• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আরামের তারাবি নিয়ে দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতা কাম্য নয়

নামাজ আদায়রত মুসল্লিরা

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

আরামের তারাবি নিয়ে দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতা কাম্য নয়

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ২৬ মে ২০১৮

পবিত্র রমজান মাসের বিশেষ আমল তারাবির নামাজ। তারাবি শব্দটি আরবি। রাহাতুন মূল ধাতু থেকে শব্দটির উৎপত্তি। এর শাব্দিক অর্থ হলো আরাম করা বা বিশ্রাম গ্রহণ করা। রমজান মাসে এশার নামাজের পর বিতরের নামাজের আগে দুই রাকাত করে যে নামাজ আদায় করা হয় তাকেই পরিভাষায় সালাতুত তারাবি বলা হয়। এই নামাজ আদায়কালীন প্রতি দুই রাকাত বা প্রতি চার রাকাতের পর বিশ্রাম করা হয় বা সামান্য বিরতি গ্রহণ করা হয় বিধায় একে আরামের নামাজ বলা হয়।

সালাতুত তারাবি শুধু রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট। বছরের অন্য কোনো সময় এ নামাজ পড়ার বিধান নেই। রসুল (সা.) নিজে তারাবির নামাজ আদায় করেছেন এবং সাহাবিদের পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। রসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে পুণ্যলাভের আশায় রমজানের রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন, অতীতে কৃত তার পাপগুলো ক্ষমা করা হবে। (বোখারি ও মুসলিম)

গোটা মুসলিম বিশ্বে তারাবির নামাজে পবিত্র কোরআন খতমের প্রচলন রয়েছে। রোজার আগের দিন থেকে শুরু করে ২৬ রমজান রাত পর্যন্ত এক খতম কোরআন পাঠের আয়োজনই বেশি লক্ষ করা যায়। এ ছাড়া কোনো কোনো মসজিদে ৫ দিনে, ১০ দিনে এবং ১৫ দিনে তারাবির নামাজে পবিত্র কোরআন খতমের বিভিন্ন পদ্ধতিও প্রচলিত রয়েছে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের আগ্রহদীপ্ত অংশগ্রহণে মুখর থাকে প্রতিটি মহল্লার মসজিদ প্রাঙ্গণ।  

তারাবির নামাজ সুন্নত- এ ব্যাপারে ফকিহগণ একমত। কেউ কেউ বলেছেন, সুন্নতে মুয়াক্কাদা। ইমামদের মধ্যে তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। অধিকাংশ মুহাদ্দিস ও প্রখ্যাত ফকিহদের মতে, তারাবির রাকাত সংখ্যা আট। ইমাম আবু হানিফা (রহ.), ইমাম শাফেয়ী (রহ.) ও ইমাম আহমদ (রহ.) বলেছেন, তারাবির নামাজের রাকাত সংখ্যা বিশ। আর ইমাম মালেক (রহ.) বলেছেন, তারাবির নামাজ ছত্রিশ রাকাত।

রসুল (সা.) বেশিরভাগ সময় রাতের শেষাংশে তারাবি আদায় করতেন এবং প্রথমাংশে বিশ্রাম নিতেন। কখনো তিনি ৮ রাকাত, কখনো ১৬ রাকাত, কখনো আবার ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় করেছেন। রসুলের (সা.) ইন্তেকালের পর প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) ও দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমরের (রা.) খিলাফতকালেও ২০ রাকাত তারাবির নামাজ পড়া হতো। এরপর হজরত ওমরের (রা.) সময় মসজিদে নববিতে খণ্ড খণ্ড জামাতে ও একাকী তারাবির নামাজ আদায়ের চিত্র দেখে সবাই মিলে (সাহাবিদের ইজমা দ্বারা) রমজান মাসে জামাতের সঙ্গে ২০ রাকাত তারাবির নামাজ আদায় শুরু করেন।

গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বর্তমানে দ্রুত তারাবির নামাজ আদায় করা এবং ৮, ১২, ১৬ কিংবা ২০ রাকাত সংখ্যা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছে, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আরামের তারাবি নিয়ে দ্বন্দ্ব-প্রতিযোগিতা একপ্রকার হারাম।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads