• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
থিংক অব রমজান

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

থিংক অব রমজান

  • প্রকাশিত ২৭ এপ্রিল ২০২১

পবিত্র কোরআনুল কারীমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করা হয়েছে। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছিল। আশা করা যায়, তোমরা আল্লাহভীতি বা পরহেজগারী অর্জন করতে পারবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত-১৮৩) তাকওয়া অর্জন তথা পরহেজগার হওয়ার জন্য আল্লাহ রোজা বান্দার উপর ফরজ করেছেন। আর এই ফরজ রোজা আদায়ের জন্য আল্লাহতায়ালা রমজান মাস নির্ধারণ করেছেন। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘রমজান সেই মাস; যে মাসে পবিত্র কুরআন নাজিল করা হয়েছে। যে কুরআন মানব জাতির জন্য পথ প্রদর্শক। আর তাতে রয়েছে সুস্পষ্ট হেদায়েত। যা হক ও বাতিলের পার্থকারী। সুতরাং তোমাদের যে কেউ এ মাস পবে তাকে অবশ্যই রোজা রাখতে হবে। আর যে (এ মাসে) অসুস্থ কিংবা মুসাফির হবে সে অন্য সময় এ সংখ্যা (রমজানের রোজা) পূর্ণ করে নেবে। তোমাদের জন্য যা সহজ আল্লাহ তাই করেন। আর যা তোমাদের জন্য কঠিন তা তিনি করার ইচ্ছা করেন না। যেন তোমরা নির্ধারিত (রমজান মাসের) সময়টি সম্পূর্ণ করতে পার এবং আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর, কেননা আল্লাহ তোমাদের সঠিক পথ দেখিয়েছেন। যাতে তোমরা তার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইমানসহ সাওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীতের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ইমানসহ সাওয়াবের আশায় কিয়ামে রমজান অর্থাৎ তারাবির নামাজ আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী গোনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ইমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় শবে-কদরে রাত জেগে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে তারও পূর্ববর্তী গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। (বুখারি শরিফ ১/২৫৫, মুসলিম শরিফ ১/২৫৯)

মাহে রমজান রোজাদাররা সিয়াম সাধনা করে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের প্রয়াস চালিয়ে থাকেন। আল্লাহর নৈকট্য রমজান মাসে সহজভাবে পাওয়া যায়। এজন্য প্রয়োজন মহান আল্লাহতায়ালার ইবাদত। প্রত্যহ যে সব আমল করলে আমাদের জন্য রমজানের পরিপূর্ণ হক আদায় হবে। সেগুলো নিম্মরূপ।

ফজরের পূর্বে সাহরির সময় ঘুম থেকে উঠে দোওয়া পড়া ‘আলহামদুলিল্লাহিল্লাজি আহিয়ানা বায়াদামা আমাতানা ওয়ালাহি নুসুর’। অজু বা পবিত্রতা অর্জন করা। তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা। বরকতের জন্য সাহরি খাওয়া। ফজরের ওয়াক্ত পর্যন্ত তাসবিহ বা দোয়া করা।

ফজরের ওয়াক্ত : আজান দেওয়ার সময় আজানের জাওয়াব ও আজান শেষে দোয়া পড়া। আজান শেষে হয়ে যাওয়ার পর ফজরের সুন্নত আদায় করা। একামত পর্যন্ত দোয়া করা। জামাতের সাথে ফজরের নামাজ আদায় করা। সূর্যস্ত পর্যন্ত মসজিদে বসে কোরআন তেলয়াত করা। ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করার পর সুরা হাশরের শেষের তিন আয়াত তেলয়াত করা। জীবিকা অর্জন করার জন্য কর্মস্থলে যাওয়া। দিনভর মহান আল্লাহর স্মরণে অতিবাহিত করা।

জোহরের ওয়াক্ত : গোসল বা পবিত্রতা অর্জন করা। জোহরের আজান হলে সুন্নাত নামাজ পড়া। জামাতের সাথে জোহরের নামাজ আদায় করা। বিশ্রাম নেওয়া।

আছরের ওয়াক্ত : আজানের পর আছরের চার রাকাত সুন্নাত আদায় করা। জামাতের সাথে নামজ  আদায় করা। মসজিদে কিছুক্ষণ অবস্থান করা। ইফতারীর পূর্বে অজু করা। ইফতারি সামনে নিয়ে দোয়া করা।

মাগরীরের ওয়াক্ত : আজান দেওয়ার সাথে সাথে খেজুর বা পানি দিয়ে ইফতার করা। সামার্থ্য অনুযায়ী অন্যকে ইফতারি করানো। জামাতের সাথে নামাজ আদায় করা। সুন্নাত ও  সময় পেলে আওয়াবীন নামাজ পড়া। সুরা হাশরের শেষ তিন আয়াত তেলওয়াত করা। পরিবারের সকলের সাথে ইসলাম বিষয়ে কথা বলা। তারাবীর প্রস্তুতি নেওয়া।

এশার ওয়াক্ত : ওযু করে সুন্নত নামাজ আদায় করা। প্রথম ওয়াক্তে এশার নামাজ জামাতের সাথে পড়া। ইমামের সাথে তারাবি নামাজ সম্পূর্ণ আদায় করা। বিতরের নামাজ ইমামের  পেছনে জামাতের সাথে পড়া। নামাজ শেষে রাতের খাবার খাওয়া। ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে সাহরির জন্য মোবাইল বা ঘরিতে এলারম দিয়ে রাখা। (তথ্যসূত্র: বুখারী, মুসলিম, তিরমিযী ও আবু দাউদ শরিফ)

লেখক :মো. আবু তালহা তারীফ

আলেম, প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads