ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার জায়লস্কর ইউনিয়নের দক্ষিণ নেয়াজপুরে শিশু আফরাকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন স্বপন। শিশু মিফতাউল মালিয়াত আফরা দক্ষিণ দিনাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। আজ রোববার বিকেলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে। আদালত তার জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
আসামি হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে আজ বিকেলে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা। এই সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাদিয়া ফারজানা, সহকারী পুলিশ সুপার (সোনাগাজী- দাগনভূঞা সার্কেল) মোহাম্মদ মাশকুর রহমান, দাগনভূঞা থানার ওসি মোহাম্মদ ইমাম হাসান ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদরুল আলম মোল্লা জানান, শিশু আফরা শনিবার ১১টার দিকে প্রকৃতির ডাকে স্কুল থেকে বের হয়। আনোয়ার হোসেন স্বপন তখন তাকে দেখে মুখ চেপে ধরে কোলে করে পুকুরপাড়ে কঁড়াই গাছের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে পাশবিক নির্যাতন করে। শিশু আফরা ধর্ষণের ঘটনাটি তার মাকে বলে দেবে বললে তার গলা চেপে ধরে। পরে স্কুলের বাথরুমের দেয়ালের সাথে কপালে ধাক্কা দিয়ে রক্তাক্ত করে ও চোখ উপড়ে ফেলে নির্মমভাবে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য গাছের মোটা লতা দিয়ে গলায় শক্ত করে পেঁচিয়ে রেখে পালিয়ে যায়।
এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে আনোয়ার হোসেন স্বপনের মোবাইল চেক করে দাগনভূঞা থানা পুলিশ। পরে তার মোবাইলে প্রচুর পরিমাণ অশ্লীল পর্নোগ্রাফি ভিডিও পাওয়া যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র ছয় ঘণ্টার মধ্যে আসামি আনোয়ার হোসেন স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে নিয়মিত তার মোবাইলে ফোনে অশ্লীল পর্নগ্রাফি দেখতো। সেই আসক্তি থেকে বিকৃত রুচি বোধ সৃষ্টি হয়। সেই আসক্তি থেকে আফরাকে পৈশাচিক কায়দায় হত্যা করা হয়।
ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, শিশুটিকে গোপনাঙ্গে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত করা হয়েছে হিংস্র পশুকেও হার মানায়। একজন সুস্থ মানুষের পক্ষে এই কাজ করা কখনোই সম্ভব না।