• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

বাণিজ্য

বাণিজ্য ঘাটতি দেড় হাজার কোটি ডলার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২১ মে ২০২১

১ হাজার ৪৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবে ভারসাম্যের (ব্যালেন্স অব পেমেন্ট) ওপর করা হালনাগাদ প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ইপিজেডসহ রপ্তানি খাতে দেশ আয় করেছে দুই হাজার ৮৭২ কোটি ডলার, এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় করেছে চার হাজার ২৭৬ কোটি ডলার। সে হিসেবে ৯ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৪৯ কোটি ৭০ লাখ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় ঘাটতির এ পরিমাণ এক লাখ ২৩ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা ধরে)।

এ সময়ের মধ্যে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আগের বছরের তুলনায় দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেশি আয় করেছে, বিপরীতে পণ্য আমদানি ব্যয় আগের বছরের চেয়ে ৬ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ বেড়েছে। দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগের চাহিদা কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় আমদানি চাহিদাও বেড়েছে। তাই আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে স্বল্পপরিসরে। তবে দেশের প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ চাঙ্গা থাকায় বাণিজ্য ঘাটতি কম হয়েছে। প্রথম ৯ মাসে রেমিট্যান্স বেড়েছে প্রায় ৩৫ শতাংশ।

বিমা, ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসেব করে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয়। করোনাকালীন সময়ে মানুষ ভ্রমণ কম করেছে। অন্যদিকে আমদানি-রপ্তানি কম হওয়ায় বিমার খরচও কমে গেছে। ফলে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি কিছুটা কম হয়েছে। চলতি অর্থবছরের নয় মাসে এ খাতের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৯১ কোটি ডলার। গত অর্থবছর একই সময়ে তা ছিল ২৩৬ কোটি ডলার।

মহামারীতে বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার প্রভাব সরাসরি পড়েছে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ওপরও। গত অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ২৪৯ কোটি ১০ লাখ ডলারের এফডিআই পেয়েছিল বাংলাদেশ। একই সময়ে চলতি অর্থবছরে তা সামান্য বেড়ে ২৫৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে সরাসরি মোট যে বিদেশি বিনিয়োগ আসে তা থেকে বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মুনাফার অর্থ নিয়ে যাওয়ার পর যা অবশিষ্ট থাকে তাকে নিট এফডিআই বলা হয়। আলোচিত সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগও আগের বছরের চেয়ে প্রায় ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে ৯৪ কোটি ডলারে নেমেছে। গত বছর একই সময়ে নিট বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১০৩ কোটি ডলার।

এদিকে, করোনা মহামারীতে বৈশ্বিক অর্থনীতির অবস্থা যখন নাজুক এমন পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতির অন্যতম সূচক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স) উদ্বৃত্ত বাড়ছে। চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে চলতি হিসাবে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্বৃত্ত রয়েছে। যা আগের অর্থবছরে একই সময়ে ঋণাত্মক ছিল প্রায় ২৬৫ কোটি ১০ লাখ ডলার।

এদিকে, সার্বিক রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারসাম্যেও (ওভারঅল ব্যালেন্স) ৬৯৯ কোটি ডলারের বেশি উদ্বৃত্ত ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। এই নয় মাসে ১ হাজার ৮৫৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। গত বছর একই সময়ে পাঠিয়েছিলেন ১ হাজার ৩৭৬ কোটি ডলার।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads