নাক ডাকা ও ঘুমের সময় নিঃশ্বাস আটকে যাওয়াদের (স্লিপ অ্যাপনিয়া) চিকিৎসার জন্য বিশেষ ল্যাব চালু করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ)। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সি’ ব্লকের সাততলায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে ‘প্রশান্তির ঘুম’ নামে ল্যাবটি উদ্বোধন করেন উপাচার্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
বিএসএমএমইউর ‘সি’ ব্লকের ছয়তলার মাল্টিপারপাস হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে উপাচার্য বলেন, ‘পরীক্ষার জন্য ল্যাবটি রাতেও খোলা থাকবে। ঘুমের মধ্যেই সমস্যায় আক্রান্তদের পরীক্ষা করা হবে। শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা ও অন্য কিছু কারণে মানুষ নাক ডাকতে পারে। এর সুচিকিৎসা ও প্রতিরোধের বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘শিশুরাও টনসিল অ্যাডেনোইডের কারণে নাক ডাকা সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ সমস্যা দূর করতে অনেক সময় সার্জারির প্রয়োজন হয়।’
মূল প্রবন্ধে ডা. মনজুরুল আলম বলেন, ‘নাক ডাকা ও ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে যাওয়াকে অনেকে রোগ বলতে রাজি নন। এটা ঠিক নয়। এ সমস্যাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। স্লিপ অ্যাপনিয়া ম্যানেজমেন্ট জটিল। দেশে এ বিষয়ে গবেষণা এখনো খুব একটা অগ্রগতি লাভ করেনি।’ তিনি বলেন, ‘নাক ডাকা রোগীদের তৃপ্তির ঘুম হয় না। ঘুম স্বাস্থ্য ভালো রাখে ও কর্মদক্ষতা বাড়ায়। ভালো ঘুম না হলে সারা দিন ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে কাজ করতে হয়। অনেক গাড়িচালক এ কারণে দুর্ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন।’ নাক ডাকলে অন্যদের ঘুমে অসুবিধা হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভোগা রোগীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ। একটি দেশের মোট জনসংখ্যার পুরুষদের ৩ থেকে ৭ শতাংশ, আর নারীদের ২ দশমিক ৫ শতাংশের নাকডাকা সমস্যা রয়েছে। ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন, ফাস্টফুড গ্রহণ, মুটিয়ে যাওয়া ও ব্যায়াম না করা ইত্যাদি কারণে এ সমস্যা হয়ে থাকে।’ এ ক্ষেত্রে তিনি শাকসবজি বেশি করে খাওয়া ও নিয়মিত ব্যায়াম করার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (গবেষণা) ডা. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ ডা. আলী আসগর মোড়ল। এতে সভাপতিত্ব করেন অটোল্যারিংগোলজি হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান ডা. কামরুল হাসান তরফদার।