• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
প্রতিহিংসা নিজ ভাইকেও হত্যা করতে শেখায়

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

প্রতিহিংসা নিজ ভাইকেও হত্যা করতে শেখায়

  • প্রকাশিত ০৬ অক্টোবর ২০২১

হিংসা মানুষকে ধ্বংস করে, ঈর্ষা ও হিংসা প্রায় একই রকম আবেগ, তবে হিংসাকে বলা হয় ঈর্ষার চরম বহিঃপ্রকাশ। ঈর্ষাকাতরতা হিংসার পর্যায়ে চলে গেলে আক্রোশবশত মানুষ হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটিয়ে ফেলতে পারে। হিংসুক ব্যক্তি অন্যের ভালো কিছু সহ্য করতে পারে না, কাউকে কোনো উন্নতি বা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত দেখলে অন্তরে জ্বালা অনুভব করে। এজন্য আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় হাবীবকে হিংসা থেকে পানা চাইতে বলেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে এবং হিংসুকের অনিষ্ট থেকে যখন সে হিংসা করে। (সূরা ফালাক : ৫)

বর্তমান প্রেক্ষাপট তেমনি হয়ে দাঁড়িয়েছে,  রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বা সম্মানের প্রতিহিংসা যেন আজ সমাজে মহামারি আকার ধারণ করেছে।  আমরা সকলেই হজরত ইউসুফ (আ.)-এর ঘটনা সম্পর্কে অবগত আছি, এই ঘটনা অন্বেষণকারীদের জন্য অনেক নিদর্শন রয়েছে, পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ইউসুফ ও তার ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্য অবশ্যই অনেক নিদর্শন রয়েছে। (সুরা ইউসুফ-৭)

হজরত ইউসুফ (আ.)-কে তার বাবা অনেক মহব্বত করতেন। এতে তার সৎভাইদের হিংসা জেগে ওঠে। হিংসা তাদেরকে নিজ ভাই হজরত ইউসুফ (আ.)-কে হত্যা করার সংকল্প পর্যন্ত নিয়ে যায়, তারা ভেবে ছিল যদি হযরত ইউসুফ (আ.)-কে তারা হত্যা করতে পারে,  তাহলে তারা নিজ বাবার কাছে সৎ ব্যক্তি হিসেবে রূপান্তরিত হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তোমরা ইউসুফকে হত্যা কর অথবা তাকে কোনো জমিনে ফেলে আস, তাহলে তোমাদের পিতার আনুকূল্য কেবল তোমাদের জন্য থাকবে এবং তোমরা সৎ লোক হয়ে যাবে।’ (সূরা ইউসুফ- ৯)

বর্তমানে অনেক মানুষ রাজনৈতিক ও সম্মানের প্রতিহিংসার কারণে কাউকে হত্যা বা গুম করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তৎকালীন সময়ে হজরত ইউসুফ (আ.)-কে হত্যা করতে না পেরে তাদের একজন তাকে কূপে নিক্ষেপ করার পরামর্শ দেন।  পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, তাদের মধ্য থেকে একজন বলল, ‘তোমরা ইউসুফকে হত্যা করো না, আর যদি কিছু করই, তাহলে তাকে কোনো কূপের গভীরে ফেলে দাও, যাত্রীদলের কেউ তাকে তুলে নিয়ে যাবে।’ (সূরা ইউসুফ- ১০) এ ধরনের গুম করে খালি হয় কত মায়ের কোল। শুনা যায় কত মানুষের আহাজারির কথা। তখন হজরত ইউসুফ (আ.)-এর আহাজারি দেখে তারা একটি নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,  আর তারা তার জামায় মিথ্যা রক্ত লাগিয়ে নিয়ে এসেছিল। সে বলল, ‘বরং তোমাদের নফস তোমাদের জন্য একটি গল্প সাজিয়েছে। সুতরাং (আমার করণীয় হচ্ছে) সুন্দর ধৈর্য। আর তোমরা যা বর্ণনা করছ সে বিষয়ে আল্লাহই সাহায্যস্থল’। (সূরা ইউসুফ-১৮) এটি তাদের বাবাকে বুঝ দেওয়ার জন্য নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসা। এটি যে নাটক তাদের বাবা অনুভব করতে সক্ষম হয়েছে।

আমাদের সমাজে যখন জালেমদের হাতে হত্যা ও গুমের ঘটনা ঘটে তখন তারা এ ধরনের নাটক সাজিয়ে নিয়ে আসে। তা বর্তমান মানুষ অনুভব করতে সক্ষম হয়, আর হজরত ইউসুফ (আ.)-এর ভাইয়েরা তাদের এই হিংসাত্মক কাজের জন্য সারাটি জীবন লজ্জিত হতে হয়েছে, বর্তমানে হিংসাত্মকভাবে যারা মানুষকে হত্যা ও ঘুম খুন করে যাচ্ছে। ইনশাআল্লাহ তারা ও দুনিয়া ও আখিরাতে প্রতি ক্বদমে ক্বদমে লজ্জিত হবে।

আ. স. ম. আল আমীন

লেখক : শিক্ষার্থী, মা’হাদুল ইকতিসাদ ওয়াল ফিকহীল ইসলামী ঢাকা

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads