• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪২৯

অপরাধ

হাকালুকিতে মাছ লুট, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

  • কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২৯ জানুয়ারি ২০২২

হাকালুকি হাওরে অব্যাহত ভাবে চলছে মাছ লুট। মামলা চলমান তবুও সরকারি ইজারা মূল্যের অর্ধেকমূল্যে বরুদল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে খাস কালেকশনের অনুমতি দেয় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন। সুপ্রিম কোর্টের আদেশ জারির পরও বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পর্যন্ত খাস কালেকশনের নামে মাছ হরিলুট চলছে বলে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাওরের মৎস্য সম্পদ লুটেরা বাহিনী সরকারের প্রায় অর্ধকোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে খাস কালেকশনের নামে জলমহালটি ইজারা নেয়। দেড় হাজার একর গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহালে স্থিতাবস্থা জারি এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট। গত ২৩ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমদ এবং বিচারপতি কাজি জান্নাত হকের দ্বৈতব্যাঞ্চ এই আদেশ জারি করেন।

জানা যায়, হাকালুকি হাওরের সর্ববৃহৎ গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহালের ইজারা নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে পৃথক দু’টি মামলা চলমান ছিলো। একটি মামলায় ইজারা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রমের ওপর জারিকৃত স্থিতাবস্থা বহাল ছিলো। এমতাবস্থায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন অন্যান্য জলমহালের সাথে উক্ত জলমহালের খাস কালেকশনের ইজারা বিজ্ঞপ্তি জারি করে। প্রশাসন অতি গোপনে সরকারি মূল্যের অর্ধেক দামে জলমহালটি খাস কালেকশনের জন্য বরুদল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে অনুমতি দেওয়া হয়।

এদিকে প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে সোনার বাংলা মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি হাইকোর্টের আপিল বিভাগে রীট পিটিশন (নং ৬৮১ /২০২২) দায়ের করেন। বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। আপিল বিভাগের বিচারপতি জাফর আহমদ এবং বিচারপতি কাজি জান্নাত হকের দ্বৈতব্যাঞ্চ জলমহালটির উপর স্থিতাবস্থা এবং ভুমি, মন্ত্রণালয়ের সচিব, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) ’র বিরুদ্ধে রুল নিশি জারি করেন।

বড়লেখা সোনার বাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন জানান, আমাদের সমিতি বাদি হয়ে গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্ধ) জলমহাল নিয়ে হাইকোর্টে রীট পিটিশন (নং-১৫৬১/১৮), সরকার বাদি হয়ে সুপ্রীমকোর্টে সিভিল পিটিশন ফর লিভ টু আপিল (নং-১৯/২০২০) মামলায় স্থিতাবস্থা চলমান ও বিচারাধীন এবং মাধবকুণ্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির রিভিউ পিটিশন (নং-২৩৩/২০২১) চলমান রয়েছে। উচ্চ আদালতের সর্বশেষ নির্দেশ অমান্য করে জলমহালটি লুটপাটের অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এতে সরকার প্রায় ৪২ লাখ টাকা রাজস্ব ক্ষতি হবে।

মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মেহেদী হাসান মোবাইল ফোনে জানান, তিনি অসুস্থ। বিভাগীয় কমিশনার মহোদয় আসায় ডিসি স্যার ব্যস্ত আছেন।

বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুদাচ্ছির বিন আলী জানান, এ সংক্রান্ত আদালতের কোন নির্দেশনার কপি পান নি। নির্দেশনা পাওয়া গেলে আদালতের আদেশ মোতাবেক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads