• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
গান নিয়ে সাবিনার আক্ষেপ

সংগৃহীত ছবি

শোবিজ

গান নিয়ে সাবিনার আক্ষেপ

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৯ মে ২০২১

বাংলা গানকে সমৃদ্ধ করা হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পীর মধ্যে সাবিনা ইয়াসমিন অন্যতম। অসংখ্য জনপ্রিয় ও কালজয়ী গান উপহার দিয়েছেন গুণী এই শিল্পী। বিশেষ করে দেশাত্মবোধক গানে তার তুলনা তিনি নিজেই। অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি দেশাত্মবোধক গান উপহার দিয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই গায়িকা।

অডিও বাজারের নাজুক পরিস্থিতি, নোংরা রাজনীতিসহ বিভিন্ন কারণে অনেক আগেই গান গাওয়া এক ধরনের বাদই দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও অনেক শিল্পী প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই গান রেকর্ডিং করছেন- প্রসঙ্গ তুলতেই কথাগুলো বলেন তিনি।

সিনেমার গানে যিনি দীর্ঘ পাঁচ দশকেরও বেশি সময় শাসন করেছেন, সেই ‘প্লেব্যাক সম্রাজ্ঞী’ সাবিনা ইয়াসমিন এখন বেকার। একসময় সিনেমা, আধুনিক, ফোক, দেশাত্মবোধক কিংবা ঈদ মানেই ছিল সাবিনা ইয়াসমিনের গান; সেই সময়টা এখন পুরোপুরি ফিকে হয়ে গেছে। অ্যালবামের যুগও শেষ। বলা যায়, একপ্রকার গানহীন জীবনই অতিবাহিত করছেন সাবিনা ইয়াসমিন। বললেন, ‘যুগের পরিবর্তন হয়েছে।’ তারপরই কথা সামলে নিয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘যুগের পরিবর্তনও ঠিক। সিনেমায় বা প্রোগ্রামগুলোতে পরিবর্তন এসেছে। এখন কোথায় পাব কামাল আহমেদ, মোহসিন সাহেব, খান আতাউর রহমান, সে মানের কেউ না থাকলে ভালো কিছু হবে?

এখনকার গান এত তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাওয়ার কারণ কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে একটা গান ছাড়ার জন্য তাড়াহুড়ো ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রিহার্সেলের পর রেকর্ডিং হতো। শুধু গান রেকর্ডের দিনই নয়, তার আগেও দুই-তিনদিন রিহার্সেল করেছি। তখন সব মিউজিশিয়ান, শিল্পীরা একসঙ্গে বসে আছেন এমন একটা সুন্দর পরিবেশের কথা ভাবতেই একটা ভালো লাগার অনুভূতি খেলে যায়। এজন্যই আমার গানগুলো এত বেশি হূদয়ছোঁয়া হয়েছে। এত বেশি প্রাণ রয়েছে আমার গানে।’

তাহলে এখনকার গানে সীমাবদ্ধতা কোথায়? সাবিনার জবাব, ওই যে বললাম, যারা নিজেই গীতিকার, নিজেই সুরকার, নিজেই কম্পোজার এমন সবজান্তা শিল্পীর কাছ থেকে আপনি কী আশা করতে পারেন?’

প্লেব্যাকে নতুন গানের কথা হচ্ছে কিনা- প্রশ্ন তুলতেই একপ্রকার হতাশা ও কৌতূহলের স্বরে তিনি বলেন, ‘বাংলা সিনেমা কোথায় এখন। সিনেমা তৈরি হয় কিনা- তাও জানি না। সিনেমা হলই বা এখন কয়টা! তাও তো জানি না। তবু অল্পস্বল্প গান করছি অবশ্য। সর্বশেষ যে গানটি করেছি ছবিটার নাম তো বলতে পারব না (তুমি আছো তুমি নেই) কবরী আপার একটি ছবি, এতে আমি সংগীত পরিচালক ছিলাম। আরো কিছু গান করেছি, তবে সেগুলোর নাম মনে পড়ছে না আপাতত।’

অডিও, টিভি, স্টেজের বাইরে এক চলচ্চিত্রেই বহু কালজয়ী গান হয়েছে, এখন হচ্ছে না, এ প্রসঙ্গে চৌদ্দবারের জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘এখন তো সোশ্যাল বা প্রেমের ছবি হচ্ছে না। যে রকম আনসোশ্যাল ছবি হচ্ছে তাতে কালজয়ী, জনপ্রিয় গান হওয়ার সুযোগ কোথায়? এখন সিনেমা বা গল্পের ধরন অনুযায়ীই গান হচ্ছে। আগে সিনেমায় যে মানের ডিরেক্টর ছিলেন এখন সে মানের ডিরেক্টরও তো নেই। তবে আমাদের দেশের গানের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে এতটা ভেঙে পড়েনি। তবে সব মিলিয়ে ওখানেও অবক্ষয় চলছে। বাংলা গানকে আমার আরো অনেক দেওয়ার ছিল। কিন্তু চলমান প্রেক্ষাপটে সেটা আর হয়তো সম্ভব হবে না। মনের ইচ্ছে মনেই থেকে যাবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads