• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
সংশোধন হচ্ছে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮

ফাইল ছবি

সরকার

সংশোধন হচ্ছে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮

  • এম এ বাবর
  • প্রকাশিত ২৫ মার্চ ২০২১

কয়েকটি বিধি সংশোধন ও করণিক কিছু ভুল ঠিক করতে সংশোধন করা হচ্ছে সরকারি চাকরি আইন-২০১৮। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংশোধনের পাশাপাশি আইনটিতে বিদ্যমান অস্পষ্টতাও দূর করা হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় ২০০৭ সালে প্রথম সরকারি কর্মচারী আইনের খসড়া তৈরি করা হয়। কিন্তু নানা কারণে সেই আইন আলোর মুখ দেখেনি। এটি নিয়ে পর্যালোচনার পর ‘সরকারি চাকরি আইন-২০১৮’ প্রণয়নের জন্য উদ্যোগ নেয় সরকার। আইনটি কার্যকর হয় ২০১৯ সালের পহেলা অক্টোবর। তবে আইনে কিছু অস্পষ্টতা থাকায় সেগুলো স্পষ্ট করতেই আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, স্বায়ত্তশাসিত কয়েকটি সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অবসরের বিষয়টি এ আইনে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় বিষয়টি স্পষ্ট করার উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আইনে বেশ কয়েকটি করণিক ভুলও ধরা পড়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভুলগুলো হলো-১, ৪৮ ও ৫০ ধারায়, যা সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আইনের অবসর সংক্রান্ত ধারাগুলোতে যা আছে

আইনের ৪৩ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধান সাপেক্ষে-(ক) একজন সরকারি কর্মচারী তার বয়স ৫৯ (উনষাট) বছর পূর্তিতে এবং (খ) একজন মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কর্মচারী তার বয়স ৬০ (ষাট) বছর পূর্তিতে অবসর গ্রহণ করবেন।’

২ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘সরকার বা ক্ষেত্রমত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ উপ-ধারা ১-এর দফা-খ এ উল্লিখিত মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীর মুক্তিযোদ্ধা সনদ বা পরিচিতি যাচাই করতে পারবে। তবে শর্ত থাকে, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভকারী ব্যক্তি এই রূপ যাচাই থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত হবেন।’

৪৪ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘চাকরির মেয়াদ ২৫ (পঁচিশ) বছর পূর্ণ হওয়ার পর যে-কোনো সময় একজন সরকারি কর্মচারী অবসর গ্রহণের অভিপ্রেত তারিখের অন্যূন ৩০ দিন (ত্রিশ) আগে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের অভিপ্রায় লিখিতভাবে ব্যক্ত করে অবসর নিতে পারবেন।’

২ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘১-এর অধীন ব্যক্ত হওয়া অভিপ্রায় চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য হবে এবং তা সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না।’

৪৫ ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর চাকরির মেয়াদ ২৫ (পঁচিশ) বছর পূর্ণ হবার পর যে-কোনো সময় সরকার জনস্বার্থে প্রয়োজনীয় মনে করলে কোনোরূপ কারণ না দর্শিয়ে তাকে চাকরি থেকে অবসর দিতে পারবে। তবে শর্ত থাকে, এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।’

৪৬ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী শারীরিক অথবা মানসিক অসামর্থ্য বা বৈকল্যের কারণে সরকারি কাজে নিজেকে অক্ষম মনে করলে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের আবেদন করতে পারবেন। এ উদ্দেশ্যে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে অক্ষম ঘোষিত হলে সরকার বা ক্ষেত্রমত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তাকে অক্ষমতাজনিত কারণে চাকরি থেকে অবসর প্রদান করতে পারবে।’

২ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘১-এ যা কিছুই থাকুক না কেন, সরকারি দায়িত্ব পালনের কারণে কোনো সরকারি কর্মচারীর শারীরিক অথবা মানসিক অক্ষমতার উদ্ভব হলে সরকার বিধি অনুযায়ী যথোপযুক্ত আর্থিক ক্ষতিপূরণ বা সুবিধা প্রদানের বিধান প্রণয়ন করতে পারবে।’

৪৭ ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারী চাকরি থেকে অবসরে গেলে বা তার চাকরির অবসান ঘটলে তিনি এ সংক্রান্ত বিধান ও শর্তসাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১ (এক) বছর পর্যন্ত অবসর-উত্তর ছুটি প্রাপ্য হবেন।’

৪৮ ধারায় বলা হয়, ‘কোনো কর্মচারীর অবসর গ্রহণের পর তাকে ধারা ৫১-এর বিধান অনুসরণ ব্যতীত প্রজাতন্ত্রের কর্ম বা রাষ্ট্রের অন্য কোনো কর্তৃপক্ষে কোনোভাবে পুনরায় নিয়োগ করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, সাংবিধানিক কোনো পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হবে না।’

৫১ ধারার ১ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি অর্থের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে এমন কোনো বিচারিক বা বিভাগীয় কার্যধারা অনিষ্পন্ন থাকলে, এর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি ভবিষ্যৎ তহবিলে দেওয়া চাঁদা এবং এর সুদ ব্যতীত অন্য কোনো অবসর সুবিধা পাবেন না।’

২ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘১-এ উল্লিখিত ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর অবসর সুবিধা অনুরূপ কার্যধারায় প্রদত্ত আদেশসাপেক্ষে প্রদেয় হবে।’

৩ উপ-ধারায় বলা হয়, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীকে এই আইনের অধীন চাকরি থেকে অপসারণ বা বরখাস্ত করা হলে তিনি ভবিষ্যৎ তহবিলে দেওয়া তার চাঁদা এবং এর সুদ ব্যতীত অন্য কোনো সুবিধা প্রাপ্য হবেন না। তবে শর্ত থাকে যে, সরকার বিশেষ বিবেচনায় অনুকম্পা হিসেবে এ সংক্রান্ত বিধি অনুযায়ী অর্থ প্রদান করতে পারবে।’

৪ ধারায় বলা হয়, ‘অবসর সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি গুরুতর অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত বা কোনো গুরুতর অসদাচরণের দোষে দোষী প্রমাণিত হলে কারণ দর্শানোর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ প্রদান করে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তার অবসর সুবিধা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বাতিল, স্থগিত বা প্রত্যাহার করতে পারবে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads