• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে সাড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল

ছবি: বাংলাদেশের খবর

যোগাযোগ

আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে সাড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধ ছিল ফেরি চলাচল

  • শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৩ ডিসেম্বর ২০২১

ঘনকুয়াশার কারণে মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদেরকে। আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে সাড়ে ১২ ঘন্টা এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে সাড়ে ৯ ঘন্টা বন্ধ থাকর পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে।

এর আগে গত বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ১২ ঘন্টা আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে এবং পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে ৯ ঘন্টা ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল।

এ সময় ২টি ফেরি দুর্ঘটনা এড়াতে যাত্রী এবং যানবহন নিয়ে মাঝ নদীতে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। দীর্ঘ এসময় যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদেরকে শীতের মধ্যে ফেরি ঘাটে, গাড়িতে এবং ফেরিতে বসে অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয়েছে। বেশী অসুবিধা হচ্ছে শিশু এবং নারী যাত্রীদেরকে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে , বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার ( ২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা পর্যন্ত একটানা সাড়ে ১২ ঘন্টা আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঘনকুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় নৌপথ দৃষ্টি সিমার বাইরে চলে গেলে আরিচা থেকে ছেড়ে যাওয়া কাজিরহাটগামী ফরিদপুর নামের একটি ফেরি যাত্রী এবং যানবাহন নিয়ে মাঝ নদী নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। বাকী তিনটি ফেরি যানবাহন বোঝাই করে উভয় ঘাটে নোঙর করে থাকে। ফেরি বন্ধ থাকায় দুই পাড়ে অপেক্ষারত যানবাহনের ভীড় বারতে থাকে। আটকা পড়ে শত শত যানবাহন ও যাত্রী। এতে পার হতে আসা যাত্রী এবং যানবাহন শ্রমিকদের শীতের মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে আরিচা ঘাটে রাতে আসা প্রাইভেটকারের যাত্রীদেরকে গাড়ির মধ্যে বসেই ঘুমাতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুয়াশা কেটে গেলে পুণঃরায় ফেরি চলাচল শুরু হবার পর দুপুর ১২টায় এসে রো-রো ফেরি শাহ মখদুম এবং ক্যামেলিয়া আরিচা ঘাটে এসে ভীড়ে। এতে ফেরি পার হতে আসা কাজিরহাটগামী যানবাহনগুলোকে দীর্ঘ ১৩/১৪ ঘন্টা করে অপেক্ষা করতে হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা কার্যালয়ের সহকরী ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মহীউদ্দীন রাসেল জানান, ‘ঘন কুয়াশায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্টতার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টা থেকে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়। বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে কুয়াশা কমে গেলে সাড়ে ৯ ঘন্টা পর এ নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়। এসময় যাত্রী এবং যানবাহন বোঝাই করে একটি ফেরি মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে থাকে। পাটুরিয়া ঘাট প্রান্তে ৫টি ও দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে ৮টি ফেরি নিরাপদে নোঙন করে থাকে। দুর্ঘটনা এড়াতে এ নৌরুটে সাময়িকভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। দীর্ঘ সময় নৌরুট বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের ভিড় বেড়েছে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জরুরি যানবাহন, যাত্রীবাহী বাস ও ছোট গাড়ি পারাপার শুরু হয়েছে। এই নৌরুটে ১৪টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে।’ নৌরুট বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় ২০০ পরিবহন বাস, ৫০০ সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক ও অর্ধশতাধিক ছোট গাড়ি আটকা পড়েছে। যানবাহনের দীর্ঘ সাড়ি পাটুরিয়া ঘাট এলাকা ছাড়িয়ে ৬কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃতি হয়ে পড়েছে।

প্রাইভেটকার যাত্রী আকরাম আলী জানান, ফেরি পারের উদ্দেশ্যে বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আরিচা ঘাটে আসেন। বৃহস্পতিবার ১২টাতেও তিনি ফেরি পার হতে পারেননি। কখন ফেরির নাগাল পাবেন তাও বলতে পারছেন না তিনি।

মাইকক্রোবাস চালক আবেদ আলী জানান, বঙ্গবন্ধু সেতু এলাকায় যানবাজটের কারণে আরিচা ঘাট হয়ে আসলাম। কিন্তুু কুয়াশার জন্য এখানে এসেও বিপাকে পড়তে হলো। এখানে এসে দেখি ফেরি বন্ধ। পাবনা যাওয়ার উদ্দেশ্যে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় আরিচা ঘাটে আসি। ঘাটে এসে দেখি ফেরি নাই। ফাঁকা রয়েছে ফেরি ঘাট। আরিচা ঘাটে দীর্ঘ ছয় ঘন্টা অপেক্ষার পর দুপুর ১২টার দিকে দু’টি ফেরি ঘাটে ভীড়তে দেখা গেল। ঘাটে যেরকম গাড়ির চাপ দেখছি জানিনা ফেরিতে উঠতে পারবো কি না!

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিটিসি) আরিচা ঘাটের ম্যানেজার মো. আবু আব্দুল্লাহ বলেন, বুধবার সন্ধ্যা থেকেই নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সাথে সাথে কুয়াশার ঘণত্ব বাড়তে থাকে। বুধবার দিবগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা এড়াতে আরিচা-কাজিরহটা নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেন। এসময় আরিচা থেকে ছেড়ে যাওয়া কাজিরহাটগামী ফরিদপুর নামের একটি ফেরি যাত্রী এবং যানবাহন নিয়ে মাঝ নদী নোঙর করে থাকে। বাকী তিনটি ফেরি যানবাহন বোঝাই করে উভয় ঘাটে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় কুয়াশা কেটে গেলে পুণঃরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads