• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
পদ্মাসেতু খুলতেই পরিবহন সিন্ডিকেট, জনমনে ক্ষোভ

সংগৃহীত ছবি

যোগাযোগ

পদ্মাসেতু খুলতেই পরিবহন সিন্ডিকেট, জনমনে ক্ষোভ

  • শরীয়তপুর প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ জুন ২০২২

পদ্মা সেতু চালু হতে না হতেই শরীয়তপুরের পরিবহন ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা নিজেদের পরিবহন ছাড়া অন্য সব পরিবহনের উপর হস্তক্ষেপ করে বন্ধ করে দিচ্ছে। বিশেষ করে শরীতপুর-ঢাকা রুটে বাস সার্ভিস চালু করেছে বিআরটিসি ও বিভিন্ন বেসরকারি পরিবহন। সোমবার ঢাকা থেকে “শরীয়তপুর পরিবহন” নামে একটি পরিবহনের ২৭টি বাস শরীয়তপুরে আসলে ওই সব বাস সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ওই পরিবহনের পরিচালক আসাদুজ্জামান এরশাদ। এর আগে, রোববার বিআরটিসি ৮টি বাস আটকে দেয় মালিক গ্রুপ। সোমবার বিকালে শর্তসাপেক্ষে শরীয়তপুর সদর ছাড়া তিনটি উপজেলায় চালু করার সিদ্বান্ত নেওয়া হয়। সিন্ডিকেটের কারণে যাত্রীরা পদ্মাসেতুর সুফল ভোগ করতে পারছে না। তারা পরিবহনের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৫ জুন পদ্মাসেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২৬ জুন থেকে সেতুর উপর দিয়ে যানবাহন চালু করা হলে সকালে বিআরটিসির ৮টি গাড়ি ঢাকা থেকে শরীয়তপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। আসার পথে শরীয়তপুরের প্রেমতলা ও বাস টার্মিনাল এলাকায় আসতে না আসতেই বন্ধ করে দেয় শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। এ সময় গাড়িতে থাকা যাত্রীদেরকেও জোর করে নামিয়ে দেয় তারা। সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠকের পর শর্তসাপেক্ষে শরীয়তপুর সদর ব্যতিত তিনটি উপজেলায় বিআরটিসি বাস চালু করার সিদ্বান্ত নেয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে “শরীয়তপুর পরিবহন” নামে একটি পরিবহনের ২৭টি বাস আটকে দেওয়া হয়।

জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ “শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস” নামে নুতন করে একটি পরিবহন চালু করছে। এতে তারা ননএসি বাস ভাড়া নিচ্ছেন ২৫০ টাকা। আর শরীয়তপুর পরিবহন সরকার নির্ধারিত ভাড়া ২২৫ টাকা নেওয়ার সিদ্বান্ত নেয়। বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে শরীয়তপুর সদর থেকে ৩০০ টাকা ও নড়িয়া, গোসাইরহাট ও ভেদরগঞ্জ ৩৫০ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবহন মালিকদের দাবি, শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের কথা মতো কতৃপক্ষ বাস ভাড়া না বাড়ানোর কারণেই তারা ওইসব পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে।

এ দিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা নাম না বলা শর্তে জানান , শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের প্রতিষ্ঠিত “শরীয়তপুর সুপার সার্ভিস” এর সঙ্গে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জড়িত। তাদের ব্যবসা প্রসার করার জন্য বিআরটিসি ও অন্যান্য পরিবহন চলতে দিতে বাধার সৃষ্টি করছে।

এ বিষয়ে শরীয়তপুর পরিবহনের পরিচালক আসাদুজ্জামান এরশাদ বলেন, আমরা রুট পারমিট নিয়ে সরকার নির্ধারিত ভাড়ায় বাস সার্ভিস চালু করেছি। কিন্তু শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ আমাদের বাস আটকে দিয়েছে। কারণ, তাদের কথা মতো আমরা বেশি ভাড়া আদায় করিনি। আমরা এর প্রতিকার চাই। যাদের রুট পারমিট আছে, সবাই ব্যবসা করুক। যাত্রীদের যে বাস পছন্দ তারা সেই বাসে চলাচল করুক।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক আহমেদ তালুকদার (০১৭১৩-......৮) এর মুঠোফোনে ফোন করার পর ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলছি বলে ফোন কেটে দেন। এরপর তার বক্তব্যের জন্য বারবার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ছাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, বিআরটিসি ও শরীয়তপুর সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সাথে আমাদের সভা হয়েছে। এতে সিদ্বান্ত হয়, আগামী এক মাস বিআরটিসি’র ৬টি বাস শরীয়তপুরে তিনটি উপজেলায় চলাচল করবে। তারা শরীয়তপুর সদর থেকে যাত্রী উঠাতে পারবে না। আগামী একমাস পর আবার সভা হবে। সেখানে পরবর্তী সিদ্বান্ত নেয়া হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads