• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

আনন্দ বিনোদন

ফিল্ম রিভিউ- বিজলী

জোড়াতালির দুর্বল গল্প

  • প্রকাশিত ১৭ এপ্রিল ২০১৮

কাজী সাঈদ

শুক্রবার মুক্তিপ্রাপ্ত ‘বিজলী’ ছবিতে দেখা যায়, ঝড়ের রাতে প্রসব বেদনা ওঠে ববির মায়ের। দূরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে বজ্রপাতে মৃত্যু হয় ববির বাবা-মায়ের। পরে বোঝা যায় সেখানে তার চাচা মিশা সওদাগরের চক্রান্ত ছিল। দরদী ডাক্তার আলম (ইলিয়াস কাঞ্চন) মৃত শরীর থেকে বাচ্চার প্রসব ঘটান। সেই বাচ্চা শরীরে ইলেকট্রিসিটি নিয়ে জন্মায়, যা হাসপাতাল পরিচালক শতাব্দী রায়কে আঁতকে দেয়। বাচ্চার জীবন হুমকিতে জেনে ডা. আলম তাকে নিয়ে পালিয়ে যান, তাকে বড় করেন। মানবদেহে কীভাবে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করা যায়, তা নিয়ে রিসার্চ করেন শতাব্দী। ক্ষমতা অর্জন করতে গিয়ে হয়ে যান ভিলেন। শুরু হয় সংঘাত। নিয়মানুযায়ী জয় পান হিরোইন। মাঝে প্রেম, গানবাজনা, আকর্ষণহীন রোমান্স।

ছবির দৃশ্যায়ন ছিল অসাধারণ, বিশেষ করে গানের। এর আগে দেশীয় ছবিতে এমন দৃশ্যায়ন দেখা যায়নি। লোকেশন এবং চিত্রায়ণ সব মিলিয়ে দারুণ। ছবিতে ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট আপনাকে মুগ্ধ করবেই। চমৎকার ছিল গ্রাফিক্সের কাজ। সাউন্ড, প্রপস, কস্টিউম, কোরিওগ্রাফি ভালো ছিল। ছবির অ্যাকশনগুলো আপনাকে কাঁপাবে। সব মিলিয়ে নির্মাতা ইফতেখার চৌধুরী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন নতুন এবং ভিন্ন স্বাদ দেওয়ার।

ছবিটি দেখতে দেখতে একসময় মনে হলো গল্প অত্যন্ত দুর্বল। জোড়াতালি ধরনের। সুপার হিরোইনের গল্পে নির্মিত এ ছবির কাহিনী পুরোপুরি গতানুগতিক। পাত্র-পাত্রীর অভিনয় খুব একটা ভালো লাগেনি। এমনকি শতাব্দী রায়েরও না।

সুপার হিরোইনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন চিত্রনায়িকা ববি। সাধারণত আমরা দেখি সুপার হিরো বা হিরোইনরা তাদের ক্ষমতা ব্যবহার করেন মানবকল্যাণে। কিন্তু বিজলীতে ববি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অথবা বাবা-মায়ের হত্যার প্রতিশোধ নিতে তার ক্ষমতা ব্যবহার করেন। পুরো ছবিতে নায়কের (রণবীর) সিক্স প্যাক ছাড়া কোনো কিছুই খুঁজে পাওয়া যায়নি। সুপার হিরো মানেই টানটান উত্তেজনা থাকবে। কিন্তু মেদা মেদা লেগেছে। সুপার পাওয়ারকে বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যেটা দেখে সবাই কম-বেশি মজা পাবেন, শুধু বিজ্ঞানের ছাত্ররা হতাশ হতে পারেন।

অপ্রয়োজনীয় চরিত্র আছে ছবিতে। অ্যাকশন দৃশ্য আরো দরকার ছিল। কিছু দৃশ্যে হলিউডের কপি ভালো লাগেনি। যে সুপার পাওয়ার হিরোইন ধারণ করেন, তার সঙ্গে আকাশে উড়তে পারা বা কৃশের মতো বিশাল লম্ফঝম্পের কোনো সম্পর্ক নেই। মেকি মেকি মনে হয়েছে।

সবমিলিয়ে ছবিটি আরো ভালো করা যেত। কারিগরি দিকে পরিচালক তার মুন্সিয়ানা দেখাতে পারলেও গল্পের দিকে তেমন পারেননি। যার জন্য পরিচালককে লেটার মার্কস দেওয়া যাচ্ছে না। প্রযোজক ববিকে সাধুবাদ, প্রথম প্রযোজিত ছবিটি ভিন্নধারায় নির্মাণ করার চেষ্টা করেছেন তিনি। ছবি নির্মাণে যারা ছিলেন সবাইকে ধন্যবাদ। ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করেছেন আপনারা।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads