• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

৫ বছর পর মঞ্চে ফিরছেন চঞ্চল

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০১ মার্চ ২০২০

চঞ্চল চৌধুরী। উঠে এসেছেন মঞ্চ থেকেই। টিভিতে পা রাখার পরই পেয়েছেন তুমুল জনপ্রিয়তা। সমান সাফল্য পেয়েছেন সিনেমাতেও। টিভি-সিনেমার ব্যস্ততায় আর মঞ্চে তাকে দেখা যায়নি বহু বছর। তবে চঞ্চল সব সময়ই বলেছেন, সুযোগ হলেই ফিরবেন মঞ্চে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর সেই ‘সময়’টুকু পেতে যাচ্ছেন তিনি। মঞ্চে ফিরছেন এ মাসেই।

নাট্যজন মামুনুর রশীদের জন্মদিন উপলক্ষে মঞ্চায়িত হবে ঢাকার মঞ্চের পরিচিত নাটক ‘চে’র সাইকেল’। তাতেই অভিনয় করবেন চঞ্চল চৌধুরী। আর এর মধ্য দিয়ে পাঁচ বছর পর মঞ্চে ফিরছেন তিনি। চে’র সাইকেল প্রযোজনা করছে বাংলা থিয়েটার প্রোডাকশন। ২ মার্চ জাতীয় নাট্যশালায় সন্ধ্যা সাতটায় নাটকটির মঞ্চায়ন হবে।

চঞ্চল বলেন, ‘আমরা মামুন ভাইয়ের বাসায় দুদিন রিহার্সাল করেছি। অনেক দিন পর মঞ্চে ফিরছি। কিছুটা উত্তেজনা কাজ করছে।’

মামুনুর রশীদের ৭২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে নাট্যোৎসব আয়োজন করেছে আরণ্যক নাট্যদল। এতে তার লেখা পাঁচটি নাটক মঞ্চায়িত হবে। তারই অংশ হিসেবে মঞ্চে ফেরার সুযোগ মিলছে চঞ্চলের।

সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। শুধু একজন ভালো অভিনেতা হিসেবে নাটক-সিনেমায় অভিনয় করেই নিজের দায়িত্ব শেষ করেননি, একজন গুণী অভিনেতা হিসেবে চঞ্চল চৌধুরী দেশের মানুষের মধ্যে নানান ধরনের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করেছেন নিরলসভাবে, বিনা স্বার্থে। সেই ধারাবাহিকতায় আবারো চঞ্চল চৌধুরী সচেতনতামূলক কাজে অংশ নিয়েছেন। আজ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত ৯ থেকে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুকে হাম ও রুবেলার টিকা দিতে হবে। এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য ইউনিসেফের এই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী।

শিশুদের জন্য জনসচেতনতা বাড়াতে এই কাজে অংশ নেওয়া প্রসঙ্গে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমি আসলে সব সময়ই জনসচেতনতামূলক কাজ করার চেষ্টা করি। কিছুদিন আগেও নদী বাঁচলে বাঁচবে দেশ সচেতনতামূলক একটি কাজ করেছি। এটি নির্মাণ করেছিলেন আমাদের শ্রদ্ধেয় আফজাল হোসেন ভাই। এবার শিশুদের সচেতনতার জন্য কাজ করেছি। আমিও একজন সন্তানের বাবা। আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ সুস্থতার জন্য যেমন আমি সচেতন, আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্যও আমি সচেতন। তাই শিশুদের অভিভাবকদের সচেতন করতেই আমি এই সচেতনতামূলক কাজে অংশগ্রহণ করেছি। আর পিপলুর সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। কাজটি করে আমার খুবই ভালো লেগেছে।’

 তুলনামূলক আগের চেয়ে অনেক কম নাটকে দেখা যায় এ তারকাকে। এর করণ হিসেবে চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘আমি তো সব সময় এভাবেই কাজ করি। ভালো স্ক্রিপ্ট না পেলে সব কাজ করা হয় না। সবাই জানে, আমি বেছে বেছে কাজ করি, অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাজ করি না। আমার কাছে যখন একটি নাটকের অফার আসে গল্প পছন্দ হলে করি, না হলে সংখ্যা বাড়ানোর জন্য কাজটা করি না। এই কারণে হয়তো একটু কম পাওয়া যায়।’

বর্তমান নাট্যাঙ্গন কতটুকু সাবলীল চলছে এমন প্রশ্নের উত্তরে চঞ্চল বলেন, ‘খুব একটা ভালো অবস্থানে নেই আমার দৃষ্টিতে। যেভাবে নাটক চলার কথা ছিল, যত দিন এই ইন্ডাস্ট্রির বয়স, সেই জায়গায় পেশাদারিত্বের আরো উন্নতি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেভাবে পেশাদারিত্বটা আসেনি। এখনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক, কার সঙ্গে কার সম্পর্ক আছে, সেই হিসেব করে কাজ হয়। যোগ্য অনেক মানুষ কাজ পাচ্ছে না, যোগ্য পরিচালক কাজ পাচ্ছে না, যোগ্য অভিনেতা-অভিনেত্রীরা কাজ পাচ্ছে না। বেশির ভাগ কাজ হচ্ছে রিলেশন আর কে কার সঙ্গে লিয়াজোঁ মেইন্টেন করতে পারবে, সেই হিসেব করে। ইন্ডাস্ট্রির জন্য মোটেও এটা ভালো নয়।’

দর্শকদের বড় একটা অংশ নাটক-সিনেমা থেকে হতাশ বিষয়টি নিজেও শিকার করেন এই তারকা। চঞ্চল চৌধুরী জানান, ভালো কাজের সংখ্যা কমে গেছে, খারাপ কাজের সংখ্যা বেড়ে গেছে। ভালো কাজও হচ্ছে কিন্তু খারাপের ভিড়ে ভালোটা হারিয়ে যাচ্ছে। ইউটিউবে ম্যাক্সিমাম নাটকই কোনটা বেশি ভিউ হবে, সেই বিষয় চিন্তা করা হয়। কিন্তু ভালো নাটক বেশি ভিউ হয় না। অনেক ভালো গল্প হয়তো সেই তুলনায় ভিউ নেই। চ্যানেলও ভিউ হওয়া নাটকগুলো নিয়ে চিন্তা করছে, কাস্টিংও সেভাবেই করা হচ্ছে। আর এগুলোই দর্শক দেখছে, দর্শক মুখ ফিরিয়ে কোথায় যাবে। দর্শকদের বিনোদনের মাধ্যমই টেলিভিশন। কিন্তু কাজের ব্যস্ততার জন্য ইউটিউবে দেখছে।

নতুন প্রজন্মের কেউ অভিনয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিলে সে কতটুকু সফল হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে এই তারকা বলেন, ‘এই মিডিয়াতে যেমন অনেক ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী রয়েছে, তেমনি অভাবও রয়েছে। কোয়ালিটি নিয়ে যে আসবে তারই ভালো করার সুযোগ আছে। নতুন বলতে হুট করে এসে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালে তো হবে না। সে যদি যোগ্যতা অর্জন করে এখানে আসে, অভিনয়টা শিখে আসে সে ক্ষেত্রে অভিনয়কে পেশা হিসেবে নেওয়ার অনেক সুযোগ আছে। এটা হচ্ছে চলমান প্রক্রিয়া। নতুনরা আসবে, তারা জায়গা করবে তাদের মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে। জায়গা সব সময়ই আছে, ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী অনেক আছে, তারপরও সংকট। শুধু ভালো অভিনয় করলেই হয় না। রুচির জায়গাটা মাপতে হয়, দায়বদ্ধতার জায়গাটা মাপতে হবে। আমি অনেক ভালো অভিনেতা কিন্তু দায়বদ্ধতা নেই, যা খুশি তাই করলাম, তাহলে তো হবে না। নতুন একজন এখানে এসে দাঁড়াতে পারবে কি না, সেটা নির্ভর করছে সে আসছে কতটা যোগ্যতা নিয়ে। আগে যোগ্যতাটা অর্জন করতে হবে। দুই-একটা বিজ্ঞাপনে কাজ করে পরিচিতি পেয়ে গেলাম আর নাটক বা সিনেমায় প্রধান চরিত্রে কাজ শুরু করে দিলাম। কিন্তু অভিনয়ের কিছু জানলাম না তার জন্য তো অবশ্যই দাঁড়ানোটা কঠিন। যখন থিয়েটার করে স্ট্রাগল করে অভিনয়টা শিখে আসবে তখনই অভিনয়ের জায়গা তৈরি করতে পারবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads