• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪২৯
পবিত্র আশুরা আজ

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ

পবিত্র আশুরা আজ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২০ আগস্ট ২০২১

আজ রোববার ১০ মহররম। পবিত্র আশুরা। আরবি শব্দ আশারা থেকে ‘আশুরা’। আশারা অর্থ দশ আর আশুরা অর্থ দশম। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় মহররম মাসের দশম দিবসকে আশুরা বলা হয়। ১০ মহররম বিশ্বের মুসলমানদের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যময়। মহান আল্লাহ এই দিনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন এবং এই দিনেই পৃথিবী ধ্বংস হবে।

আশুরার দিন আল্লাহ পৃথিবীর প্রথম মানব হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করেছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন নবীর জীবনে এ দিনে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটেছে। ৬১ হিজরির ১০ মহররমের এ দিনে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর নাতি ও মা ফাতেমার সন্তান ইমাম হোসাইন (রা.) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কারবালার ময়দানে শহীদ হন। সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়ে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে থেকে নির্ভীকভাবে শাহাদতের অমীয় সুধা পান করে পৃথিবীর বুকে চির অমর হয়ে আছেন হজরত ইমাম হোসাইন (রা.)। সেজন্য মুসলিম উম্মাহর জন্য এদিনটি একই সাথে শোকাবহ ও তাৎপর্যময়।

বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বে যথাযোগ্য মর্যাদায় পবিত্র আশুরা পালিত হবে। নফল রোজা, নামাজ, জিকির-আজকারের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দিনটি পালন করবেন। হজরত মোহাম্মদ (সা.) আশুরার দিনসহ দুদিন রোজা রাখার কথা বলেছেন। দেশব্যাপী বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এদিন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এদিন পুরান ঢাকার হোসেনী দালানসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শিয়া সম্প্রদায়ের উদ্যোগে তাজিয়া মিছিল বের হয়। কিন্তু এবার করোনা মহামারির কারণে তাজিয়া মিছিল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ সরকারি ছুটি রয়েছে।

দশই মহররম কারবালা প্রান্তরে বিশ্ব নবী হজরত মোহাম্মদ সো.)-এর দৌহিত্র হোসাইন (রা,)-এর শাহাদতের ঘটনা মুসলিম জাতির ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এই ঘটনার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। মুসলিম উম্মাহ অত্যন্ত ব্যথিত হূদয়ে কারবালার ঘটনা স্মরণ করে আবেগ আপ্লুত হয়। হজরত হোসাইন (রা.) অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গিয়ে সেদিন কারবালা প্রান্তরে পরিবার-পরিজন নিয়ে শাহাদতবরণ করেছিলেন। রাসুল (সা.)এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং তাঁর সাহাবিদের প্রবর্তিত শাসনব্যবস্থা খেলাফত অক্ষুণ্ন রাখার জন্য তিনি শাহাদতবরণ করেন। ইসলামী খেলাফতের ব্যাপারে কোনো ধরনের আপস না করার কারণেই কারবালার ঘটনা ঘটেছিল। কারবালার ঘটনা আমাদের অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে সংগ্রাম করার শিক্ষা দেয়।

ইবাদত : ইসলামের প্রাথমিক যুগে আশুরার রোজা ফরজ ছিল। দ্বিতীয় হিজরি সনে রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান নাজিল হলে আশুরার রোজা ঐচ্ছিক হিসেবে বিবেচিত হয়। আশুরা দিবসে রোজা পালনের জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়েছেন। সর্বাধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, রমজানের পর সর্বাধিক উত্তম রোজা হলো মহররম মাসের রোজা আর ফরজের পরে সর্বাধিক উত্তম নামাজ হলো তাহাজ্জুদের নামাজ। (সহিহ মুসলিম ১/৩৫৮)। হাদিসের প্রায় সব কিতাবে মহররম মাসের ফজিলত এবং আশুরার রোজা সম্পর্কে একাধিক হাদিস রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, আশুরার দিন রোজা রাখার কারণে আল্লাহতায়ালা বান্দার বিগত এক বছরের গুনাহগুলো মাফ করে দেন। (সহিহ মুসলিম ১১৬২)। প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনা উল্লেখ করেছেন, যাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, তোমরা আশুরার দিন রোজা রাখো। তবে এতে যেন ইহুদিদের সাথে সামঞ্জস্য না হয়ে যায় সেজন্য এর সাথে মিলিয়ে হয় আগের দিন কিংবা পরের দিনসহ রোজা পালন করো। (তিরমিজি ৭৫৫)।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads