• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
বসনে আদিবাসী চিত্রকলা

ছবি ও পোশাক: তন্দ্রাবতী

ফিচার

বসনে আদিবাসী চিত্রকলা

  • অরণ্য সৌরভ
  • প্রকাশিত ১৬ অক্টোবর ২০২১

সৃজনশীলতা চলমান নদীর মতো। চিত্রকলার ইতিহাস বেশ পুরোনো। সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ধারণ করে সহস্রাব্দি বছরজুড়ে সাক্ষী হয়ে আছে চিত্রকর্মের ইতিহাস, যা একবিংশ শতাব্দীতেও অব্যাহত। বিশ শতকের গোড়ার দিকে প্রাথমিকভাবে নিজস্ব ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, রুচিবোধ, ধর্মীয় এবং ধ্রুপদী মোটিফ নির্ভর চিত্রকলার চল শুরু হয় বলে জানা যায়।

আফ্রিকান, ইহুদি, ইসলামী, ভারতীয়, চাইনিজ আর্ট এবং জাপানি শিল্প প্রত্যেকেরই পশ্চিমা শিল্পে প্রভাব ছিল। প্রাথমিকভাবে উপযোগমূলক উদ্দেশ্যে পরিবেশন কর হলেও তারপরে সাম্রাজ্য, ব্যক্তিগত, নাগরিক এবং ধর্মীয় পৃষ্ঠপোষকতা, পূর্ব এবং পাশ্চাত্য চিত্র পরে শ্রোতাদের খুঁজে পেয়েছিল আভিজাত্য এবং মধ্যবিত্ত।

অনেক চিত্রকলার মধ্যে ওয়ারলি চিত্র একটি। যা আদিবাসীদের শিল্পধারা। সোহাদ্রি পর্বতের উত্তরের আদিবাসী মানুষেরা এই ধরনের ছবি আঁকতেন। ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের এই ধরনের চিত্রশিল্পের প্রথম উদ্ভব হয়েছিল বলে জানা যায়। সেই ধারাবাহিকতায় আদিবাসীদের মধ্যে আজো আঁকার রীতি বা প্রচলন রয়েছে। এই ধরনের ছবি মূলত বাড়ির দেয়ালে আঁকা হতো। চালের গুঁড়োকে সাদা রং হিসেবে ব্যবহার করা হতো। লাল দেয়ালের ওপর সাদা রং দিয়ে আঁকা হত। বর্তমানে এই শিল্প আদিবাসী যুব সেবা সংঘের সাহায্যে জি আই ট্যাগ পেয়েছে। নানা ধরনের সরকারি ও বেসরকারি সাহায্যে বাণিজ্যিকভাবে এই শিল্প বাজারে আসছে।

দিনবদলের ধারায় ফ্যাশনের ধারায় প্রতিনিয়ত আসছে পরিবর্তী। সেই সুবাধে নতুনত্বের ধারায় পোশাকের জমিনে ঠাঁই পেয়েছে আদিবাসীদের চিত্রকলা। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ইত্যাদি স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ৪০টির মতো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী চিত্রকলা পোশাকের জমিনে নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউজ তন্দ্রাবতী।

আদিবাসীরা বেশিরভাগ সময় গুহার ভেতরে বসবাস করতেন। তাই তাদের আঁঁকা চিত্রগুলো চিত্রলি বা গুহাচিত্র বলেও পরিচিত। এসব গুহাচিত্রে অধিকাংশ সময় আদিবাসীদের জীবনধারার বিভিন্ন চিত্র, তাদের গৃহস্থালি বিভিন্ন উপকরণ, তৈজসপত্র, শিকারের ছবি, সকলে মিলিত হয়ে খাবার গ্রহণ, শিশু প্রতিপালন, আগুন জ্বালানো ইত্যাদি ধাঁচের ছবি ফুটে উঠেছে। সেই উপজাতীয় আঁকার ধরণ নিয়েই ফ্যাশন হাউস তন্দ্রাবতীর আয়োজন ‘আদিবাসী চিত্রকলা’।

তন্দ্রাবতীর স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান বলেন, আমাদের দেশে আদিবাসীরা অনেকটাই অবহেলিত। তাদের স্বাভাবিক জীবনোপকরণ সংস্থান করতেই বেশ হিমশিম খেতে হয়। তারপরও তারা নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে তাদের উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করে থাকে। তাদের জীবন জীবিকার প্রতি সম্মান রেখেই তাদের আঁকা চিত্রকলা সকলের সামনে নিয়ে আসতেই আমাদের এমন উদ্যোগ।

তন্দ্রাবতীর স্বত্বাধিকারী মাসুদা তাসনীম তরী বলেন, আমরা (তন্দ্রাবতী) প্রতিটি ডিজাইন গতানুগতিকের বাইরে কিছু নতুন উপস্থাপন করতে চাই। সেই ধারায় ভিন্ন ডিজাইন, মোটিফ ও নকশাধারা আদিবাসীদের চিত্রকলা ফুটে তুলেছি। রঙের ক্ষেত্রে আদিবাসী চিত্রকলা ডিজাইনে কালোর উপর রক্তজবা লাল রঙের প্রাধান্য দিয়েছি।

প্রতিটি ডিজাইনে পরিবারের সকলের পোশাকের সমারোহ রয়েছে। আদিবাসী চিত্রকলার পোশাকের মধ্যে শাড়ি, কামিজ, ফ্রক, ওড়না, পাঞ্জাবি ইত্যাদি রয়েছে। আবহাওয়াকে বিবেচনায় রেখে আরামদায়ক কাপড় হিসেবে সুতি, নরম ভয়েল, কটন, কোটা, হাফসিল্ক ইত্যাদিকে প্রাধান্য দিয়েছে।

এ ধরনের মোটিফে নকশা করা পোশাকের সঙ্গে আদিবাসী গয়না বেশ ভালো মানায়। তাই গলায় বেছে নিতে পারেন মাদুলি, থালা, হাঁসুলি ইত্যাদি। হাতে পরতে পারেন পরুন পলা, বালা, বাজু বা পায়ের কয়রা, খাড়ু। শাড়ির সঙ্গে বিছা, ঝোলানো পয়সা মালা আর কোমরে বিছা ব্যবহার করতে পারেন।

 

মিলবে যেথায়, কেমন দাম

অনলাইন ফ্যাশন হাউস তন্দ্রাবতীতে ঘরে বসে ঢু মারলেই পেয়ে যাবেন আদিবাসী মোটিভের পোশাক, অলংকারসহ প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ। ভিজিট করতে পারেন www.tondraboti.com কিংবা ফেসবুকে পেজ tondrabotishari ঢু মেরে ইনবক্সে কথা বলেও কিনে নিতে পারেন পছন্দের পোশাক, অনুষঙ্গ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads