• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

ট্রাম্পের ইটের জবাবে পুতিনের পাটকেল

রাশিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ কূটনীতিক বহিষ্কার

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ৩১ মার্চ ২০১৮

রাশিয়ার রাজধানীতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৬০ কূটনীতিককে বহিষ্কারাদেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে ওই কূটনীতিকদের রাশিয়া ত্যাগ করতে হবে বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। আল জাজিরা সূত্রে জানা যায়, বহিষ্কারাদেশ প্রাপ্তদের মধ্যে ৫৮ জন মস্কোয় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক এবং বাকি দুজন ইয়েকাট্রেইনবার্গের দূতাবাস কর্মকর্তা। এ ছাড়া মস্কো কর্তৃপক্ষ সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের অনুমতিপত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ফলে সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে সকল দাফতরিক কার্যক্রম গোটাতে হবে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসকে। অনুমতিপত্র প্রত্যাহারের সময় রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পিটার্সবার্গের যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস প্রধান জন হান্টসম্যানকে ডেকে পাঠানো হয় এবং একটি প্রতিবাদ লিপি দেওয়া হয়। সেখানে ওয়াশিংটনের কূটনীতিক বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে ভয়াবহ এবং অন্যায্য বলা হয়েছে।

মস্কোর বহিষ্কারাদেশের পরই ওয়াশিংটন প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকে। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হেদার নুয়ার্ট বলেন, রাশিয়ার এমন পদক্ষেপের মানে তারা সংলাপে আগ্রহী নয়। রাশিয়ার পদক্ষেপের কোনো ভিত্তি নেই। যুক্তরাজ্যে আক্রমণের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও বলা হয়।

এর আগে গত সোমবার এবং মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৪টি দেশ একযোগে ১২০ জনের বেশি রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করে। এমনকি ন্যাটোও সাত রুশ কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করে। গত সপ্তাহে লন্ডন নার্ভ গ্যাস হামলার প্রতিক্রিয়ায় ২৩ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছিল। যুক্তরাজ্যের পরামর্শে যুক্তরাষ্ট্র সিয়াটলে অবস্থিত রুশ দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। ফলে রাশিয়াও একই পদক্ষেপ নিয়ে পিটার্সবার্গের দূতাবাস বন্ধ করে দেয়। জানা যায়, ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশনাতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যেমনটা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে নির্দেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। এ বিষয়ে ক্রেনেইজ মস্কো সেন্টারের গবেষক এবং সাবেক সাংবাদিক আলেকজান্ডার গ্যাবুয়েভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রাশিয়ার পদক্ষেপ নেওয়াটা অতটা ঠিক হয়নি। ৬০ জন কূটনীতিক বহিষ্কারের বিরুদ্ধে রাশিয়াও ৬০ জনকে বহিষ্কার করেছে তা ঠিক আছে। কিন্তু পিটার্সবার্গের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়াটা একটু বাড়াবাড়ি হয়েছে বলেও তিনি মনে করেন। তবে অপর বিশ্লেষক ভ্লাদিমির ফ্রোলোভের মতে, রাশিয়া উচিত কাজটিই করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত দুটি দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া উচিত ছিল বলেও তিনি মনে করেন। গত সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত রুশ দূতাবাস অসিফের আফিশিয়াল টুইটার থেকে একটি জরিপ জানতে চাওয়া হয়। সিয়াটলের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া টুইটারে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত তিনটি দূতাবাসের নাম উল্লেখ করে কোন দূতাবাসকে বন্ধ করে দেওয়া উচিত এমন মতামত জানতে চায়। সেই জরিপের ফলাফল অনুসারেই পিটার্সবার্গের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়।

সের্গেই এবং ইউলিয়া স্ক্রিপালের মধ্যে ইউলিয়া স্ক্রিপালের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে। গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে এমনটা জানিয়েছে। সের্গেই স্ক্রিপালের অবস্থার উন্নতি না হলেও নতুন করে কোনো অবনতি ঘটেনি। গত সোমবার সংসদে দেওয়া এক ভাষণে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে জানিয়েছিলেন, নভিচক নার্ভ গ্যাসে কমপক্ষে ১৩০ জন আহত হয়েছেন। সর্বশেষ ওয়াশিংটন পোস্টের এক রিপোর্টে জানা যায়,  আন্তর্জাতিক অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপনসের (ওপিসিডব্লিউ) একটি দল যুক্তরাজ্যের সালিসবুরিতে পৌঁছেছে। আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই সংস্থাটির গবেষকরা নার্ভ গ্যাস হামলার বিস্তারিত জানাতে সক্ষম হবে বলেও জানা যায়।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যাভরভ সাংবাদিকদের জানান, ওপিসিডব্লিউর নির্বাহী কমিটির সঙ্গে এপ্রিলের ৪ তারিখে বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনায় বসবে মস্কো প্রশাসন। সেসময় স্ক্রিপালের উপর নার্ভ গ্যাস হামলা প্রসঙ্গে রুশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংস্থাটির আলোচনা হবে। পশ্চিমারা যদি ওপিসিডব্লিউ মারফত বাহাসে রাজি না হয় তাহলে এটাই প্রমাণিত হবে মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমের প্রমাণ করার কিছু নেই বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, সংস্থাটি শুধু পরীক্ষা করে দেখবে ওই হামলায় কোন পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছিল, কিন্তু ওই হামলা রাশিয়াই করেছিল কি না সে বিষয়ে সংস্থাটি কোনো বক্তব্য দেবে না।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads