• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিদেশ

কূটনীতিক যখন গোয়েন্দা

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২৮ মার্চ ২০১৮

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে বলেছেন, বহিষ্কৃত ২৩জন রাশিয়ান কূটনীতিক আসলে 'অঘোষিত গোয়েন্দা কর্মকর্তা' ছিলেন। এক কথায় তারা 'গুপ্তচর'। কূটনীতিক মানে অনেকের কাছেই এমন একজন যে কিনা ভালো পরিপাটি একজন ভদ্রলোক, সৌজন্যতার সঙ্গে হাত মেলাতে পারেন, কয়েকটি ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাহলে একজন কূটনৈতিক কর্মকর্তা আর গুপ্তচরের মাঝে পার্থক্যটা কোথায়?

এ বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অফ বাকিংহ্যামের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা শিক্ষা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক অ্যান্থনি গ্লেস বলেন, 'বিশ্বের প্রতিটি দূতাবাসেই গুপ্তচর থাকে। যেহেতু সব দেশই এটা করে থাকে, তাই এখানে একটি অলিখিত বোঝাপড়াও থাকে যে, দূতাবাসের ভেতরে কি হচ্ছে না হচ্ছে, তা নিয়ে ওই দেশের সরকার চোখ বন্ধ করে রাখবে। কিন্তু এই বোঝাপড়া সেই পর্যন্তই অটুট থাকে, যতক্ষণ না কেউ দেশটির আইন ভঙ্গ করছে।’

যেমনটা ঘটেছে ব্রিটেন সাবেক গুপ্তচর সের্গেই স্ক্রিপাল আর তার মেয়ের ওপর হামলা করার মাধ্যমে। তবে অবশ্যই অবশ্যই এ ধরনের কাজে দূতাবাসের সব কর্মী জড়িত থাকে না। সত্যিকারের কূটনীতিকরা তাদের প্রথা মেনেই, জেনেভা কনভেনশন অনুযায়ী তথ্য সংগ্রহ করেন।

ব্রিটিশ সরকারের কর্মপদ্ধতি অনুসরণ করলে দূতাবাসের কাজ থাকে মূলত তিন ধরণের। তা হলো রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক এবং পরামর্শক।

রাজনৈতিক: যে দেশে দূতাবাসটি অবস্থিত, তাদের উন্নয়ন নজরদারি, তথ্য সংগ্রহ এবং সরকার ও নিজ দেশের গণমাধ্যমের কাছে সরবরাহ করা।

বাণিজ্যিক: নিজ দেশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অন্য দেশে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহায়তা করা।

পরামর্শ: নিজ দেশের প্রবাসী নাগরিকদের বিভিন্ন সহায়তা দেয়া এবং ভিসা আবেদন সম্পন্ন করা।

অধ্যাপক গ্লেস বলেন, ‘এগুলো সব সত্যিকারের কূটনীতিকরাই করে থাকেন। কিন্তু কিছু কর্মকর্তা কূটনীতিক হিসাবে তালিকাভুক্ত হলেও তারা কিন্তু আসলে গোয়েন্দা কর্মকর্তা। যাদের কাজ গোপনে দেশটি থেকে নানা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা। তবে সত্যিকারের গোয়েন্দা বা গুপ্তচরের কাজটি করে থাকে একজন এজেন্ট, যাকে হয়তো এর বিনিময়ে অর্থ দেয়া হয় অথবা তাকে ব্ল্যাকমেইল করা হয়। আবার কেউ হয়তো সে আদর্শগত কারণেই এটা করে থাকে। দূতাবাসের কর্মকর্তারা ওই এজেন্ট বা এজেন্টদের পরিচালনা করে থাকেন। তারা নিজেরা এসব কাজে সরাসরি জড়িত হন না।’

এ কারণেই ব্রিটেনসহ আরো অন্তত ২৫টি দেশ তাদের দেশে থাকা দূতাবাস থেকে রাশিয়ান কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে।
কারণ, টেরিজা মে মনে করেন, এরা সবাই গুপ্তচর।

অধ্যাপক গ্লেস আরো বলেন, ‘আমাকে অনেকে জিজ্ঞাসা করেছে, এসব বহিষ্কারের পর আমরা কি নিরাপদ হতে পেরেছি? এর উত্তওে নিঃসন্দেহে বলা যায়, হ্যাঁ। এটা রাশিয়ার গোয়েন্দা কর্মকান্ডর জন্য বড় একটি আঘাত। কিন্তু যে এজেন্টদের মাধ্যমে এসব কর্মকান্ড চালানো হতো, সেই এজেন্টরা কিন্তু থেকেই যাচ্ছেন। দূতাবাসে নতুন কেউ আসবেন, এবং তাদের আবার পরিচালনা করবেন। কারণ এই এজেন্টদের আমরা ধরতে পারিনি।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads