শেয়ারবাজারে লেনদেন বৃদ্ধির সূচক গতকাল মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল। গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৫৪৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার, যা গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এদিন গত সোমবারের চেয়ে ৩৫৩ কোটি টাকা বেশি লেনদেন হয়।
সোমবার মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার। তবে লেনদেন বাড়লেও চেয়ে সূচক কমেছে ডিএসইতে। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৪২ পয়েন্ট, অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬০৯ পয়েন্টে। শেয়ারবাজারে নতুন বছরটি শুরু হয়েছে সূচক ও লেনদেনের বড় উত্থান দিয়ে। প্রথম দুই কার্যদিবসে ডিএসইএক্স সূচক বাড়ে ২৫০ পয়েন্ট। গতকাল তাই কিছুটা মূল্য সংশোধন দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা ছিল বেশি।
এ ছাড়া বছরের প্রথমেই লেনদেন ফিরে গেছে ২০১০ সালের বাজারধসের আগের অবস্থানে। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, স্বাভাবিক দিনের লেনদেন বিবেচনায় নিলে প্রায় ১০ বছর পর সোমবার ঢাকার বাজারে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। মঙ্গলবার তার চেয়েও বেশি লেনদেন হয়েছে। এর আগে সর্বশেষ ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর ২ হাজার ৭১১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। এরপর গত বছরের ২৮ জুন অবশ্য ২ হাজার ৫৪৩ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল।
গতকাল শেয়ারবাজারে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। একপর্যায়ে বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে ১৭৮ পয়েন্ট বেড়ে যায় সূচকটি। লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টায় মূল্য সূচকের এমন বড় উত্থান হলেও লেনদেনের শেষে তা ভোজবাজির মতো বদলে গিয়ে বড় পতন হয়েছে। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৪২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৬০৯ পয়েন্টে নেমে গেছে।
ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৭৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৫৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। সবকটি মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। দিনের লেনদেন শেষে অংশ নেওয়া ১১৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১৯৭টি এবং ৫০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেনের দিনে টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে রবির শেয়ার। কোম্পানিটির ২৫৬ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার লেনদেন হয়েছে ১৬৪ কোটি ৭৩ লাখ টাকার। ১৩৭ কোটি ১২ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আইএফআইসি ব্যাংক, লাফার্জহোলসিম, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, সিটি ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, কেপিসিএল এবং অ্যাকটিভ ফাইন। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্য সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১৫৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৯৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির এবং ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
