• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

আনন্দ বিনোদন

আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১১ এপ্রিল ২০১৮

আল কাছির

‘আগে তা-ধিন-ধিন-তা শিখেছি, তারপর অ-আ-ক-খ শিখেছি।’ বলেই একগাল হেসে উঠলেন। শাস্ত্রীয় নৃত্য নিয়েই তার ধ্যান-ধারণা। সংস্কৃতিমনা পরিবারের সহযোগিতা পেলে আগ্রহটা আরো বেড়ে যায়। তার বেলাতেও ঘটেছে তাই। বলছিলাম অর্থী আহমেদের কথা। কলকাতার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে শাস্ত্রীয় নৃত্যে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শেষে দেশে ফিরেছেন সম্প্রতি। এবার পুরোদমে কাজ করতে চান শাস্ত্রীয় নৃত্যের ফর্ম ভরতনাট্যম নিয়ে।

ভরতনাট্যম কেন বেছে নিলেন? উত্তরে অর্থী বলেন, ‘ছায়ানটে মণিপুরী-ভরতনাট্যম বেছে নেওয়ার একটা ব্যাপার চলে আসে। তখনই ভরতনাট্যম নিই। আসলে ভরতনাট্যমের প্রতি আমার অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করে।’

ভালো লাগা থেকেই এ বিষয়ে পড়াশোনা? জানতে চাইলে বলেন, ‘একদমই তাই। একসময় মনে হলো, নাচটাই যখন করছি তাহলে পড়াশোনা কেন নাচে নয়। সেই ভাবনা থেকেই রবীন্দ্রভারতীতে ভর্তি হওয়া।’

যোগ করে বলেন, ‘আমাদের সোসাইটিতে আসলে নাচ-গান নিয়ে পড়াশোনা করাটা সার্বিকভাবে খুব বেশি গ্রহণযোগ্য না। আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। তাই উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েই বৃত্তি নিয়ে পড়াশোনা করতে চলে গেলাম কলকাতা।’

দেশে ফিরে লুবনা মারিয়ামের সাহসে ভরতনাট্যম নিয়ে একক মরগাম করার পরিকল্পনা করেন তিনি। ‘লাইভ মিউজিকের সঙ্গে ভরতনাট্যমের একক এক ঘণ্টার মরগাম এর আগে বাংলাদেশে হয়নি। তাই দর্শক কীভাবে নেবে সে ব্যাপারে খুব চিন্তিত ছিলাম। খুব বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল আমার জন্য। প্রচুর প্র্যাকটিস করলাম। ফাইনালি প্রোগ্রাম যখন শেষ হলো তখন দেখলাম পুরো অডিয়েন্স দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে। সেই মুহূর্তটা ভুলে যাবার মতো নয়।’ নিজের প্রথম একক মরগাম অভিজ্ঞতা নিয়ে এমনটাই বলেন অর্থী।

ভরতনাট্যম নিয়ে চেন্নাইয়ে টিচার্স ট্রেনিং করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার প্রবল ইচ্ছা পরবর্তী প্রজন্ম যারা ভরতনাট্যম শিখতে চায় তাদের পিউর ফর্মটা শেখানোর। প্র্যাকটিক্যালি শেখানোর পাশাপাশি থিওরিক্যাল নলেজটাও শেখা দরকার।’

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কর্মশালার মাধ্যমে নৃত্যশিল্পী তুলে আনার চেষ্টা করছেন অর্থী। সাধনা সাংস্কৃতিক মণ্ডলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এ চেষ্টা করছেন তিনি। সরকারিভাবে ‘ক্ল্যাসিক্যাল ফেস্ট’ করতে পারলে শিল্পী খুঁজে বের করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

ভারত সরকারের আমন্ত্রণে সম্প্রতি ঘুরে এসেছেন ভারতের বিভিন্ন শহর। শুধুই শহর? ‘না! প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাক্ষাৎ পেয়েছি আমরা। ভারতের বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সাক্ষাৎও পেয়েছি।’ উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন অর্থী। জানালেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ১০০ তরুণ ভারত সরকারের আমন্ত্রণে যায়। তবে এবারই প্রথম কোনো টিম প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ পেয়েছে।

ওড়িষ্যা ক্লাসিক্যাল ড্যান্স ফর্মের প্রতিও ছিল তার দুর্বলতা। ভরতনাট্যমকে এতটাই মনেপ্রাণে গেঁথেছেন, অন্যকিছু নিয়ে ভাবার সুযোগই পাননি। ভরতনাট্যমেই তার আনন্দ। বই পড়ে, মুভি দেখে আর পরিবারকে সময় দিয়ে অবসর কাটে অর্থীর। স্বাধীনচেতা এ তরুণী নৃত্যশিল্পী না হলে ফিল্মমেকার হতেন।

ক্র্যাশ রেগুলার খান বলে হাসতে হাসতে বলেই ফেললেন। ‘আপাতত নাচের সঙ্গে রিলেশনশিপে আছি। আর প্রচুর ক্র্যাশ খাচ্ছি। বয়সটাই তো ক্র্যাশ খাওয়ার।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads