• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজে সমতা আনলো জিম্বাবুয়ে

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ

বাংলাদেশকে হারিয়ে সিরিজে সমতা আনলো জিম্বাবুয়ে

  • ক্রীড়া প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৩ জুলাই ২০২১

একমাত্র টেস্ট, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ এবং প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পরাজিত হয় স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে দল। অবশেষে নিজেদের মাটিতে এবারের সিরিজে প্রথম জয়ের মুখ দেখল জিম্বাবুয়ে দল। আজ শুক্রবার হারারেতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশকে ২৩ রানে হারিয়ে দিয়েছে তারা। জিম্বাবুয়ের ৬ উইকেটে ১৬৬ রানের জবাবে বাংলাদেশ ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ রানে অলআউট হয়। এর আগে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৩ উইকেট জয়লাভ করে। সিরিজে এখন ১-১ ম্যাচে সমতা বিরাজ করছে।

শততম টি-টোয়েন্টি জয়ে অনবদ্য ভূমিকা ছিল দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও মোহাম্মদ নাঈমের। কিন্তু দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে হতাশ করলেন দুজনেই। ১৬৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৭ রানেই ফিরে গেছেন দুজন। এরপর আরো ৪ উইকেট পতনে বিপদেই পড়ে গেছে সফরকারীরা।

আগের ম্যাচে অসাধারণ ছন্দে থাকলেও এই ম্যাচে ইনিংস বড় করতে পারলেন না নাঈম। ব্লেসিং মুজারাবানির তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই তিনি বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৫ রানে। একই ওভারের চতুর্থ বলে মুজারাবানির জোড়া আঘাতের শিকার হন সৌম্য সরকার। শট খেলতে গিয়ে কভারে ক্যাচ উঠিয়ে তিনি ফিরেছেন মাত্র ৮ রানে।

দ্রুত দুই উইটেট পড়ে যাওয়া রান তোলায় মনোযোগী হয়েছিলেন মেহেদী ও সাকিব। চেষ্টাও করেছিলেন দুজন। পাওয়ার প্লেতে পর্যাপ্ত রান তুলে দিলেও সাকিব সপ্তম ওভারে বিপদ ডেকে আনেন বেশি বাইরে এসে খেলতে গিয়ে। বামহাতি স্পিনার মাসাকাদজার বলে ক্যাচ তুলে দেন কভারে। সাকিব বিদায় নেন ১০ বলে ১২ রানে।

এরপর শট খেলার লোভ সামলাতে না পেরে বিপদটা আরো বাড়িয়ে দিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। মাসাকাদজার বলে ক্যাচ উঠিয়ে দিয়েছেন লং অনে। টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের সংগ্রহ ছিল মাত্র ৪ রান। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটারের বিদায়ে থিতু হবেন কি, উল্টো দলকে শঙ্কায় ফেলে দেন মেহেদী। সেই মাসাকাদজার স্পিনে শট খেলার তাড়নায় মেহেদী (১৫) ক্যাচ উঠিয়ে দিয়েছেন লং অফে। টি-টোয়েন্টিতে যে সোহানকে ঘিরে প্রত্যাশা ছিল তার ছিটেফোঁটাও দেখাতে পারলেন না দলের বিপদের সময়। ডিপ পয়েন্টে তিনিও ক্যাচ তুলে ফিরেছেন মাত্র ৯ রানে। দলীয় ১০৯ রানে শামীম হোসেন (২৯), দলীয় ১২৭ রানে আফিফ (২৪), দলীয় ১৪১ রানে সাইফুদ্দিন (১৯) এবং ১৪৩ রানে তাসকিন (৫) আউট হলে পরাজয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের জঙ্কভি ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা ৩টি করে এবং চাতারা ও মুজারাবানি ২টি করে উইকেট পান।

এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৬৬ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। অসাধারণ ইনিংসে ৭৩ রান আসে ডানহাতি মাধেভেরের ব্যাট থেকে। ৫৭ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৫ চার ও ৩ ছক্কা। সমান ২টি করে চার ও ছয়ে বার্ল অপরাজিত থাকেন ১৯ বলে ৩৪ রানে। বাংলাদেশের পক্ষে শরিফুল ৩ উইকেট নেন ৩৩ রানে।

একাদশে অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি থাকায় সাত বোলার ব্যবহার করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা যাতে মানিয়ে নিতে না পারেন, সেজন্য ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাদের আক্রমণে আনা হয়। তবে উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো এবং ফিল্ডিং আশানুরূপ না হওয়ায় জিম্বাবুয়ে পেয়েছে লড়াইয়ের পুঁজি।

শুরুটা ভালো না হলেও দ্বিতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন শেখ মেহেদী হাসান। এই অফ স্পিনারের প্রথম দুই ডেলিভারিতে যথাক্রমে ছয় ও চার মারেন মাধেভেরে। তবে পঞ্চম ডেলিভারিতে আরেক ওপেনার টাডিওয়ানাশে মারুমানিকে বোল্ড করে দেন তিনি।

১৫ রানে জিম্বাবুয়ের ওপেনিং জুটি ভেঙে পরের ওভারেই ফের উইকেট প্রাপ্তির উল্লাস করতে পারত বাংলাদেশ। তবে মোস্তাফিজুর রহমানের বদলে একাদশে ফেরা তাসকিন আহমেদের বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান রেজিস চাকাভা। ভুল বোঝাবোঝিতে বল পড়ে শরিফুল ও শেখ মেহেদীর মাঝে।

আগের ম্যাচে ঝড় তোলা চাকাভা অবশ্য সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। ষষ্ঠ ওভারে আক্রমণে এসেই তাকে বিদায় করেন সাকিব আল হাসান। এই বাঁহাতি স্পিনারের বলে মিড-অফে শরিফুলের হাতে ধরা পড়লে থামে তার ৯ বলে ১৪ রানের ইনিংস।

২ উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লেতে বেশ ভালো গতিতে রান আনে স্বাগতিকরা। স্কোরবোর্ডে ৪৮ রান জমা করায় মূল কৃতিত্ব ছিল মাধেভেরের।

উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো হলেও জিম্বাবুয়ের তৃতীয় উইকেট জুটিতে রানের চাকায় লাগাম টানে বাংলাদেশ। মাধেভেরে ও মায়ার্স ৫৭ রান যোগ করতে খেলেন ৪৯ বল। তাদের বিচ্ছিন্ন করে দলকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু দেন শরিফুল। ডিপ পয়েন্টে শেখ মেহেদীর তালুবন্দি হওয়া মায়ার্স ২১ বলে করেন ২৬ রান।

এর দুই বল আগে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন মাধেভেরে। আগ্রাসী শুরুর পর কিছুটা খোলসে ঢুকে পড়ায় ৪৫ বল লেগে যায় তারা। তবে ব্যক্তিগত মাইলফলক পেরিয়েই ফের ঝড় তোলেন তিনি। তাসকিন ও সাকিবকে তাদের শেষ ওভারে ছক্কা মেরে বিদায় জানান তিনি।

অধিনায়ক সিকান্দার রাজা সৌম্য সরকারের সরাসরি থ্রোতে রানআউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টেকেননি মাধেভেরেও। ১৮তম ওভারে বড় শট খেলতে গিয়ে বাঁহাতি পেসার শরিফুলের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। মিড-অফে আফিফ হোসেন নেন দুর্দান্ত ক্যাচ।

ছয়ে নামা বাঁহাতি বার্লের আগ্রাসনে শেষ ৬ ওভারে ৬৫ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। ইনিংসের শেষ ওভারের পঞ্চম বলে তিনি ক্যাচ তুললেও হাতে জমাতে পারেননি সৌম্য। শেষ বলে লুক জঙ্গুয়ের ক্যাচ সাকিব লুফে নিলে তৃতীয় উইকেটের দেখা পান শরিফুল।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads