মুখচ্ছবি। শেখ হাসিনার কোমল হাতের নম্র পাতার দিকে তাকালে আমাদের চোখের সামনে ভেসে আসে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ হাতের শাহাদত আঙুলের প্রতিচ্ছবি; হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো বঙ্গবন্ধু সেই শাহাদত আঙুলের ইশারায় লাখ লাখ মানুষ ওঠবস করত কখনো রেসকোর্স ময়দানে, কখনো পল্টনে, কখনো বাহাদুরশাহ পার্কে আবার কখনো আরমানিটোলা মাঠে।

দেশ শাসনের ভার গ্রহণ করে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সোনার বাংলা বিনির্মাণে আত্মনিয়োগ করেন। তার ‘রূপকল্প-২১’ এবং ‘উন্নত বাংলাদেশ-৪১’ ঘোষণা দেন। তারই পথ ধরে একদা ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’খ্যাত বাংলাদেশ আজ মধ্যমআয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। আমরা এখন বিদেশে চাল রপ্তানি করছি। অন্য দেশকে আমাদের ফরেন কারেন্সি রিজার্ভ থেকে সাহায্য করছি।

আজকের এই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের একটি কথা মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লীগের পথচলা কখনো কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ছয় দশকের বেশি সময় প্রায় সেই আওয়ামী লীগকে শ্বাপদসংকুল, তরঙ্গবিক্ষুব্ধ ও বন্ধুর পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। এখনো আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র চলছে। অন্তত ১৯ বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে ২১ আগস্ট ২০০৪ শেখ হাসিনাসহ সকল কেন্দ্রীয় নেতাকে হত্যার জন্য যে জঘন্য গ্রেনেড হামলা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় চালানো হয়েছিল, তা ছিল সমসাময়িক বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্যতম রাজনৈতিক হত্যাচেষ্টা। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ঘাতকচক্র আমাদের জাতীয় জীবনের এক সূর্য সম্ভাবনাকে হত্যা করেছিল আবার খোদা নাখাজ সেই চক্রটির হাতে শেখ হাসিনাকেও পিতার ভাগ্যবরণ করতে হতে পারে। এই কথাটি মনে রেখেই আজ দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিকদের এবং একই সঙ্গে জাতিকে মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা স্বেচ্ছায় নির্বাসন থেকে ফিরে এসেছিলেন বলেই আওয়ামী লীগ তথা দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ করেছিলেন বলেই ২১ বছর পর হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী ও প্রগতিশীল দেশপ্রেমিক শক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। আর যদি শেখ হাসিনা না আসতেন জাতিকে হয়তো আরো বহু ২১ বছর অপেক্ষা করতে হতো। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুতে জাতি যেভাবে নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছিল, সেই শূন্যতা শেখ হাসিনা পূর্ণ করেছেন পরিপূর্ণভাবে। তবে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পর জাতি একই সঙ্গে অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছিল। সেই পদ এখনো খালি। এই পদটি পূর্ণ করতে হবে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেই। একই সঙ্গে শেখ হাসিনাকেই জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে তার অবর্তমানে জাতিকে ভবিষ্যতে কে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads