• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

ফিচার

‘১০টি সংসদের ৬টিতেই এই আসনে এমপি ছিল আমার পরিবার থেকে। আগামী নির্বাচনেও জয়ী হয়ে জনসেবায় থাকব’

  • প্রকাশিত ১৮ নভেম্বর ২০১৮

 

এস এ সিদ্দিক সাজু বৃহত্তর মিরপুরের পাঁচবার নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদস্য এসএ খালেকের ছোট ছেলে। তিনি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব নর্থ টেক্সাস থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন। দেশে ফিরে পৈতৃক ব্যবসায় মনোনিবেশের পাশাপাশি তৃণমূল থেকেই তার রাজনীতির হাতেখড়ি। এস এ সিদ্দিক সাজু বর্তমানে এস এ খালেক গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এবং রিহ্যাবের নির্বাচিত প্রথম ইসি সদস্য। বিএনপির রাজনীতিতেও সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। দলের প্রয়োজনে সবসময় সব আন্দোলন সংগ্রামে তাকে দেখা গেছে মিছিলের অগ্রভাগে। এলাকায় বিএনপির তৃণমূল কর্মীদের আশ্রয়স্থল এস এ সিদ্দিক সাজু। মামলা হামলায় জর্জরিত অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে কাছে পাচ্ছেন। তিনি নিজেও ৫২টি মামলা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তরুণ নেতা হিসেবে নির্বাচনী

এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। বর্তমানে তিনি দারুস সালাম থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি। ঢাকা-১৪ আসনের নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ চলতি নানা বিষয় নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশের খবরের বিশেষ প্রতিনিধি আসিফ সোহান

বাংলাদেশের খবর : সামনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আপনি কি ঢাকা-১৪ আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন?

এস এ সিদ্দিক সাজু : দেখুন, বর্তমানে দেশের যে পরিস্থিতি তাতে নির্বাচন বিষয়ে ভাবার চাইতে আমরা ভাবছি আমাদের দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা নিয়ে। এরপর নির্বাচন নিয়ে ভাববো। তবে এই নির্বাচনী আসনটি আমাদের; এটি পুনরুদ্ধার করে দলকে ফেরত দেওয়ার লক্ষ্যে আমি মনোনয়ন চাইব।

বাংলাদেশের খবর : আপনি কেন মনে করছেন দল আপনাকে মনোনয়ন দেবে?

এস এ সিদ্দিক সাজু : আমি আশাবাদী দল আমাকে মনোনয়ন দেবে। বৃহত্তর মিরপুরের এই আসনের জনগণের সঙ্গে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক বহু বছরের। আমার বাবা এস এ খালেক এই আসনের এমপি ছিলেন। এ এলাকায় আমার জন্ম, বেড়ে ওঠা। এ এলাকার মানুষের সঙ্গেই আমার ওঠা-বসা সবকিছু। এ এলাকার মাটি ও মানুষের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। এলাকার মানুষের সুখ-দুঃখে আমাকে ডেকে নিতে হয় না, তাদের পাশেই আমার অবস্থান সবসময়। রাজনৈতিক পরিবারে জন্ম, সে কারণে রাজনীতির প্রতি আমার দুর্বলতা ছোটবেলা থেকেই। আমি তৃণমূল থেকেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। অনেক মামলা হামলার শিকার হয়েছি। দলীয় আদর্শ থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত হইনি। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে চলছি। আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে, আমার বিরুদ্ধে এই সরকারের আমলে ৫২টির বেশি মামলা হয়েছে। তবে পালিয়ে থেকেও দল গুছিয়ে যাচ্ছি। মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মধ্যে যে আনন্দ সেটি আর কিছুতেই নেই। নিজের দলের জন্য এলাকার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এলাকার নেতাকর্মীদের মামলাসহ অনেক বিষয়ে আমি থাকছি তাদের পাশে। যে কারণে এলাকার সবাই চাইছেন আমি এবার নির্বাচন করি। আমার আশা, ইনশাআল্লাহ দলও আমাকে মনোনয়ন দেবে। সর্বোপরি, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সিদ্ধান্তই আমার কাছে চূড়ান্ত।

বাংলাদেশের খবর : দলীয় চেয়ারপারসন কারাগারে, তার মুক্তি ছাড়া কি আপনারা নির্বাচনে যাবেন? একজন তরুণ নেতা হিসেবে আপনার মতামত কী?

এস এ সিদ্দিক সাজু : আমাদের দলের চেয়ারপারসন বিএনপির প্রাণ। প্রাণ ছাড়া বিএনপির কী হতে পারে, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। দলের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে আমার ব্যক্তিগত মতামত, এই বিষয়ে খুবই পরিষ্কার, তা হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোনোভাবেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা আমাদের জন্য ঠিক হবে না। তারপরও বলব, দলের চেয়ারপারসন এবং তারেক রহমানসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনেই আমরা কাজ করে যাব। 

বাংলাদেশের খবর : এলাকার বর্তমান আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তুলনায় আপনার অবস্থা কেমন?

এস এ সিদ্দিক সাজু : দেখুন, এই আসনটি বিএনপির। একটি বৈরী পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে এই আসনটি আমাদের হাতছাড়া হয়েছিল। আর ২০১৪ সালে আমরা নির্বাচনে যাইনি, যে কারণে বিনা ভোটেই আওয়ামী লীগ এই আসনটি হাতে রাখতে পেরেছে। আবার যদি আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারি, আমাদের হাইকমান্ড যদি নির্বাচনে যেতে বলেন— তাহলে ঢাকা-১৪ আসন আবারো বিএনপিরই হবে ইনশাআল্লাহ। আমার বাবা এস এ খালেক পাঁচবার বিএনপি থেকে বৃহত্তর মিরপুর আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। আমার বড় ভাই এই আসনে একবার সংসদ সদস্য ছিলেন। আসলে, এই আসন বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। বাবা ও ভাইয়ের উত্তরসূরি হিসেবে আমি এ আসনে নির্বাচন করতে চাইছি এবং জনগণের সেবক হতে চাই। সর্বশেষ বলতে চাই, আমি মনোনয়ন পেলে এই আসনটি বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে পারব।

বাংলাদেশের খবর : আওয়ামী লীগের দুই মেয়াদে বর্তমান এমপির সফলতা ও ব্যর্থতা কী আপনার এলাকায়?

এস এ সিদ্দিক সাজু : এসব তো সাংবাদিকরাই ভালো বলতে পারবেন। এখন যিনি এমপি তিনি শুধু মুখেই বলে যাচ্ছেন, মিরপুরকে গুলশান বানাবেন। কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই চলছে তার জমি দখল আর চাঁদাবাজি।

বাংলাদেশের খবর : নির্বাচনকে সামনে রেখে এলাকার জনগণের কাছে আপনার প্রতিশ্রুতি কী?

এস এ সিদ্দিক সাজু : আমি এই এলাকার ছেলে। আমার বাবা পাঁচবার এবং ভাই একবার এমপি ছিলেন। ওই সময়ে এলাকায় সব বিষয়ে উন্নয়ন করা হয়েছে। সত্যি বলতে কি, যেহেতু এই এলাকায়ই আমাদের বসবাস সেহেতু এলাকার জন্য কিছু করার প্রচেষ্টা আমাদের একটা চলমান প্রক্রিয়ার অংশ বলেই মনে করি। এলাকার জন্য কিছু করার মানে হচ্ছে নিজের জন্য করা, নিজের পরিবারের জন্য করা। কারণ এই এলাকার সবাই আমার কাছে পরিবারের অংশ এবং এলাকার মানুষও আমাকে তাদের পরিবারের একজনই ভাবেন। এটি আমি হলফ করে বলতে পারি, আমি যদি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হতে পারি তবে এই এলাকার মানুষের জন্যই কাজ করব। এলাকা চাঁদাবাজ মুক্ত হবে, মানুষের জায়গাজমি জোর করে কেউ নিতে পারবে না। মাদকমুক্ত নেশামুক্ত  একটি সংসদীয় আসন হবে ঢাকা-১৪। এলাকার উন্নয়নের জন্যই আমি রাজনীতি করছি এবং সংসদ নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন চাইছি। দল নির্বাচনে এলে আর আমাকে মনোনয়ন দিলে ঢাকা-১৪ আসনটি পুনরুদ্ধার করে বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দিতে পারব ইনশাআল্লাহ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads