• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
জহিরুল ইসলামের ‘ইগনাইট ফাউন্ডেশন’

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

জহিরুল ইসলামের ‘ইগনাইট ফাউন্ডেশন’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ২২ মে ২০২২

রুবেল মিয়া নাহিদ

আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের দ্যুতি ছড়িয়ে পড়ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। তাদের কঠোর পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস, চেতনা এবং সৎ সাহসের দরুন দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনছে। দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করেই যেন তাদের তৃপ্তি। ঠিক তেমনই একজন মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। প্রতিষ্ঠাতা এবং চেয়ারম্যান ‘ইগনাইট ফাউন্ডেশন’। আজ থেকে প্রায় ৫ বছর আগে এই তরুণ স্বপ্ন বুনেছিলেন যেন দেশের কোনো শিশু অর্থাভাবে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়। তার আশপাশের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আর্তনাদ তাকে প্রচণ্ড রকমভাবে ভাবিয়ে তুলেছিল। ২০১৬ সালে জানুযারি মাসে প্রচণ্ড শীতের মধ্যে   বন্ধুদের নিয়ে  এয়ারপোর্ট থেকে টঙ্গি পর্যন্ত শীত  বস্ত্র বিতরণ করেন।

এর মধ্যে একদিন একটি পথশিশু এসে বলে, স্যার আমরা পড়তে  চাই, কাপড় চাই না। জহির সিদ্বান্ত নেন অসহাই শিশুদের শিক্ষা প্রদান করবেন এবং গড়ে তুলবেন ‘ইনক্লুসিভ স্কুল’। ছোট ছোট মুখগুলোর মধ্যে আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে দেবার লক্ষ্যে ২০১৬ সালে তার কিছু বন্ধুবান্ধবদের সাথে সেইসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য একটি স্কুল তৈরি করে এবং নিজেদের পড়াশুনার পাশাপাশি ওই বাচ্চাদের বিনামূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা করেন। এভাবেই শুরু হয় ‘ইগনাইট ফাউন্ডেশন’। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আজকের ‘ইগনাইট ফাউন্ডেশন’। বর্তমানে ইগনাইট ফাউন্ডেশনের একটি স্কুল রয়েছে যেখানে প্রায় ১২০ জন দরিদ্র শিশু বিনামূল্যে ইনক্লুসিভ শিক্ষা পাচ্ছে। এছাড়া, এই সংগঠন থেকে সাত জেলায় ২৩ হাজার ন্যাশনাল ভলিন্টির্য়াস, ২০০ ইন্টারন্যাশনাল ভলিন্টির্য়াস এবং ৮৫টি ইউনিভার্সিটিতে অ্যাম্বাসেডররা সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে। এসব কাজে ইগনাইট এর রয়েছে ২৩ সদেস্যর একটি বিশেষ টিম। ৩০০০ হাজার এর অধিক রক্ত প্রদান, ৪০ হাজার মানুষদের খাদ্যসামগ্রী সরবরাহ, ৫১ টি পরিবারকে কর্মস্থান তৈরি, নির্মাণ প্রজেক্ট এর মাধ্যমে গৃহহীন মানুষদের ঘর নির্মাণ করে দেওয়াসহ এর পাশাপাশি কোভিড-১৯ প্রতিরোধে অনলাইনে  চিকিৎসাসেবা চালু ও দারিদ্র্যতা দূরীকরণের মাধ্যমে দেশের অবস্থা উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে সংস্থাটি।

ইগনাইট ফাউন্ডেশন চলমান কার্যক্রমসমূহ:

❖ ইগনাইট ফাউন্ডেশন স্কুল (বিনামূল্যে শিক্ষা কার্যক্রম)

❖ প্রজেক্ট প্রেরণা (বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন প্রদান ও স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম )

❖ প্রজেক্ট স্বাবলম্বী (অসহায় ও দরিদ্র মানুষদের কর্মস্থান তৈরি)

❖ প্রজেক্ট নিরাময়  (বিনামূল্যে চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদান)

❖ ত্রাণ বিতরণ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম

❖ প্রজেক্ট তৃপ্তি (বিশুদ্ধ পানির জন্য ডিপ টিউবওয়েল প্রদান)

❖ প্রজেক্ট নির্মাণ (বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া)

❖ রক্তদান কার্যক্রম (বিনামূল্যে রক্তদান কার্যক্রম)

ইগনাইট ফাউন্ডেশনে কাজ করার পাশাপাশি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম ট্রেনিং, মোটিভেশনাল স্পিচ-এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত করে আসছেন।’ দ্য ডায়ানা অ্যাওয়ার্ড এবং জয় বাংলা ইয়ুথ আওয়ার্ড ছাড়া সামাজিক উন্নয়ন এ অসামান্য অবদান রাখার জন্য তিনি এর আগে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিলিয়ে আরো প্রায় ৯টি পুরস্কার পেয়েছেন।

জহিরুল ইসলাম, জন্মগ্রহণ করেন চাঁদপুর জেলার গোবিন্দিযা গ্রামে। ছোট বেলা থেকেই ছিলেন অন্য সকলের চেয়ে আলাদা। চার ভাই এক বোনের মধ্যে জহির তৃতীয় । বাবা এ বি এম হানিফ মিয়া একজন সফল ব্যাবসায়ী এবং মা খাদিজা খানম গৃহিণী। ইতিমধ্যে মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম অ্যারোস্পেস সাবজেক্টের ওপর স্কলারশিপ নিয়ে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন কার্ডেন  ইউনিভার্সিটি ইউএসএ থেকে। জহিরুল বলেন, ইগনাইট ফাউন্ডেশন একটি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান  যা সুবিধাবঞ্চিত শিশু, মহিলা এবং যুব ক্ষমতায়ন, পরিবেশ, দারিদ্র্য, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যকর, লিঙ্গ এবং সামাজিক বৈষম্য, শিশু অধিকার, যুব ক্ষমতায়ন  ইত্যাদির জন্য কাজ করছে। আমাদের  সংগঠনকে ঘিরে অনেক স্বপ্ন, পরিকল্পনা রয়েছে। ইগনাইট স্কুলকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং একটি আইটি সেন্টার খোলার পরিকল্পনা আছে যা গ্রামীণ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রযুক্তিগত এবং আধুনিক আইটিভিত্তিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের সচেতনতাকে সহজীকরণ এবং প্রচার, মেয়েদের অগ্রাধিকার এবং নারী। তৃতীয় লিঙ্গর  জন্য তৈরি করব কর্মসংস্থান, থাকবে সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সেন্টার, স্পেচিয়াল চাইল্ডের জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলাই তৈরি হবে ইগনাইট ইনসিউসিভ স্কুল যেখানে তারা পড়ালেখার পাশাপাশি কারিগরি শিক্ষার সুযোগ পাবে যেন তারা খুব তাড়াতাড়ি  উপার্জনমুখী হয়, এশিয়া মধ্যে সর্ববৃহৎ ভলিন্টিযার প্ল্যাটফরম তৈরি করতে চাই। সর্বপরি দেশের গণ্ডি  পেরিয়ে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরতে চাই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads