• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ভারতে শনাক্ত ও ব্রাজিলে মৃত্যুর রেকর্ড

সংগৃহীত ছবি

বিদেশ

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি

ভারতে শনাক্ত ও ব্রাজিলে মৃত্যুর রেকর্ড

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ০৮ এপ্রিল ২০২১

করোনার নতুন কয়েকটি দ্রুত সংক্রমণক্ষম ভ্যারিয়েন্ট বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই দেশে দেশে সংক্রমণের নতুন ঢেউ লক্ষ করা যাচ্ছে। ব্রাজিলে রীতিমতো মড়ক লেগে গেছে আর ভারতে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা আগের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে, করোনা মোকাবিলায় কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না বলে সংবাদ মাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মহামারী শুরুর পর এবারই প্রথম ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড এক লাখ ১৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ভারতে। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে বেহাল ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল বুধবার অনাকাঙ্ক্ষিত এই মাইলফলকে পৌঁছানোর কথা জানায়।

করোনাভাইরাসের এ পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পরবর্তী ৪ সপ্তাহকে ভারতের জন্য ‘খুব, খুবই গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করলেও এখনই ১৮ বছরের বেশি বয়সী সবার জন্য টিকাদান শুরুর চিন্তাভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভুষণ। ভারতের মধ্যে এখন ছত্তিশগড়, দিল্লি, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশেই দৈনিক শনাক্তের উল্লম্ফন দেখা যাচ্ছে। দেশটির রাজ্যগুলোর মধ্যে ভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মহারাষ্ট্রে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৫৫ হাজারের বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মুম্বাইয়ে হাসপাতালগুলোতে ভিড় ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে কর্তৃপক্ষ একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা চালু করেছে। যার মাধ্যমে রোগীদের বিভিন্ন হাসপাতালে আসন বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। দিল্লিতেও ২৪ ঘণ্টায় ৫ হাজার ১০০ নতুন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে; চলতি বছর শহরটি একদিনে আর কখনোই এত রোগী পায়নি।

 

ভারতের এ রাজধানী শহর প্রথমবারের মতো একদিনে এক লাখের বেশি শনাক্তকরণ পরীক্ষা করার পর সংক্রমণের এ ঊর্ধ্বগতির চিত্র মিলল। দৈনিক শনাক্তে লাগাম টানতে দিল্লির কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউও দিয়েছে। এর আগে গত সোমবার একদিনে এক লাখ ৩ হাজার ৫৫৮ জন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছিল ভারতের স্বাস্থা মন্ত্রণালয়। বুধবার স্থানীয় সময় সকালে কর্তৃপক্ষের দেওয়া হিসাবে সে রেকর্ড ভেঙে গেল। এদিন কর্তৃপক্ষ ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ১৫ হাজার ৭৩৬ নতুন রোগীর পাশাপাশি ৬৩০ জনের মৃত্যুর কথাও জানিয়েছে।

ভারতে যখন সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠিক তখন ভাইরাসটির লাগামহীনতায় বিপর্যস্ত লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে প্রথমবারের মতো চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যার দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা দেশটিতে প্রতিদিনই শনাক্ত হচ্ছেন ৩০ হাজারের বেশি। দৈনিক মৃতের সংখ্যা গড়ে প্রায় এক হাজার ৫০০। দেশটি থেকে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণে লাতিন আমেরিকাজুড়ে হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে করোনার সংক্রমণ। উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে এবং পেরুতে এরই মধ্যে রেকর্ড ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা। ব্রাজিলের এসপিরিটো সানটো ফেডারেল ইউনিভার্সিটির মহামারি বিশেষজ্ঞ এথেল ম্যাসিয়েল বার্তাসংস্থা এএফপি-কে জানান, ‘আমরা খুবই ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে আছি। এরপরও করোনা মহামারীর বিষয়ে প্রাদেশিক বা কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ আমরা দেখতে পারছি না।’ এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনার অব্যাহত সংক্রমণ সত্ত্বেও কিছু কিছু দেশে এখনও টিকা কার্যক্রম না হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির প্রধান তেদ্রোস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বলেন, টিকা উৎপাদন এবং এর সুষম বণ্টনই এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গত মঙ্গলবার  বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশের জন্য বর্তমানে করোনা ভ্যাকসিনের অন্তত এক ডোজ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে।

এ যেন এমনই এক কঠিন বাস্তবতা যার কোনো শেষ নেই। কোথাও প্রথম, কোথাও আবার করোনার দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত বিশ্বের একেকটি দেশ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads