• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আবু বাঙালি ও মেজর জিয়া এখন মাথাব্যথা

ছবি : সংগৃহীত

অপরাধ

জঙ্গি হামলার হুমকি

আবু বাঙালি ও মেজর জিয়া এখন মাথাব্যথা

  • আজাদ হোসেন সুমন
  • প্রকাশিত ০৫ মে ২০১৯

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইএস’র বাংলাদেশি খলিফাখ্যাত আবু মোহাম্মদ আল বাঙালিকে কোনোভাবে চিহ্নিত করতে পারছে না দেশের আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। সরকারের আরেক মোস্ট ওয়ান্টেড মাস্টারমাইন্ড জঙ্গি মেজর জিয়া পার্শ্ববর্তী দেশে আত্মগোপনে আছে বলে নিশ্চিত হয়েছে গোয়েন্দারা। এই দুজনকে গ্রেফতার করতে না পারায় ঘুম হারাম হয়ে গেছে সরকারের প্রশাসনযন্ত্রের। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মনে করছে এই দুজনকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার হুমকি অনেকাংশে কমে যাবে।

পুলিশ সদর দফতর সূত্র জানায়, নব্য জেএমবি যখন হারিয়ে যেতে বসেছিল ঠিক তখনই এর হাল ধরে ডন নামে এক জঙ্গি। নরসিংদীতে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা করার সময় পুলিশের অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত হয় এবং দুজনকে জীবিত অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। তখনই গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ডন নব্য জেএমবির হাল ধরার কথা জানতে পারে পুলিশ। কিন্তু পরে আরো জানা যায়, সেটা তার ছদ্মনাম। এরপর এই ডনই আবু আল বাঙালি নামে গত ১ বৈশাখের কয়েকদিন আগে কোনো একটি চার্চ বা কোথাও হামলা করবে বলে নিজেদের অনলাইন গ্রুপে পোস্ট দেয়। জেএমবির এই শীর্ষ নেতা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ তাদের ভাষায় কাফেরদের ওপর হামলা চালানোর আহ্বান জানায়। প্রয়োজনে গাড়ি চাপার মাধ্যমেও হামলা চালানোর আহ্বান জানানো হয়। ওই আহ্বানের পর থেকে সিটিটিসির কর্মকর্তারা গোয়েন্দা অনুসন্ধান আরো জোরদার করে জঙ্গিদের হামলার পরিকল্পনা জানার চেষ্টা করেন। তবে কোথায় হামলা হবে তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। তবুও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই হুমকিকে আমলে নিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করে। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হন্যে হয়ে খুঁজছে ডন ওরফে আবু মোহাম্মদ আল বাঙালিকে। কিন্তু ধূর্ত এই আইএস প্রতিনিধি নিজেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নেটওয়ার্কের বাইরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। অবশ্য একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা দাবি করেছেন, নেটওয়ার্ক এমনভাবে সেট করা আছে যে, সে মুভ করার চেষ্টা করলে, কোনো নাশকতার চেষ্টা করলে বা জঙ্গিদের সংঘটিত করার চেষ্টা করলে ধরা পড়ে যাবে।

অন্যদিকে সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত হয়ে ২০১২ সালে আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের দায়িত্ব নেন মেজর জিয়া। ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময়ে তার পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় কমপক্ষে ৮ জন ব্লগারকে হত্যা করে জঙ্গিরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ২০১৭ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সাভারে এবং চট্টগ্রামে তার উপস্থিতির তথ্য পেয়ে পৃথক দুটো স্পট ঘিরে ফেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কিন্তু তার আগেই মেজর জিয়া সেখান থেকে সটকে পড়তে সক্ষম হন। সম্প্রতি গোয়েন্দারা আরো জানতে পেরেছে, মেজর জিয়া বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছেন। সেখানে আত্মগোপনে থেকে বাংলাদেশে কলকাঠি নাড়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের গোয়েন্দা ও আইনশৃ্ঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার কারণে সফল হতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম প্রধান আবুল কাসেম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, আমরাসহ পুলিশের সব ইউনিটই তৎপর আছে। মেজর জিয়া এবং আবু মোহাম্মদ আল বাঙালিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তিনি আরো বলেন, তবে তারা সক্রিয় আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ সক্রিয় হলেই আমরা খবর পেয়ে যাব। ধরা পড়ার ভয়ে তারা ঘাপটি মেরে আছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads