• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
শুধু না খেয়ে থাকার নামই রোজা নয়

পবিত্র রমজান মাসে বান্দাকে ভুল শোধরানোর সুযোগ দান করেছেন আল্লাহ

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

শুধু না খেয়ে থাকার নামই রোজা নয়

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ২৮ মে ২০১৮

মহান আল্লাহ চান না তার কোনো বান্দা জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হোক। বান্দাকে ভুল শোধরানোর অপার সুযোগ হিসেবে পবিত্র রমজান মাস দান করেছেন আল্লাহ। হজরত জিবরাইল (আ.) জুমার দিন দোয়া করেছিলেন, ‘ধ্বংস হোক ওইসব মুসলমান যারা রমজান মাস পেল অথচ তার গুনাহ মাফ করাতে সক্ষম হলো না।’ রাসুল (সা.) জিবরাইলের (আ.) দোয়ায় আমিন বলেছিলেন। সুতরাং প্রত্যেক মুসলমানের উচিত পবিত্র এ মাসটির যথার্থ ব্যবহারে মনোযোগী হওয়া। রমজানের রোজা পালনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ একটি জ্ঞাতব্য বিষয় হলো- সুবেহ সাদিক থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শুধু না খেয়ে থাকার নামই রোজা নয়। মানুষের চোখ, কান, হাত, পা, জিহ্বা এমনকি অন্তর- কোনোটিই গুনাহমুক্ত থাকতে পারে না। মানুষের প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গের রোজা রয়েছে। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের রোজাই প্রকৃত রোজা। পানাহারসহ ইন্দ্রিয় কামনা থেকে মুক্ত থাকা এবং অন্তরকে যাবতীয় কুচিন্তা ও বৈষয়িক লোভ-মোহ থেকে মুক্ত রাখাই প্রকৃত রোজা বা সিয়াম সাধনার উদ্দেশ্য। আর এমন রোজাই ঢাল হয়ে শয়তানকে প্রতিহত করতে সক্ষম। সুবেহ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও যৌন সম্ভোগ থেকে বিরত থাকাসহ আরো যেসব অঙ্গকে রোজা পালনে অভ্যস্ত রাখা প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের আবশ্যক কর্তব্য তা হলো-

অন্তরের রোজা- অন্তরের রোজা দেহের রোজার ভিত্তি। অন্তরকে সব ধরনের লোভ-লালসা ও হিংসা-বিদ্বেষ এবং অহঙ্কার-অহমিকা ও কুচিন্তা-কুকামনা থেকে বিরত রাখা আবশ্যক।

জিহ্বার রোজা- জিহ্বা তথা মুখকে সব ধরনের বেহুদা-মন্দ ও অশ্লীল-মিথ্যা কথা থেকে বিরত রাখাই হচ্ছে জিহ্বার রোজা। প্রত্যেক রোজাদারের উচিত কম কথা বলে বেশি বেশি কোরআন তেলাওয়াত করাসহ জিকির-তাসবিহ পাঠে মগ্ন থাকা।

চোখের রোজা- চোখ মনের আয়না। যেকোনো গুনাহের কাজ করার আগে চোখ প্রথমে তা দেখে এবং পরে মনকে প্রলুব্ধ করে। তাই চোখের হেফাজত করা মানেই মনের হেফাজত করা। অশ্লীল, হারাম ও নিষিদ্ধ কাজ থেকে চোখের দৃষ্টিকে ফিরিয়ে রাখা এবং নেক ও ভালো কাজের প্রতি চোখ খুলে রাখা ও দেখাই হচ্ছে চোখের রোজা।

কানের রোজা- ভালো, হেদায়েতের ও কল্যাণের কথা শোনা এবং মন্দ কথা, অশ্লীল গান-বাজনা যথাসম্ভব কানে প্রবেশ না করানোর চেষ্টা করাই হচ্ছে কানের রোজা।

পায়ের রোজা- পায়ের রোজা হচ্ছে বিপথে পা না দেওয়া। খারাপ উদ্দেশ্যে কোনো দিকে না যাওয়া।

হাতের রোজা- হাত দিয়ে কোনো পাপের কাজ বা মানুষের ক্ষতি হয়, এমন কাজ না করাই হাতের রোজা। আল্লাহ হাত দিয়েছেন সৎ কর্ম করার জন্য, মোনাজাত করার জন্য।

দেহের প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই আল্লাহর পবিত্র আমানত, যার যথাযথ ব্যবহার করা প্রতিটি রোজাদারের ফরজ দায়িত্ব। পানাহার থেকে বিরত থাকার পাশাপাশি সব অঙ্গ-প্রতঙ্গের শুদ্ধ ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে একজন রোজাদারের রোজা পালন বিশুদ্ধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। অন্যথায় শুধু না খেয়ে থাকার দ্বারা রমজানের রোজা পালনের উদ্দেশ্য যথার্থভাবে পালিত হয় না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads