• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

এসপিসির হাতিয়ার ফেসবুক

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ০৫ অক্টোবর ২০২১

রাজধানীর বেইলি রোড এলাকা থেকে কথিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এসপিসি ওয়ার্ল্ড এক্সপ্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আল আমিন ও পরিচালক শারমিন আক্তারকে রোববার রাতে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।

সিআইডি জানায়, প্রতিষ্ঠানটি অনেকের কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সেগুলো ডেলিভারি দিতে ব্যর্থ হয়। তবে প্রতারণার অংশ হিসেবে কয়েকজন ক্রেতাকে অর্ডার দেওয়া পণ্য ডেলিভারি দিয়ে তাদের ছবিসহ ফেসবুকে ইতিবাচক রিভিউ দিত কোম্পানিটি। এসব রিভিউ দেখে ফাঁদে পা দিতেন সাধারণ গ্রাহকরা।

গতকাল সোমবার সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএস) হুমায়ূন কবির। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আল আমিন জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, বর্তমানে তার প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় এক কোটি। এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ৫-৬ কোটি টাকার অর্ডার পান। যারা পণ্য অর্ডার করেন, তাদের বেশির ভাগই ছাত্র ও অল্প বেতনের চাকরিজীবী। প্রাথমিক অবস্থায় এসপিসি ওয়ার্ল্ড কিছু পণ্য ডেলিভারি করে সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের ফেসবুক পেজে ইতিবাচক রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে। পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার ও অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকরা প্রতারণার বিষয়টি যখন বুঝতে পারেন তখন বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদ মাধ্যমে প্রতিকার দাবি করে বক্তব্য দিতে থাকেন। যারা খুব বেশি চাপ প্রয়োগ করেন, তাদের টাকা ফেরতের মিথ্যা আশ্বাস হিসেবে চেক প্রদান করে এসপিসি। দীর্ঘদিন ধরে এসপিসির কার্যক্রমের ওপর নজরদারি চলছিল উল্লেখ করে হুমায়ূন কবির বলেন, এসপিসিসহ সমপ্রতি কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণাকাণ্ডে অত্যন্ত উৎকণ্ঠায় রয়েছেন গ্রাহক, ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টরা। ই-কমার্স সাইটগুলো ঈদ ধামাকা, সাইক্লোন অফার, ডাবল অফারসহ বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। এক্ষেত্রে ক্রীড়া ও শোবিজ জগতের সেলিব্রেটিদের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রচার করে তাদের ভক্ত ও তরুণদের আকৃষ্ট করে নিয়মিত গ্রাহকে পরিণত করেছে। ৫০ শতাংশ মূল্যছাড়ে নতুন মোটরসাইকেল, সেলফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স পণ্য অল্প দিনের মধ্যে ডেলিভারি এবং শর্তসাপেক্ষে ৮০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্যাশব্যাক দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রতারণা করে এসপিসি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, মানিলন্ডারিং ও প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়। এই মামলাগুলোর ছায়া তদন্ত করছিল সিআইডি।

সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রাহকের ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ২০২০ সালে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন মো. আল আমিন। পরে অবশ্য জামিনে বের হন। তিনি ডেসটিনি ২০০০-এর উচ্চ পর্যায়ের টিম লিডার ও প্রশিক্ষক ছিলেন। ডেসটিনি ও যুবকের আদলেই গড়ে তুলেছেন এসপিসি ওয়ার্ল্ড। তাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ তদন্তের পর কলাবাগান থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে একটিসহ মোট চারটি মামলা করা হয়েছে। এছাড়া গ্রাহকের ১ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads