• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
করোনাতেও রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড

সংগৃহীত ছবি

ব্যবসার খবর

করোনাতেও রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ মে ২০২১

করোনাভাইরাসে সৃষ্ট মহামারীর মধ্যেও দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হচ্ছে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২ হাজার ৬৭ কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে সিংহভাগ রেমিট্যান্স ১০টি দেশ থেকে আসছে। গত ১০ মাসে মোট আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ৮৯ শতাংশই পাঠিয়েছেন এসব দেশের প্রবাসীরা।

দেশগুলো হলো-বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ৬৭ কোটি ডলার। (বাংলাদেশি মুদ্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার ৭১২ কোটি টাকা)। এর আগে কোনো অর্থবছরে দেশে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। এর মধ্যে প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০টি দেশ থেকে এসেছে এক হাজার ৮৩১ কোটি ৬০ লাখ ডলার, যা মোট রেমিট্যান্সের ৮৮ দশমিক ৬২ শতাংশ। তার মধ্যে আর মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচ দেশ থেকে এসেছে প্রায় ৫৩ শতাংশ বা এক হাজার ৮৬ কোটি ৮৩ লাখ ডলার।

বাংলাদেশের প্রবাসীদের বড় বাজার সৌদি আরব। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ লাখের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী সৌদি আরবে কর্মরত আছেন।

তথ্য বলছে, বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসে সৌদি আরব থেকে। চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন

৪৭৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার, যা মোট আহরিত রেমিট্যান্সের ২৩

দশমিক ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে সৌদি ছাড়া অন্য দেশগুলো হলো-যুক্তরাষ্ট্র, আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।

অর্থবছরের ১০ মাসে রেমিট্যান্স আহরণের দ্বিতীয় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৮৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। তৃতীয় শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই)। এ দেশ থেকে এসেছে ২০৬ কোটি ১১ লাখ ডলার। চতুর্থে থাকা মালয়েশিয়া থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৭২ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। পঞ্চম দেশ যুক্তরাজ্য থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৬৯ কোটি ৯৮ লাখ ডলার। কুয়েত থেকে এসেছে ১৫৭ কোটি ৩৪ লাখ ডলার, ওমান থেকে ১২৮ কোটি ২৮ লাখ ডলার, কাতার থেকে ১১৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার এসেছে। এ ছাড়া ইতালি থেকে এসেছে ৬৬ কোটি ২৯ লাখ ডলার এবং সিঙ্গাপুর থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৫২ কোটি ৭৮ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। অর্থবছর হিসাবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ ছিল। তারও আগে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড হয়। ওই সময় ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।

এদিকে রেমিট্যান্সের প্রবাহ চাঙা থাকায় ইতিবাচক অবস্থায় রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সবশেষ ২ এপ্রিল পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ ৪৪ দশমিক ৯৫ বিলিয়ন বা চার হাজার ৪৯৫ কোটি ডলারের বেশি রয়েছে।

২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে। অর্থাৎ কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরো ২ টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা দেওয়া হচ্ছে সুবিধাভোগীদের।

এ ছাড়া ঈদ ও উৎসবে বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি ১ শতাংশ দেওয়ার অফার দিচ্ছে। এতে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন প্রবাসীরা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads