• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’

রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুন

ছবি : ইন্টারনেট

বিদেশ

‘ওরা আমাকে মেরে ফেলবে’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৮ জানুয়ারি ২০১৯

বাপ-ভাইয়ের হাতে খুন হওয়ার ভয়ে পালিয়ে ব্যাংককের একটি হোটেলকক্ষে আশ্রয় নেওয়া সৌদি তরুণী রাহাফ মোহাম্মদ আল-কুনুনের (১৮) পক্ষে সোচ্চার হয়েছে মানবাধিকার সংস্থা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। তার সমর্থনে টুইট করেছেন থাইল্যান্ডে জার্মানির রাষ্ট্রদূত জর্জ স্মিডট। এ ছাড়া দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর সারা হ্যানসন-ইয়াঙ তার দেশের সরকারের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে যত দ্রুত সম্ভব রাহাফকে সেদেশে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে। খবর বিবিসি ও দ্য স্ট্রেইট টাইমস।

গত শনিবার ব্যাংকক বিমানবন্দরে নামেন রাহাফ। সেখান থেকে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিমানবন্দরে তাকে আটকান থাইল্যান্ডের অভিবাসী দফতরের কর্মকর্তারা। তার পাসপোর্ট ও ভিসা কেড়ে নেওয়া হয়। সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার তাকে  কুয়েত ফেরত পাঠানোর। সেখানে তার পরিবারের লোকজন রয়েছে। কিন্তু বেঁকে বসেন ওই তরুণী। বিমানবন্দরের মধ্যে একটি হোটেলের ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দেন তিনি। সেখান থেকে টুইটারে একের পর এক বার্তা পোস্ট করতে শুরু করেন। সাহায্য চান জাতিসংঘের, যেন তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ বন্ধ করা হয়।

টুইটারে তিনি লেখেন, আমার ভাইরা, পরিবারের লোকজন এবং সৌদি দূতাবাস কুয়েতে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। ওখানে গেলে ওরা আমকে মেরে ফেলবে। আমার জীবন হুমকির মুখে। বাড়ির লোকজন সবসময় তুচ্ছ কারণে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন তার নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের রাজনীতিবিদ ও বিভিন্ন অঙ্গনের ব্যক্তিত্বরা তাকে আশ্রয় দেওয়ার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছেন।

রাহাফ আরো জানান, রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে তিনি। বাড়িতে কড়া নিয়মকানুনের মধ্যে তাকে থাকতে হয়। নিজের মতো করে বাঁচতে পারেন না। চুল কাটার জন্য ছয় মাস ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল তাকে। শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারও হয় তার ওপর। তাই অনেক দিন থেকেই পালানোর চেষ্টা করছিলেন। সম্প্রতি সেই সুযোগ আসে।

দক্ষিণ এশিয়ায় নিযুক্ত জাতিসংঘের শরণার্থী বিভাগের হাইকমিশনার ফিল রবার্টসন জানান, ‘রাহাফ যে চরম বিপদের মধ্যে রয়েছে, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ওর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। বিমানবন্দরের মধ্যে হোটেলের ওই ঘরে জাতিসংঘকে ঢোকার অনুমতি দিতে হবে থাই প্রশাসনকে। আমাদের নির্দেশ মানতেই হবে। মেয়েটির বাবা সৌদি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। দেশটিতে এমন ঘটনা নতুন নয়। সৌদির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই এ ধরনের অভিযোগ রয়েছে। মেয়েটির জীবন নিয়ে আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বাড়ি ফিরলে তাকে সত্যিই মেরে ফেলা হতে পারে। তবে রাহাফের পরিবার এসব অভিযোগ নাকচ করে বলেছে, তাদের মেয়ে মানসিকভাবে অসুস্থ। তবে সৌদি সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads